ETV Bharat / state

'সংবাদপত্রে-টিভি চ্যানেলে অপপ্রচার চলছে', ফেসবুকে পালটা সরব সুশান্ত - RG Kar Doctor Rape and Murder Case

Doctor Susanta Kumar Roy Facebook Post: আরজি করে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় একাধিক চিকিৎসককে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে ৷ তাঁদের মধ্যে অন্যতম সুশান্ত কুমার রায় ৷ সংবাদমাধ্যমে তাঁকে ঘিরে মিথ্যা অপপ্রচার চলছে বলে অভিযোগ করলেন চিকিৎসক ৷

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 8, 2024, 9:24 PM IST

Updated : Sep 8, 2024, 9:47 PM IST

Dr Susanta Kumar Roy
ডাঃ সুশান্ত কুমার রায় (ইটিভি ভারত)

জলপাইগুড়ি, 8 সেপ্টেম্বর: সোশাল মিডিয়ায় সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে সরব হলেন আরজি করের ঘটনায় শিরোনামে আসা বিতর্কিত ডাঃ সুশান্ত কুমার রায় ৷ এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে তাঁর এবং তাঁর ছেলের ৷ সংবাদমাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে যে প্রচার হচ্ছে, তা দুর্ভাগ্যজনক বলে দাবি করেছেন ডা: সুশান্ত কুমার রায় ৷

চিকিৎসক সুশান্ত কুমার রায় তাঁর ফেসবুকে 5টি বিষয় উল্লেখ করেছেন ৷ তিনি লিখেছেন, "আজ থেকে ঠিক এক মাস আগে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে যে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটে গিয়েছে, তার প্রেক্ষাপটে আমাকে এবং আমার পরিবারকে কেন্দ্র করে কিছু বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চলছে । এই ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক ও অনভিপ্রেত ৷ আপনারা জানেন, বিগত কয়েকদিন ধরে আমার নামে সম্মানহানিকর বেশ কিছু মিথ্যা বক্তব্য তুলে ধরা হচ্ছে । যার মাধ্যমে মানুষের মনে আমার সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হতে পারে ৷ এই পরিস্থিতিতে আমি কিছু বিষয় সকলের জ্ঞাতার্থে জানাতে চাই ৷

Dr Susanta Kumar Roy
চক্ষু চিকিৎসক সুশান্ত কুমার রায়ের ফেসবুক পোস্ট (ছবি সৌজন্য: ডাঃ সুশান্ত কুমার রায়ের ফেসবুক)

1. গত বেশ কিছুদিন যাবৎ কিছু সংবাদপত্রে ও টিভি চ্যানেলে অপপ্রচার চলছে আমি জলপাইগুড়ির বাড়িতে নেই ৷ আদতে কলকাতা থেকে ফিরে আমি জলপাইগুড়ির বাসভবনে রয়েছি ৷ রোজ সকালে নিয়ম করে নিজের বাসভবনস্থিত চেম্বারে রোগী দেখছি। নিজের দৈনন্দিন কাজ করছি ৷ আগামীতেও আমার পূর্ব নির্ধারিত শিডিউল অনুযায়ী কাজ করে যাব ৷

2. বিগত 32 বছর আগে SJDA-র নির্ধারিত তৎকালীন বাজারদরে জমি কিনে আমি আমার বর্তমান বাসভবন ও চক্ষু চিকিৎসা কেন্দ্রটি তৈরি করি সম্পূর্ণ সরকারি আইন মেনে ৷ এখনও এই জায়গাতেই নির্মিত দ্বিতল ভবনের প্রথম তলে আমি রোগী দেখছি এবং দ্বিতীয়তলে বসবাস করছি ৷

