চন্দননগর, 21 জুন: হাড়ের রোগ, পেটের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ ও থাইরয়েডের মতো রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। বিশেষভাবে সক্ষম শিশু থেকে জটিল রোগের উপশম পেতে যোগার উপর ভরসা রাখার বার্তা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। একাধিক রোগ নিরাময় করা সম্ভব বলেও দাবি করছেন তাঁরা ৷ দেশজুড়ে 21 জুন প্রতিবছর যোগ দিবস পালন করা হয়। শিশুদের কথা বলা ও শোনার ক্ষেত্রে যারা সমস্যায় ভুগছে, সেসব শিশুরা নিয়মিত যোগার মাধ্যমে বাক ও শ্রবণ শক্তি ফিরে আনছে। এছাড়াও কিডনির বিভিন্ন রকম রোগে উপকৃত হচ্ছেন অনেক রোগীই। যোগ দিবসে এই রকমই পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরাও।
রাজ্য-সহ জেলাজুড়ে একাধিক ওষুধের দোকান হয়েছে। বর্তমান যুগে মানুষ ওষুধের উপর নির্ভরশীলতা বাড়িয়েছে। অত্যাধিক ওষুধ সেবনের জন্য রোগ কমানোর পরিবর্তে আনুসাঙ্গিক রোগের প্রকোপ বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে জটিল রোগ নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছে না। সেই জায়গায় থেকে যোগ চর্চাকে প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সেই কারণেই সরকারি সংস্থা থেকে বিভিন্ন সংস্থা যোগ চর্চার জন্য শিক্ষকরা এগিয়ে আসছেন। বহু অভিভাবকরা তাঁদের শিশুদের যোগার প্রতি উৎসাহ দেখাচ্ছেন। বয়স্করাও বিভিন্ন ব্যথা ও যন্ত্রণার থেকে বাঁচতে যোগা করছেন।
চন্দননগর যোগা অ্যাকাডেমির শিক্ষক অমিত কুমার দাস 60 জনকে যোগা শেখান। নয়ন্তিকা মাহাতো ও অঙ্কিতা সিকদার জন্ম থেকেই কথা বলতে ও শুনতে পারে না। কিন্ত যোগব্যায়াম করে সাময়িকভাবে এখন কথা বলতে পারছে। তাদের কথা বলতে গিয়ে শিক্ষক বলেন, "বহু শিশু থেকে বয়স্ক মানুষ আসছেন বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে। কেউ পেটের সমস্যায় কেউ বা শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। তারা এখানে এসে যোগব্যায়াম ও প্রাণায়াম করে অনেকটাই সুস্থ হচ্ছেন ৷ এছাড়াও হাড়ের সমস্যা উচ্চ রক্তচাপ ও মাইগ্রেন সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারে এই একমাত্র যোগাসনের মাধ্যমে।
এছাড়াও থাইরয়েড ও মহিলাদের রোগের দ্রুত সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। যাঁরা সুস্থ হচ্ছেন তাঁদের বন্ধুবান্ধবদেরও এই যোগাসনের প্রতি প্রবণতা বাড়ছে। এখানে দু'জন শিশু এসেছিল কথাও বলতে পারত না। বর্তমানে তারা তাদের নাম ও অন্যান্য কথা বলতে পারছে। ভুজঙ্গ আসন, চক্রাসন, শলভাসন করিয়ে কথা বলা ও শোনার ক্ষেত্রে উন্নতি হয়েছে। যারা আগে ওষুধ খেয়ে জীবনধারণ করত, এখম তাঁরা যোগ ব্যায়াম করে তা খাওয়ার প্রবণতা কমেছে। আগামী দিনে সকলে যদি যোগব্যায়াম চর্চা করে তাহলে ওষুধের খাওয়ার পরিমাণ কমবে।
হুগলি জেলার সরকারি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক অজয় কুমার ত্রিপাঠী বলেন, "অনেক ওষুধ খেয়েও যে সমস্ত রোগ কমছে না। যেমন হাঁটু-সহ নানা ব্যথার ওষুধ খেয়ে কমে না অনেক রোগ। সেই রোগ ওষুধ খেয়েও রোগ কমানো সম্ভব। বিশেষভাবে সক্ষমরাও অনেক উপকৃত হচ্ছে যোগের মাধ্যমে।আয়ুর্বেদ চিকিৎসক হিসেবে সমস্ত রোগীকে একশো শতাংশ যোগ করিয়ে সুস্থ রাখতে পেরেছি। ঠিকমতো প্রশিক্ষক দিয়ে যোগা করতে পারলে সমস্ত রোগ নিরাময় করা সম্ভব। হুগলি জেলায় চল্লিশটা সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র মধ্যে 32টিতে যোগা প্রশিক্ষক রয়েছেন। আগামী দিনের সাধারণ মানুষ যোগা করতে পারলে অনেকটাই ওষুধ থেকে রেহাই পেতে পারবে ৷"
আরও পড়ুন: