কলকাতা, 10 এপ্রিল: চাকরি হারানো শিক্ষকদের উপর পুলিশের লাঠি, লাথি নিয়ে সমাজের সব স্তরে উঠেছে নিন্দার ঝড় । এই প্রসঙ্গে ঘটনার দিন কোনও মন্তব্য করেননি রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম । অবশেষে তিনি মুখ খুললেন । চাকরিহারা শিক্ষকদের উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, "মুখ্যমন্ত্রী তো স্কুলে যেতে বলেছিলেন, তাহলে স্কুলশিক্ষা দফতরের অফিস (ডিআই অফিস) দখল করতে যাবেন কেন ?" বিরোধীরা প্ররোচনা দিয়ে ক্ষতি করছেন বলে অভিযোগ করে তাঁর দাবি, একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর ভরসা রাখতে পারলেই সমস্যার সমাধান হবে ।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় 26 হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি গিয়েছে । চাকরিহারাদের নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ডেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, যোগ্য সবাই চাকরি ফিরে পাবেন ৷ এজন্য যাবতীয় ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার ৷ স্বেচ্ছায় চাকরিহারাদের স্কুলে গিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথাও বলেন তিনি ৷ তবে তাতে আশ্বস্ত হতে না-পেরে আন্দোলনের পথে হেঁটেছেন চাকরিহারাদের একাংশ ৷ তাঁরা বুধবার ডিআই অফিস অভিযান করলে, কসবায় তাঁদের উপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে ৷ উঠে আসে শিক্ষকদের পুলিশের লাথি মারার ছবি ৷
সেই ঘটনায় সমাজের সব অংশের মানুষ সরব হয়ে ওঠেন ৷ বিরোধীরাও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে ৷ তবে রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ফিরহাদ বিষয়টি 'জানি না' বলে এড়িয়ে গিয়েছিলেন । ঘটনার 24 ঘণ্টা পর আজ এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন তিনি । তবে পুলিশের ভূমিকা নয়, তিনি সরব হলেন চাকরি হারানো আন্দোলনরত শিক্ষকদের ভূমিকা নিয়ে ।
তিনি এদিন বলেন, "ডিআই অফিস দখল করে অরাজকতা করে আপনারা নিজেদের মামলা দুর্বল করছেন । অফিস দখল করে ফাইল লোপাট করলে বা ছিঁড়ে ফেললে তখন সুপ্রিম কোর্ট বলবে আপনারা ইচ্ছে করে করেছেন । এই কাজে যাঁরা প্ররোচনা দিচ্ছেন তাঁরা শিক্ষকদের ক্ষতি করার চেষ্টা করছেন । দয়া করে স্কুলে গিয়ে শিক্ষকতা করুন । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, এই লড়াই তাঁর, তিনি লড়বেন । কেউ কিছু করতে পারবেন না । সুজন বাবু বা সুকান্ত বাবু কেউ না । আর বিকাশ বাবু যা ক্ষতি করার তো করে দিয়ে চলে গিয়েছেন । এমন কিছু করবেন না, যাতে পরে আপনারা দায়ী হন প্রমাণ লোপাটের জন্য । আপনারা শিক্ষা দফতরে যাবেন আর পুলিশ সরে গিয়ে বলবে, যান ভাঙচুর করুন ? এটা পুলিশ বলতে পারে !"
এর পরেই তাঁর মন্তব্য রাজনীতি করে কোনও লাভ নেই । কোর্টের কাজ কোর্ট করবে । চাকরি ফেরতের আবেদন কোর্টেই করতে হবে, ডিআই অফিস দখল করে হবে না । ফিরহাদের দাবি, "ভরসা রাখতে হবে একজনের উপরই, তাঁর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।"