দুর্গাপুর, 9 এপ্রিল: আড়াই বছর আগে শেষ হয়েছে মেয়াদ ৷ এরপর নির্বাচন না হওয়ায় দুর্গাপুর নগর নিগমে নেই নির্বাচিত বোর্ডও ৷ সেই জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্প এনক্যাপ (ন্যাশনাল ক্লিন এয়ার প্রোগ্রাম)-এর ফান্ড বন্ধ করে দিল কেন্দ্রীয় সরকার ৷ এই অবস্থায় বিরোধীদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা নয়ছয় করছে পুর প্রশাসক বোর্ড ৷ তাই সরকার এই ব্যবস্থা নিয়েছে ৷
2022 সালের 5 সেপ্টেম্বর দুর্গাপুর নগর নিগমের মেয়াদ শেষ হয় ৷ তারপর থেকে পাঁচ সদস্যের প্রশাসক মণ্ডলী দুর্গাপুর নগর নিগম পরিচালনা করছে ৷ কিন্তু দু'টি অর্থবর্ষে অর্থ কমিশনের টাকাও পায়নি পুরনিগম ৷ এবার গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো এনক্যাপ ফান্ডের টাকাও বন্ধ হয়ে গেল ৷
সূত্রের খবর, বর্তমানে দুর্গাপুর নগর নিগমের বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় 200টি ছোট-বড় রাস্তার কাজ চলছে ৷ কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই রাস্তার কাজগুলি কীভাবে হবে, সেই নিয়ে বিপাকে পুর প্রশাসক বোর্ড ৷ এছাড়া এই ফান্ড বন্ধের জেরে পানীয় জল সরবরাহ-সহ উন্নয়নের নানা কাজেও ভাটা পড়বে বলে আশঙ্কা ৷
প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারপার্সন অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের দাবি, "আমরা নগর ও গ্রাম উন্নয়ন দফতরের কাছ থেকে মৌখিকভাবে জানতে পেরেছি যেসব পুরসভাগুলিতে নির্বাচন হয়নি তাদের পঞ্চদশ অর্থ কমিশন এবং এনক্যাপ থেকে কোনও ফান্ড দেওয়া হবে না ৷ তবে এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত নির্দেশ আসেনি ৷ এই ফান্ডগুলো যদি সত্যিই বন্ধ হয়ে যায় তাহলে উন্নয়নের কাজে চরম সমস্যা হবে ৷"
তিনি আরও বলেন, "রাস্তাঘাট তৈরিতে ব্যাঘাত ঘটবে, গরমে কুয়োতে পানীয় জল শুকিয়ে যাবে, লাইটের সমস্যা, ড্রেনের সমস্যা বেড়েই যাবে ৷ পর্যাপ্ত ফান্ড না এলে আমাদের ফান্ড বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে ৷ সাধারণ মানুষকে কম কষ্ট দিয়ে কীভাবে উন্নয়নের কাজগুলি করা যায়, সে নিয়েও আমাদের বৈঠক হয় ৷ অর্থ কমিশনের কাছ থেকে কখনও 8 কোটি, কখনো 10 কোটি, কখনও 15 কোটি টাকার ফান্ড পেতাম ৷ কিন্তু, 2023-24 এবং 2024-25 অর্থবর্ষে কোনও ফান্ড পাইনি ৷ শেষ বার এনক্যাপ ফান্ডে 44 কোটি টাকা এসেছিল ৷ সেই ফান্ডের মাধ্যমে আমরা প্রচুর কাজ করেছি ৷ এখন সেই ফান্ডের টাকাও শেষ ৷"
এদিকে জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় কটাক্ষ করে বলেন, "নগর নিগমে চরম দুর্নীতি হচ্ছে ৷ সেই জন্য ফান্ড আটকে দেওয়া হয়েছে ৷ পাঁচ সদস্যের প্রশাসক মণ্ডলী কোনও কাজ করতে পারছে না ৷ সাধারণ মানুষ কোনও পরিষেবা পায় না ৷ যদি নির্বাচন হত, তাহলে ফান্ডও আটকাত না ৷"