কলকাতা, 9 এপ্রিল: তাঁকে গুলি করা হলেও তিনি একতার পথ থেকে সরবেন না ৷ বুধবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মহাবীর জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে এই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । জৈন সমাজের এই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, "একতা দেশের শক্তি । বিভাজন আমাদের দুর্বল করে তোলে । আজকের দিনে আমাদের একতার পক্ষে লড়তে হবে, একতার জন্য হাঁটতে হবে । জিয়ো অর জিনে দো - এই ভাবনাতেই রয়েছে বাংলার অহঙ্কার, আমাদের সম্প্রীতির পরিচয় ।"
বাংলাদেশ সীমান্তের অশান্তির প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, "সীমান্তে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল, তা মনে করিয়ে দেয় একতা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব । যারা সকলকে ভালোবাসে, তাদের সকলেই ভালোবাসে ।"
রাজনৈতিক বিরোধীরা প্রায়ই সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে । এদিন সেই প্রসঙ্গে নিজের অবস্থান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমি কোনও একটি ধর্মের নই, আমি সব ধর্মের । সব ধর্মের অনুষ্ঠানেই যাই, সব ধর্মের মানুষের জন্য কাজ করি ।" তিনি উদাহরণ দেন বিবেকানন্দের বাড়ি পুনরুদ্ধার, বেলুড় মঠে উন্নয়ন, কালীঘাট ও দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে পরিকাঠামো উন্নয়নের । জানান, রেলমন্ত্রী থাকাকালেও তিনি সব ধর্মের তীর্থস্থানকে রেলের মাধ্যমে যুক্ত করার কাজ করেছেন ।

মমতার কথায়, "ভাগাভাগি করলে একসময় দেশ এতটাই বিভক্ত হয়ে যাবে যে অর্থনীতিও দুর্বল হয়ে পড়বে । আমাদের প্রয়োজন একসঙ্গে চলার । কেউ মানুন বা না মানুন, সকলকে নিয়ে চলাই আমার সরকারের নীতি । ভবিষ্যতেও এই নীতি মেনেই আমরা চলব ।"
সম্প্রতি কিছু মহল থেকে দাবি উঠেছে, বাংলায় হিন্দুরা নাকি অবহেলিত । এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "বলুন তো, কোনও হিন্দু উৎসবে আপনাদের আটকানো হয়েছে ? আমি তো দেখেছি, সংখ্যালঘুরাও হিন্দুদের উৎসবে খোলামনে অংশ নেন । ওরা যখন ঈদের সময় আমায় ডাকে, আমি যাই । তাহলে পুজোর সময় আমি গেলে প্রশ্ন ওঠে কেন ? আমি যাবই সব ধর্মের অনুষ্ঠানে । যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন যাব । আমাকে গুলি করলেও আমি যাব । আমি বিশ্বাস করি, ভালোবাসা, সম্প্রীতি আর একতার মধ্যেই দেশের ভবিষ্যৎ লুকিয়ে আছে ।"
শেষে সব ধর্মের মানুষকে আশ্বস্ত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "ভরসা রাখুন । আমি আপনাদের বিরোধী নই, পাশে আছি । আমি আগেও থেকেছি, ভবিষ্যতেও থাকব । আপনারা সকলে একসঙ্গে এগিয়ে চলুন, দেশকে নেতৃত্ব দিন, একতার পক্ষে কাজ করুন ।"