দুর্গাপুর, 18 মে: বদ্রীনাথে বাঙালি যুবকের রহস্যমৃত্যু ৷ দুর্গাপুরের বাসিন্দা প্রীতম মজুমদারের (27) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে উত্তরাখণ্ডের বদ্রীনাথ মন্দিরের কাছে একটি পাইন গাছ থেকে ৷ কিন্তু, এখানেও রয়েছে রহস্য ৷ প্রীতমের পরিবারের দাবি, নতুন চাকরিতে যোগ দিতে কলকাতায় যাওয়ার জন্য রওনা দিয়েছিলেন তিনি ৷ তাহলে কীভাবে বদ্রীনাথে পৌঁছে গেলেন প্রীতম ৷ এমন নানান প্রশ্ন ও রহস্যের মধ্যেই উত্তরাখণ্ডে রওনা দিল তাঁর পরিবার ৷
জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের বাসিন্দা প্রীতম মজুমদারের অধিকাংশ সময়টাই মামার বাড়িতে কেটেছে ৷ দুর্গাপুরেই এডিসন রোডে তাঁর মামার বাড়ি ৷ সেখান থেকে কয়েকদিন আগে কলকাতায় নতুন চাকরিতে যোগ দেবেন বলে বেরিয়েছিলেন ৷ কিন্তু, মঙ্গলবার হঠাৎই একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে প্রীতমের মামা অতনু দাসের কাছে ৷ প্রথমে তিনি ফোন তোলেননি ৷ পরে আবারও ফোন আসায়, কল রিসিভ করেন তিনি ৷
অতনু জানিয়েছেন, ফোনের উলটো দিকের এক ব্যক্তি নিজেকে উত্তরাখণ্ডের পুলিশ আধিকারিক বলে পরিচয় দেন ৷ সেই সঙ্গে বলা হয়, বদ্রীনাথ মন্দিরের কাছে কাঞ্চনালয়ে জাতীয় সড়কের পাশে পাইন গাছ থেকে একটি ছেলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে ৷ আর তাঁর সঙ্গে থাকা জিনিস ও পরিচয়পত্রে নাম প্রীতম মজুমদার লেখা রয়েছে ৷ এমনকি প্রীতমের মোবাইল ফোনও তাঁর ব্যাগ থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছে ৷
প্রথমটায় বিশ্বাস করতে চাননি প্রীতমের মামা ৷ প্রতারকরা কল করছেন এই মনে করে ফোন কেটে দেন ৷ এরপর প্রীতমের ফোনে কল করেন তিনি ৷ কিন্তু, ফোন প্রীতম ধরেননি ৷ এবারেও অন্য এক ব্যক্তি ফোন ধরে একই কথা বলেন ৷ তখনই স্থানীয় থানায় গিয়ে বিষয়টি জানান অতনু দাস ৷ এরপর পুলিশ ওই অচেনা নম্বরে ফোন করে কথা বলে ৷ তখন বদ্রীনাথ পুলিশের তরফে প্রীতমের দেহের ছবি পাঠানো হয় ৷ দেহ শনাক্ত করেন অতনু দাস ৷
কিন্তু, প্রীতম উত্তরাখণ্ডে কীভাবে পৌঁছালেন ? কারণ, বাড়ি থেকে কলকাতা যাচ্ছেন বলে বেরিয়েছিলেন যে ! তবে, কী বদ্রীনাথ দর্শনে বেরিয়েছিলেন ? উল্লেখ্য, সম্প্রতি শুরু হয়েছে চারধাম যাত্রা ৷ আর প্রীতম নিজে শিবভক্ত ৷ তাই হতে পারে বদ্রীনাথের দর্শন করতে গিয়েছিলেন তিনি ৷ কিন্তু, তিনি একা ছিলেন, নাকি আরও কেউ সঙ্গে ছিল ? নাকি প্রীতমের বদ্রীনাথ পৌঁছানোর পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে, এমন নানান প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ৷
মঙ্গলবার খবর পাওয়ার পর বুধবার উত্তরাখণ্ড রওনা দিয়েছেন অতনু দাস এবং পরিবারের বাকি সদস্যরা ৷ তাঁরা জানিয়েছেন, ফোনে পুলিশের তরফে কোনও বিস্তারিত তথ্য তাঁদের দেওয়া হয়নি ৷ শুধু বলা হয়েছে, তাঁরা পৌঁছালে প্রীতমের দেহের ময়নাতদন্ত হবে ৷ তারপরেই যুবকের মৃত্যুর রহস্য জানা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে ৷
এসিপি (দুর্গাপুর) সুবীর রায় বলেন, "আমাদের কাছে উত্তরাখণ্ড পুলিশের পক্ষ থেকে ফোন আসে ৷ আমরা যুবকের বাড়ির লোকেদের জানিয়েছি ৷ দেহ ওখানে ময়নাতদন্তের পরে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে ৷ তারপরেই জানা যাবে মৃত্যুর আসল কারণ ৷"