মালদা, 10 এপ্রিল: যোগ্য ও অযোগ্যের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ নেই ! শিক্ষকতার চাকরি গিয়েছে সবারই ৷ দুর্নীতি ও প্রতারণা করে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে সরব বিরোধীরা ৷ তবে এর পরেও বসে নেই চাকরি প্রতারণা চক্র ৷ নিত্যনতুন কৌশল বের করছে তারা ৷ এবার তাদের নয়া কৌশল, কোনও উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক কর্তার নামে চাকরির টোপ দেওয়া ৷ সেই টোপ আবার দেওয়া হয়েছিল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আর উপপ্রধানকে ৷
বুধবার এই ঘটনা জানাজানি হয়েছে গাজোলে ৷ গোটা ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে গাজোল থানার পুলিশ ৷ চাকরি প্রতারণা চক্রের এমন ফোন আসে গাজোল এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান প্রদ্যোৎ সরকার এবং গাজোল দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অর্মিলা রাজবংশীর কাছে ৷ ফোনের ওপার থেকে একজন ভারী গলায় বলেন, তিনি গাজোল ব্লকের জয়েন্ট বিডিও ৷ প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে একজন কম্পিউটার অপারেটর ও একজন কৃষি সহায়ক নিয়োগ করা হবে ৷ এই নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালিত হবে সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত দফতর থেকে ৷ তাই উপপ্রধান কিংবা প্রধান যদি সরকারি চাকরি করতে ইচ্ছুক থাকেন, তাহলে তিনি আলাদা করে আলোচনায় বসবেন ৷
উপপ্রধান প্রদ্যোৎ সরকার জানাচ্ছেন, “গত পরশু রাতে আমার কাছে ফোনটি এসেছিল ৷ প্রথমে সবকিছু শুনে হকচকিয়ে যাই ৷ গাজোলে দু’জন জয়েন্ট বিডিও রয়েছেন ৷ তাঁদের গলার স্বর আমার চেনা ৷ তাই আমি বুঝতে পারি, ফোনে যে কথা বলছে, সে কোনও জয়েন্ট বিডিও নয় ৷ একজন প্রতারক ৷ বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত হতে আমি পরে দুই জয়েন্ট বিডিওর সঙ্গেই কথা বলি ৷ তাঁরাও সব শুনে আকাশ থেকে পড়েন ৷ পরে জানতে পারি, শুধু আমাকে নয়, চাকরি প্রতারকের ফোন পেয়েছেন গাজোল 2 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানও ৷ তাঁর সঙ্গে আলোচনা করে শেষ পর্যন্ত বুধবার আমরা দু’জন গাজোল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি ৷”
অর্মিলা রাজবংশীর স্বামী নীহার মণ্ডল জানান, “চাকরির টোপ দিয়ে আমার স্ত্রীকে দু’জন ফোন করেছিল ৷ একজন নিজেকে জয়েন্ট বিডিও পরিচয় দেয় ৷ আরেকজন নিজেকে গাজোল থানার পুলিশ অফিসার বলে দাবি করেছিল ৷ এই খবর জানতে পেরে আমি গাজোল থানার আইসির সঙ্গে যোগাযোগ করি ৷ তিনি নিশ্চিত করেন, ওই ফোন নম্বর তাঁদের থানার কোনও অফিসারের নয় ৷ এর পরেই আমার স্ত্রী থানায় লিখিত অভিযোগ জানান ৷”
এনিয়ে গাজোলের বিডিও সুদীপ্ত বিশ্বাস বলেন, “বিষয়টি জানার পর আমি সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখেছি ৷ যে নম্বর থেকে প্রধান ও উপপ্রধানকে ফোন করা হয়েছিল, সেটা ব্লকের কোনও আধিকারিক কিংবা কর্মীর নয় ৷ আমি প্রধান ও উপপ্রধানকে থানায় লিখিত অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দিয়েছিলাম ৷ তাঁরা অভিযোগ দায়ের করেছেন ৷ পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ৷ আশা করা যাচ্ছে, খুব তাড়াতাড়ি প্রতারকদের চিহ্নিত করা যাবে ৷ তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া প্রয়োজন ৷”
পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব জানিয়েছেন, এই ঘটনায় ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে গাজোল থানার পুলিশ ৷ এই দুষ্ট চক্রকে চিহ্নিত করতে সবরকম পদক্ষেপ করা হয়েছে ৷