3. কোভিড মহামারির সময় আমাকে OSD হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় শুধুমাত্র North Bengal-এর আটটি জেলার স্বাস্থ্য প্রশাসনের সঙ্গে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সমন্বয় রক্ষা করে কাজ করার ৷ সেই সময়ে আমার কোনও DDO power ছিল না ৷ তাই আমার নিয়ন্ত্রণে কোনও সরকারি তহবিল পাঠানোর কোনও সুযোগই ছিল না। কারণ তার জন্য নির্দিষ্ট কোনও সরকারি Head of Account-ও ছিল না ৷

সেই সময় আমার নিজের নির্দিষ্ট বেতনটাও আমার DDO-র মাধ্যমেই প্রদান করা হত ৷ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার নার্সিং হোম, হোটেল বুকিং জেলার স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন দেখত ৷ সেখানে আমার করণীয় কিছু ছিল না ৷ এই সময়ে অনেক co-morbidity থাকা সত্ত্বেও 63 বছর বয়সে উত্তরবঙ্গের আটটি জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ছুটে গিয়েছি প্রশাসনিক কাজে ৷ প্রায় প্রতিটা দিন ভয়ঙ্কর ভাইরাসের মোকাবিলার জন্য ৷ তখন থেকেই চক্ষু চিকিৎসক হিসেবে রোগী দেখা কমিয়ে দিতে বাধ্য হই ৷ আমাকে নিয়মিত না পেয়ে রোগীরাও অন্যত্র পরিষেবা গ্রহণে বাধ্য হতে থাকেন ৷

4. WBMC একটি স্বয়ংশাসিত সংস্থা, যার সঙ্গে সরকারের কোনও প্রত্যক্ষ যোগাযোগ নেই ৷ আমি WBMC-র একজন গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত প্রতিনিধি ও সহ-সভাপতি ৷

5. আমার ছেলের MD-তে টপার হওয়া নিয়ে যাঁরা বিতর্ক তৈরি করছেন, তাঁদের জ্ঞাতার্থে জানাই সেই বছরই North Bengal Medical College থেকে আমার পুত্র ছাড়াও আরও দুই জন গোল্ড মেডেল পেয়েছিলেন ৷ আমার ছেলে 2005 সালে ICSE-তে 92.6% ও 2007 সালে ISC-তে 94.75% মার্কস নিয়ে পাশ করে এবং সেই বছরেই এক চান্সে জয়েন্ট এন্ট্রান্সে 365 RANK করে মেডিকেলে চান্স পায় ৷ সে বরাবরই ভালো স্টুডেন্ট, আমার পরিচয়ের কোনও দরকার সেখানে পড়ে না ৷

করোনাকাল থেকেই ডাঃ সুশান্ত কুমার রায়ের বিরুদ্ধে নানান অনিয়মের অভিযোগ ওঠে ৷ অভিযোগ, সুশান্ত কুমার রায়ের প্রভাবে অনিয়মের জালে জড়িয়ে পড়েন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা ৷ নিজেকে আড়াল করে সরকারি কর্মীদের দিয়েই কাজ করাতে সিদ্ধহস্ত চক্ষু বিশেষজ্ঞ সুশান্ত কুমার রায় ৷ প্রভাব খাটিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের উপর ছড়ি ঘোরানো থেকে শুরু করে পুত্রকে সরকারি সুবিধে পাইয়ে দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ৷

সদর হাসপাতালের চোখের ডাক্তার হয়েই হাসপাতালে দিনের পর দিন চিকিৎসা পরিষেবা না দিয়ে রোগীদের বঞ্চিত করেছেন তিনি, এমন অভিযোগও উঠেছে সুশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে ৷ আরজি করের ঘটনাস্থলে যাওয়ার কথা নিজে সংবাদমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেছেন ৷ তাঁর সঙ্গে কে কে ছিলেন, তাও বলেছেন চক্ষু চিকিৎসক ৷

