ETV Bharat / state

'হাতের লেখা স্পষ্ট, অমায়িক ব্যবহার'; আরজি করের নির্যাতিতাকে স্মরণ প্রাক্তন সহকর্মীদের - RG Kar Doctor Rape and Murder

Madhyamgram Matrisadan: করোনাকালে অমানসিক পরিশ্রম করে মানুষকে পরিষেবা দিয়েছেন। সকলের সঙ্গে অমায়িক ব্যবহার করতেন। হাতের লেখাও ছিল স্পষ্ট ৷ তিনি যে আর নেই তা ভাবতে পারছেন কেউই ৷ যে কর্মস্থল থেকে তিনি কাজ শুরু করেছিলেন সেই মধ্যমগ্রাম মাতৃসদন কি বলছে? কী বলছেন তাঁর প্রাক্তন কর্মীরা ?

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Aug 12, 2024, 9:09 PM IST

Madhyamgram Matrisadan
আরজি করের নির্যাতিতাকে স্মরণ প্রাক্তন সহকর্মীদের (ইটিভি ভারত)

মধ‍্যমগ্রাম, 12 অগস্ট: দেশজুড়ে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে আরজি কর হাসপাতাল কাণ্ড ! তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও নৃশংসভাবে খুনের ঘটনা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না মধ্যমগ্রাম নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস স্পেশালাইজড অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের স্বাস্থ্যকর্মীরা । কারণ, পুরসভা পরিচালিত মধ্যমগ্রাম মাতৃসদন বলে পরিচিত এই হাসপাতালেই একসময় কর্মরত ছিলেন আরজি কর হাসপাতালের ওই তরুণী চিকিৎসক। বলা ভালো, পৌরসভার এই মাতৃসদনেই চিকিৎসার হাতেখড়ি হয়েছিল ওই তরুণীর ।

আরজি করের নির্যাতিতাকে স্মরণ প্রাক্তন সহকর্মীদের (ইটিভি ভারত)

সূত্রের খবর, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ট্রেনি চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করার আগে 2022 সাল পর্যন্ত মধ‍্যমগ্রামের এই হাসপাতালেই সুনামের সঙ্গে কাজ করে গিয়েছেন সোদপুরের ওই তরুণী । বিশেষ করে করোনাকালে চিকিৎসক হিসেবে তাঁর দায়িত্ব এবং কর্তব্য আজও মনে রয়েছে সহপাঠীদের মনে । সেই সময় তাঁর লড়াকু মনোভাবের ফলেই খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি সকলের নয়নের মণি হয়ে ওঠেন । তাই, এরকম একজন সদ্ব্যবহার ও মিশুকে চিকিৎসকের এমন করুণ পরিণতিতে মুষড়ে পড়েছেন হাসপাতালের সকলেই । চিকিৎসক থেকে নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও সহপাঠীরা প্রত‍্যেকেই চাইছেন, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে খুনি অপরাধীর কড়া শাস্তি ৷

2019 সালের মাঝামাঝি সময়ে মধ‍্যমগ্রামের পৌর মাতৃসদনে ওই তরুণী চিকিৎসক হিসেব কাজে যোগ দেন ৷ কয়েক মাস পর থেকে করোনা অতিমারীর জেরে টালমাটাল অবস্থা শুরু হয় দেশে । সেই অবস্থায় নিজের জীবন বাজি রেখে সর্বক্ষণ রোগীর সেবা করে গিয়েছেন সোদপুরের বাসিন্দা বছর 31-এর এই মহিলা চিকিৎসক ।

নিজের দায়িত্ব এবং কর্তব্যে সবসময় অবিচল থেকেছেন তিনি । প্রায় তিন বছর সেখানে কাজ করেছেন । অতিমারীর সেই সময় রোগীদের সেবা দিতে সামনে থেকে তাঁর লড়াই এখন মনে পড়ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের । অনেক চিকিৎসকই তখন নিজেদের সুরক্ষিত রাখলেও নিয়মিত তিনি আসতেন হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে চড়ে ।

এই বিষয়ে হাসপাতালের ইনচার্জ পঙ্কজ কান্তি চন্দ্র বলেন, "এমবিবিএস করার পরেই উনি এই হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত হন । ইমারজেন্সি ও আইসিসিইউ-সহ জেনারেল ওয়ার্ডের দায়িত্ব সামলেছেন । কোভিডের সময়ও প্রতিদিনই হাসপাতালে এসেছেন তিনি । তখনই আমরা দেখেছি উনি নিজের দায়িত্বে কতটা অবিচল । খুব শান্ত ও চুপচাপ স্বভাবের ছিলেন । অন-ডিউটি অবস্থায় তাঁর সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটে গেল, ভাবলেই শিহরিত হচ্ছি । আমরা চাই অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক ।"

হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার সুকেশ রায় বলেন, "কখনও কোনও চিকিৎসক আসতে দেরি করলে উনি ওয়ার্ড ছেড়ে যেতেন না । তাছাড়া রোগী বা তার পরিজনদের সঙ্গে তাঁর ব্যবহারের কোনও তুলনা হয় না ।"

এদিকে, এই বর্বরোচিত খবর পাওয়ার পর থেকে রাতে ঠিক করে ঘুমাতে পারছেন না হাসপাতালের আইসিসিইউর নার্স সরমা দত্ত । কান্না ভেজা গলায় তিনি বলেন, "ওঁনার সঙ্গে বহুদিন কাজ করেছি । ব্যবহারের তুলনা হয় না । সর্বদাই পরিবারের সদস্যের মতোই আমাদের সঙ্গে মিশতেন । ওঁনার হাতের লেখাও ছিল অসাধারণ ।" অন‍্যদিকে,দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করার সুবাদে নিহত চিকিৎসকের এই সমস্ত কথাগুলিই আজ বড্ড মনে পড়ছে হাসপাতালের সহপাঠীদের !

