দুর্গাপুর, 14 সেপ্টেম্বর: দুর্গাপুরে উচ্ছেদ অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার । ইস্পাত কারখানার অধিকারিকদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়লেন স্থানীয়রা ৷ ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার দুর্গাপুরের মহিস্কাপুর এলাকায় ৷ ডিএসপি কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ অভিযান শুরু করলে তাদের বাঁধা দেয় স্থানীয় বাসিন্দারা । এরপর আধিকারিকদের সঙ্গে বচসা থেকে তা ধস্তাধস্তিতে পরিণত হয় । ব্যাপক উত্তেজনার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় সেখানে । পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় সিআইএসএফ জওয়ানদের । পরে দুর্গাপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ।
জানা গিয়েছে, এ দিন মহিস্কাপুরে চন্ডীদাস সংলগ্ন শরৎচন্দ্র অ্যাভিনিউ এলাকায় দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার জমিতে অবৈধভাবে গজিয়ে ওঠা নির্মাণ ভাঙতে যান আধিকারিকরা ৷ সেসময় এলাকাবাসীর বাধার মুখে পড়ে ইস্পাত কারখানা কর্তৃপক্ষ । স্থানীয়দের সেই বাধা উপেক্ষা করে জেসিবির মাধ্যমে উচ্ছেদের কাজ শুরু করে তাঁরা ৷ তখনই শুরু হয় দু'পক্ষের মধ্যে বচসা । স্থানীয়রা ইস্পাত কারখানা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন, সামনেই দুর্গাপুজো । এখন উচ্ছেদ করা হলে বহু মানুষ রুজিরুটি হারাবে । পুজোর পর উচ্ছেদ করার ব্যবস্থা করা হোক । তারপরেই দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা কর্তৃপক্ষ এলাকা থেকে চলে যায় ।
সূত্রের খবর, দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপের বিভিন্ন রাস্তার পাশে আদানি গোষ্ঠীর গ্যাসের পাইপ লাইন যাওয়ার জন্য ইস্পাত কারখানার জন্য অধিগৃহীত জমি, যা বর্তমানে বেআইনি দখলদারদের হাতে, সেই জমিতে থাকা ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানগুলিকে রাস্তা থেকে 20 ফুট (অসমর্থিত সুত্র) ছেড়ে দেওয়ার কথা জানায় দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা নগর প্রশাসন ভবন । শুরু হয় শহরজুড়ে বুলডোজার চালানো । স্টিল টাউনশিপের বিভিন্ন রাস্তার পাশে থাকা দোকান ঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় । পুজোর মুখে বি-জোন চণ্ডীদাস বাজারে বেআইনি দোকান ঘর ভাঙতে গেলে বুলডোজার থামিয়ে দেয় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা । প্রবল বাধার মুখে পড়ে ডিএসপি কর্তৃপক্ষ ।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ডিএসপি কর্তৃপক্ষ চণ্ডীদাস বাজারের এই দোকানগুলিকে পুজোর পরে ভেঙে দেওয়ার কথা বলেন । কিন্তু এই রাজ্যের দুর্গাপুর শহরজুড়ে ডিএসপি কর্তৃপক্ষ যেভাবে যোগী রাজ্যের মডেলে বুলডোজার চালাচ্ছে, তাতে সাধারণ ব্যবসায়ী থেকে রাজনৈতিক দলগুলি সমালোচনায় সরব হয়েছেন । ইতিমধ্যেই এই ইস্যুতে বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করা হয়েছে । তবে রাজ্যের শাসকদল অদ্ভুতভাবে এই ইস্যুতে নীরব । তবে আপাতত চণ্ডীদাস বাজারে থামল 'অশ্বমেধের বুলডোজার' ।
ওই এলাকার বাসিন্দা লক্ষ্মণ ঘোষাল বলেন, "পুজোর মুখে এভাবে উচ্ছেদ একেবারে অন্যায় । দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা কর্তৃপক্ষকে আমরা বলেছি, দুর্গাপুজো এবং উৎসবকালীন সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরে তারা এসে নির্দিষ্ট সীমা দেখিয়ে দেবেন দোকানদারদের ৷ তারপর তাঁদের দোকানের সেই অংশটুকু ভেঙে দেবেন ।"