কলকাতা, 30 এপ্রিল: জোড়াসাঁকো থানার বড়বাজার মেছুয়া ফলপট্টির আগুনে মৃত বেড়ে হল 15 । যাঁদের প্রত্যেককে চিহ্নিত করা হয়েছে । কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরা মৃতদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন । শহরের তিন হাসপাতালে দেহের ময়নাতদন্তও চলছে । এর মধ্যে, আজ বুধবার দুপুরে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের মর্গে আসেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও বিজেপি নেতা সজল ঘোষ । গাফিলতি খুঁজতে কমিটি গঠনের কথা জানান ফিরহাদ হাকিম । পাল্টা আক্রমণ শানালেন সজল ।
তামিলনাড়ুর যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে তার মধ্যে দুই শিশুর ময়নাতদন্ত এনআরএস হাসপাতালে হয়েছে । আর তাদের দাদুর ময়নাতদন্ত হয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে । এই পরিবারের তরফে জানানো হয়, গতকাল রাতে স্বামী-স্ত্রী মার্কেটিং করতে বেরিয়েছিলেন । হোটেলে ছিল তাঁদের বাবা ও দুই সন্তান ছিল । ফিরে এসে দেখেন হোটেলে আগুন লেগেছে । ফলে, তাঁরা হোটেলে ঢুকতে পারেননি । পরিবারের সদস্যদের বাঁচানো যায়নি ।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন,"মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে 15 হয়েছে । সবক'টি দেহ চিহ্নিত করা হয়েছে । আপাতত, আরজি কর, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও এনআরএস নিয়ে মোট তিনটে জায়গাতে দেহের ময়নাতদন্ত চলছে । যে ছেলেটি লাফ দিয়েছিল তাঁর দেহ মেডিক্যালেই আছে । মৃতদের পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে । ওসিদের মাধ্যমে পুলিশ নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছে পরিবারের সঙ্গে । পরিবারের সদস্যরা এলে নিয়ম মেনে দেহ দিয়ে দেওয়া হবে । যাঁরা আসতে পারবেন না তাঁরা যেমনভাবে চাইবেন সেভাবেই আমরা পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করব । আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থা করা হবে । মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, মৃতদের পরিবারের সাহায্য করতে সবরকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে । আপাতত, যাঁরা আসতে পারবেন না, তাঁদের দেহ পিস ওয়ার্ল্ডে রাখা থাকবে ।"
বেআইনি নির্মাণের প্রশ্নে ফিরহাদের বক্তব্য :
এদিকে আগুন লাগার ঘটনায় বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে । সেই বিষয়ে কাশ্মীর ইস্যু টেনে বিরোধীদের সমালোচনা করেন মেয়র । তিনি বলেন," সব জায়গায় একই অবস্থা । অদ্ভুত জিনিস । ঘটনা ঘটার পরে কেন অভিযোগ ? বেআইনি যখন আগে কেন বলা হয়নি । কাশ্মীরেও তাই হয়েছে । তুমি যদি জেনে থাকো জঙ্গির বাড়ি তাহলে আগে কেন গুঁড়িয়ে দাওনি । এখন ব্লাস্ট হওয়ার পরে ভেঙে ফেলছ । আগে কেন তাদের ধরলে না । আমাদের কাছে আগে অভিযোগ এলে আগেই ধরা যেত । তবে, এটা নিয়ে আমাদের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে । পুলিশ, দমকল, পুরসভা নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে । পুলিশ ও দমকলকে সঙ্গে নিয়ে তদন্ত করে দেখা হবে । কার গাফিলতি তা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।"
হোটেলে প্রথম তলে নির্মাণ কাজের প্রসঙ্গ তুলতেই কড়া ভাষায় মেয়র জানান, কারওর গাফিলতির কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকলে কাউকেই রেয়াত করা হবে না । হোটেলের প্রথম তলে কীভাবে কাজ চলছিল তার তদন্ত করে দেখা হবে । গতকাল সেখানে গিয়েই এই নির্মাণের বিষয়ে জানতে পারি । সেটি আইন মেনে হচ্ছিল কিনা খতিয়ে দেখা হবে । কারও গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।"
মেয়রকে কটাক্ষ বিজেপি নেতা সজলের :
এদিকে মেয়র ফিরহাদ হাকিম এনআরএস হাসপতাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কিছু আগে মর্গে এসেছিলেন কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর তথা বিজেপি নেতা সজল ঘোষ । বেআইনি নির্মাণের বিষয়ে তিনি ফিরহাদকে কটাক্ষ করে 'খুনি মেয়র' বলে আক্রমণ করেন । তৃণমুল নেতাদের অনুমতি ছাড়া শহরে একটি ইটও গাঁথা হয় না বলে দাবি করেন সজল ।