বারাসত, 17 এপ্রিল: নীল বাতি লাগানো গাড়িতে ঘুরে নিজেকে 'কাস্টমস অফিসার' বলে পরিচয় দিতেন । টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিতেন । বহু মানুষের কাছ থেকে এভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন ভুয়ো 'কাস্টমস অফিসার' ! শেষে প্রতারণার অভিযোগে পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন মিহির ঘোষ নামে ওই যুবক । বৃহস্পতিবার কাঁচরাপাড়ার বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে বারাসত থানার পুলিশ ।
উত্তর 24 পরগনার কাঁচরাপাড়া থানার রবীন্দ্রনগর এলাকার বাসিন্দা মিহির । পুলিশ সূত্রে খবর, চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি, সস্তায় সোনা পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন-সহ নানা ধরনের চমকদার গল্পের আড়ালে প্রতারণা করতেন তিনি । তবে, স্থানীয় বাসিন্দারা 'কাস্টমস অফিসার' ভেবে সন্দেহ করতেন না তাঁকে । বিগত তিন মাস ধরে রবীন্দ্রনগর এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকছিলেন মিহির । এর আগে তিনি বারাসতে ভাড়া থাকতেন । সেখানেও তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে ।
'কাস্টমস অফিসার' পরিচয় দিয়ে বহু মানুষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা তিনি আদায় করেছেন বলে অভিযোগ । টাকার বিনিময়ে কেউ চাকরি পাবেন, আবার কেউ কম দামে সোনা কিনবেন, এই ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে তাঁদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিতেন প্রতারক মিহির ।
সম্প্রতি প্রতারিতদের কয়েকজন কাঁচরাপাড়ায় মিহিরের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে মারধর করেন বলে অভিযোগ । এরপরেই তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের হয় বারাসত থানায় । অভিযোগ পেয়ে তদন্ত নামে পুলিশ । বৃহস্পতিবার কাঁচরাপাড়া থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে বারাসত থানার তদন্তকারী দল হানা দেয় অভিযুক্তের বাড়িতে । সেখান থেকেই হাতেনাতে পাকড়াও করা হয় তাঁকে ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তল্লাশিতে ধৃতের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি পাখি মারার বন্দুক ও নীল বাতি লাগানো একটি এসইউভি গাড়ি । যাতে 'কাস্টমস অফিসার' লেখা স্টিকার লাগানো ছিল । এছাড়াও বাজেয়াপ্ত হয়েছে বেশ কিছু নগদ টাকাও ।
এই বিষয়ে বারাসত পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খাড়িয়া বলেন,"আদৌ তিনি কাস্টমস অফিসার কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে । চাকরি দেওয়ার নাম করে এবং সোনা ব্যবসার ছদ্মবেশে এই প্রতারণার কারবার চলত । অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে ।"