এরপর তাঁর প্রভাব ও ক্ষমতা নিয়ে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন একরাশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ৷ ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলের সহ-সভাপতি পদ থেকে সুশান্ত কুমার রায়কে সাসপেন্ড করার দাবি তুলে চিঠি দিয়েছে আইএমএ-র পশ্চিমবঙ্গ শাখা ৷ ইতিমধ্যে সুশান্ত কুমার রায়ের উত্তরবঙ্গ লবির দুই ডাক্তার নেতাকে সাসপেন্ড করেছে স্বাস্থ্য দফতর ৷

জলপাইগুড়ি, 8 সেপ্টেম্বর: সোশাল মিডিয়ায় সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে সরব হলেন আরজি করের ঘটনায় শিরোনামে আসা বিতর্কিত ডাঃ সুশান্ত কুমার রায় ৷ এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে তাঁর এবং তাঁর ছেলের ৷ সংবাদমাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে যে প্রচার হচ্ছে, তা দুর্ভাগ্যজনক বলে দাবি করেছেন ডা: সুশান্ত কুমার রায় ৷

চিকিৎসক সুশান্ত কুমার রায় তাঁর ফেসবুকে 5টি বিষয় উল্লেখ করেছেন ৷ তিনি লিখেছেন, "আজ থেকে ঠিক এক মাস আগে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে যে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটে গিয়েছে, তার প্রেক্ষাপটে আমাকে এবং আমার পরিবারকে কেন্দ্র করে কিছু বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চলছে । এই ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক ও অনভিপ্রেত ৷ আপনারা জানেন, বিগত কয়েকদিন ধরে আমার নামে সম্মানহানিকর বেশ কিছু মিথ্যা বক্তব্য তুলে ধরা হচ্ছে । যার মাধ্যমে মানুষের মনে আমার সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হতে পারে ৷ এই পরিস্থিতিতে আমি কিছু বিষয় সকলের জ্ঞাতার্থে জানাতে চাই ৷

Dr Susanta Kumar Roy
চক্ষু চিকিৎসক সুশান্ত কুমার রায়ের ফেসবুক পোস্ট (ছবি সৌজন্য: ডাঃ সুশান্ত কুমার রায়ের ফেসবুক)

1. গত বেশ কিছুদিন যাবৎ কিছু সংবাদপত্রে ও টিভি চ্যানেলে অপপ্রচার চলছে আমি জলপাইগুড়ির বাড়িতে নেই ৷ আদতে কলকাতা থেকে ফিরে আমি জলপাইগুড়ির বাসভবনে রয়েছি ৷ রোজ সকালে নিয়ম করে নিজের বাসভবনস্থিত চেম্বারে রোগী দেখছি। নিজের দৈনন্দিন কাজ করছি ৷ আগামীতেও আমার পূর্ব নির্ধারিত শিডিউল অনুযায়ী কাজ করে যাব ৷

2. বিগত 32 বছর আগে SJDA-র নির্ধারিত তৎকালীন বাজারদরে জমি কিনে আমি আমার বর্তমান বাসভবন ও চক্ষু চিকিৎসা কেন্দ্রটি তৈরি করি সম্পূর্ণ সরকারি আইন মেনে ৷ এখনও এই জায়গাতেই নির্মিত দ্বিতল ভবনের প্রথম তলে আমি রোগী দেখছি এবং দ্বিতীয়তলে বসবাস করছি ৷

3. কোভিড মহামারির সময় আমাকে OSD হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় শুধুমাত্র North Bengal-এর আটটি জেলার স্বাস্থ্য প্রশাসনের সঙ্গে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সমন্বয় রক্ষা করে কাজ করার ৷ সেই সময়ে আমার কোনও DDO power ছিল না ৷ তাই আমার নিয়ন্ত্রণে কোনও সরকারি তহবিল পাঠানোর কোনও সুযোগই ছিল না। কারণ তার জন্য নির্দিষ্ট কোনও সরকারি Head of Account-ও ছিল না ৷

সেই সময় আমার নিজের নির্দিষ্ট বেতনটাও আমার DDO-র মাধ্যমেই প্রদান করা হত ৷ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার নার্সিং হোম, হোটেল বুকিং জেলার স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন দেখত ৷ সেখানে আমার করণীয় কিছু ছিল না ৷ এই সময়ে অনেক co-morbidity থাকা সত্ত্বেও 63 বছর বয়সে উত্তরবঙ্গের আটটি জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ছুটে গিয়েছি প্রশাসনিক কাজে ৷ প্রায় প্রতিটা দিন ভয়ঙ্কর ভাইরাসের মোকাবিলার জন্য ৷ তখন থেকেই চক্ষু চিকিৎসক হিসেবে রোগী দেখা কমিয়ে দিতে বাধ্য হই ৷ আমাকে নিয়মিত না পেয়ে রোগীরাও অন্যত্র পরিষেবা গ্রহণে বাধ্য হতে থাকেন ৷

4. WBMC একটি স্বয়ংশাসিত সংস্থা, যার সঙ্গে সরকারের কোনও প্রত্যক্ষ যোগাযোগ নেই ৷ আমি WBMC-র একজন গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত প্রতিনিধি ও সহ-সভাপতি ৷

5. আমার ছেলের MD-তে টপার হওয়া নিয়ে যাঁরা বিতর্ক তৈরি করছেন, তাঁদের জ্ঞাতার্থে জানাই সেই বছরই North Bengal Medical College থেকে আমার পুত্র ছাড়াও আরও দুই জন গোল্ড মেডেল পেয়েছিলেন ৷ আমার ছেলে 2005 সালে ICSE-তে 92.6% ও 2007 সালে ISC-তে 94.75% মার্কস নিয়ে পাশ করে এবং সেই বছরেই এক চান্সে জয়েন্ট এন্ট্রান্সে 365 RANK করে মেডিকেলে চান্স পায় ৷ সে বরাবরই ভালো স্টুডেন্ট, আমার পরিচয়ের কোনও দরকার সেখানে পড়ে না ৷

করোনাকাল থেকেই ডাঃ সুশান্ত কুমার রায়ের বিরুদ্ধে নানান অনিয়মের অভিযোগ ওঠে ৷ অভিযোগ, সুশান্ত কুমার রায়ের প্রভাবে অনিয়মের জালে জড়িয়ে পড়েন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা ৷ নিজেকে আড়াল করে সরকারি কর্মীদের দিয়েই কাজ করাতে সিদ্ধহস্ত চক্ষু বিশেষজ্ঞ সুশান্ত কুমার রায় ৷ প্রভাব খাটিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের উপর ছড়ি ঘোরানো থেকে শুরু করে পুত্রকে সরকারি সুবিধে পাইয়ে দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ৷

সদর হাসপাতালের চোখের ডাক্তার হয়েই হাসপাতালে দিনের পর দিন চিকিৎসা পরিষেবা না দিয়ে রোগীদের বঞ্চিত করেছেন তিনি, এমন অভিযোগও উঠেছে সুশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে ৷ আরজি করের ঘটনাস্থলে যাওয়ার কথা নিজে সংবাদমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেছেন ৷ তাঁর সঙ্গে কে কে ছিলেন, তাও বলেছেন চক্ষু চিকিৎসক ৷

এরপর তাঁর প্রভাব ও ক্ষমতা নিয়ে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন একরাশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ৷ ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলের সহ-সভাপতি পদ থেকে সুশান্ত কুমার রায়কে সাসপেন্ড করার দাবি তুলে চিঠি দিয়েছে আইএমএ-র পশ্চিমবঙ্গ শাখা ৷ ইতিমধ্যে সুশান্ত কুমার রায়ের উত্তরবঙ্গ লবির দুই ডাক্তার নেতাকে সাসপেন্ড করেছে স্বাস্থ্য দফতর ৷

Last Updated : Sep 8, 2024, 9:47 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.