মধ‍্যমগ্রাম, 12 অগস্ট: দেশজুড়ে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে আরজি কর হাসপাতাল কাণ্ড ! তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও নৃশংসভাবে খুনের ঘটনা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না মধ্যমগ্রাম নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস স্পেশালাইজড অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের স্বাস্থ্যকর্মীরা । কারণ, পুরসভা পরিচালিত মধ্যমগ্রাম মাতৃসদন বলে পরিচিত এই হাসপাতালেই একসময় কর্মরত ছিলেন আরজি কর হাসপাতালের ওই তরুণী চিকিৎসক। বলা ভালো, পৌরসভার এই মাতৃসদনেই চিকিৎসার হাতেখড়ি হয়েছিল ওই তরুণীর ।

আরজি করের নির্যাতিতাকে স্মরণ প্রাক্তন সহকর্মীদের (ইটিভি ভারত)

সূত্রের খবর, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ট্রেনি চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করার আগে 2022 সাল পর্যন্ত মধ‍্যমগ্রামের এই হাসপাতালেই সুনামের সঙ্গে কাজ করে গিয়েছেন সোদপুরের ওই তরুণী । বিশেষ করে করোনাকালে চিকিৎসক হিসেবে তাঁর দায়িত্ব এবং কর্তব্য আজও মনে রয়েছে সহপাঠীদের মনে । সেই সময় তাঁর লড়াকু মনোভাবের ফলেই খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি সকলের নয়নের মণি হয়ে ওঠেন । তাই, এরকম একজন সদ্ব্যবহার ও মিশুকে চিকিৎসকের এমন করুণ পরিণতিতে মুষড়ে পড়েছেন হাসপাতালের সকলেই । চিকিৎসক থেকে নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও সহপাঠীরা প্রত‍্যেকেই চাইছেন, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে খুনি অপরাধীর কড়া শাস্তি ৷

2019 সালের মাঝামাঝি সময়ে মধ‍্যমগ্রামের পৌর মাতৃসদনে ওই তরুণী চিকিৎসক হিসেব কাজে যোগ দেন ৷ কয়েক মাস পর থেকে করোনা অতিমারীর জেরে টালমাটাল অবস্থা শুরু হয় দেশে । সেই অবস্থায় নিজের জীবন বাজি রেখে সর্বক্ষণ রোগীর সেবা করে গিয়েছেন সোদপুরের বাসিন্দা বছর 31-এর এই মহিলা চিকিৎসক ।

নিজের দায়িত্ব এবং কর্তব্যে সবসময় অবিচল থেকেছেন তিনি । প্রায় তিন বছর সেখানে কাজ করেছেন । অতিমারীর সেই সময় রোগীদের সেবা দিতে সামনে থেকে তাঁর লড়াই এখন মনে পড়ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের । অনেক চিকিৎসকই তখন নিজেদের সুরক্ষিত রাখলেও নিয়মিত তিনি আসতেন হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে চড়ে ।

এই বিষয়ে হাসপাতালের ইনচার্জ পঙ্কজ কান্তি চন্দ্র বলেন, "এমবিবিএস করার পরেই উনি এই হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত হন । ইমারজেন্সি ও আইসিসিইউ-সহ জেনারেল ওয়ার্ডের দায়িত্ব সামলেছেন । কোভিডের সময়ও প্রতিদিনই হাসপাতালে এসেছেন তিনি । তখনই আমরা দেখেছি উনি নিজের দায়িত্বে কতটা অবিচল । খুব শান্ত ও চুপচাপ স্বভাবের ছিলেন । অন-ডিউটি অবস্থায় তাঁর সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটে গেল, ভাবলেই শিহরিত হচ্ছি । আমরা চাই অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক ।"

হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার সুকেশ রায় বলেন, "কখনও কোনও চিকিৎসক আসতে দেরি করলে উনি ওয়ার্ড ছেড়ে যেতেন না । তাছাড়া রোগী বা তার পরিজনদের সঙ্গে তাঁর ব্যবহারের কোনও তুলনা হয় না ।"

এদিকে, এই বর্বরোচিত খবর পাওয়ার পর থেকে রাতে ঠিক করে ঘুমাতে পারছেন না হাসপাতালের আইসিসিইউর নার্স সরমা দত্ত । কান্না ভেজা গলায় তিনি বলেন, "ওঁনার সঙ্গে বহুদিন কাজ করেছি । ব্যবহারের তুলনা হয় না । সর্বদাই পরিবারের সদস্যের মতোই আমাদের সঙ্গে মিশতেন । ওঁনার হাতের লেখাও ছিল অসাধারণ ।" অন‍্যদিকে,দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করার সুবাদে নিহত চিকিৎসকের এই সমস্ত কথাগুলিই আজ বড্ড মনে পড়ছে হাসপাতালের সহপাঠীদের !

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.