কলকাতা, 9 জুন: মহানগরে একাকী বৃদ্ধের রহস্যমৃত্যু । ঘটনাটি ঘটেছে নেতাজিনগর থানা এলাকায় ৷ মৃতের নাম আশুতোষ দাস (73) । ওই এলাকায় একজন সফল ব্যবসায়ী বলে পরিচিত ওই বৃদ্ধ ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার সকালে ওই বৃদ্ধের বাড়ির সামনে একটি জমি পরিষ্কার হচ্ছিল ৷ সেই সময় এলাকাবাসীরা ওই বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ পান । এরপর ওই বৃদ্ধের বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করে বিষয়টি জানতে চান স্থানীয়রা । কিন্তু বৃদ্ধের বাড়ি ভিতর থেকে বন্ধ ছিল ৷ যার ফলে তাঁরা কেউ ভিতরে ঢুকতে পারেননি । এরপরেই তাঁদের সন্দেহ আরও দৃঢ় হয় ।
এলাকার বাসিন্দারা খবর দেন স্থানীয় নেতাজিনগর থানায় । পুলিশ এসে দরজা ভেঙে দেখে, ওই বৃদ্ধ মাটিতে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন । মাথা থেকে বেরোচ্ছে রক্ত । এরপরেই কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড বিভাগের গোয়েন্দারা ঘটনাস্থলে আসেন । পরে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় । কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান রূপেশ কুমার বলেন, "ইতিমধ্যেই স্থানীয় নেতাজিনগর থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলার রুজু করা হয়েছে ।"
এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে তদন্তকারীরা কথা বলে জানতে পারেন, ওই বৃদ্ধের স্ত্রী মারা গিয়েছেন । দুই মেয়ে প্রত্যেকেই বাইরে থাকেন । তবে তাঁরা যখন কলকাতায় আসেন প্রত্যেকেই তারা আশুতোষের সঙ্গে দেখা করেন । ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে আশুতোষের শ্যালক থাকেন । ঘটনার খবর পেয়ে এদিন শ্যালক সেখানে আসেন । শ্যালকের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, বৃদ্ধের প্রিন্টিংয়ের ব্যবসা রয়েছে । তাঁর এই ব্যবসায় কয়েক কোটি টাকার টার্নওভার হয় ।
তাহলে কি ব্যবসায়িক শত্রুতার জন্য ওই বৃদ্ধকে খুন করা হয়েছে ? নাকি তিনি নিজেই চরম পদক্ষেপ করেছেন ! ঘটনাস্থলে কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড বিভাগের গোয়েন্দারা এসে দেহটি পর্যবেক্ষণ করেন এবং তাদের প্রাথমিক অনুমান, এটি একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু । ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট আসার পরেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে । তবে আশুতোষের হাতে বা দেহের বাহ্যিক অংশে কোনও আঘাতের কিংবা ধস্তাধস্তি চিহ্ন খুঁজে পাননি তদন্তকারীরা । কিন্তু তাঁর মাথায় একটি গভীর আঘাতের চিহ্ন মিলেছে । যেটি তদন্তকারীদের ভাবাচ্ছে ।
ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে । বাইরে থেকে কোনও ব্যক্তি যাতে ওই ঘরের ভেতর প্রবেশ করতে না পারে, তার জন্য গোটা বাড়িটি ঘিরে রাখা হয়েছে । পাশাপাশি ওই বৃদ্ধের পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে । এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে ঘটনাটি কীভাবে ঘটল । তাঁদের থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা ।