ETV Bharat / state

আরজি কর-কাণ্ডে একাধিক ব্যক্তি জড়িত, পুলিশের দাবি খারিজ চিকিৎসকের - RG Kar Doctor Rape and Murder

RG Kar Doctor Rape and Murder: আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় এবার পুলিশের দাবিকে খারিজ করলেন ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডাক্তার শংকর নাথ ঝা ৷ ইটিভি ভারতকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে একাধিক বিষয় তুলে ধরলেন তিনি ৷

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Aug 12, 2024, 11:02 PM IST

RG Kar Doctor Rape and Murder
আরজি কর-কাণ্ডে একাধিক ব্যক্তি জড়িত বলে অভিযোগ ডাক্তার শংকর নাথ ঝা’র ৷ (নিজস্ব চিত্র)

কলকাতা, 12 অগস্ট: সম্প্রতি আরজি কর-কাণ্ডের প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশের একাংশের তরফে দাবি করা হয়েছে, ধৃত সঞ্জয় রায় একাই পুরো ঘটনাটি ঘটিয়েছে ৷ তবে, চিকিৎসকমহলের একাংশ সেই দাবি নৎস্যাৎ করেছে ৷ পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ এবং নিহত চিকিৎসকের পড়ুয়ার ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট দেখে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সহমত নন চিকিৎসকদের একাংশ ৷

চিকিৎসকের বক্তব্য (ইটিভি ভারত)

এই বিষয়ে ইটিভি ভারতকে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডাক্তার শংকর নাথ ঝা বলেন, "আমি পুলিশের এই অনুমানকে একেবারে নৎস্যাৎ করছি ৷ তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ৷ ওই চিকিৎসক পড়ুয়ার দেহ যে অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল এবং তাঁর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখে আমি বলতে পারি, যে এই ঘটনা একার পক্ষে ঘটানো সম্ভব নয় ৷ পুলিশ কেন আড়াল করতে চাইছে ? ঘটনাটি আরও ভালোভাবে খতিয়ে দেখা উচিত ৷ এই ঘটনায় কমপক্ষে দু-তিনজন যুক্ত রয়েছে ৷ কারণ, মেয়েটির চোখ, নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে ৷ তাঁর গলার হাড় ভেঙে রয়েছে ৷ গোপনাঙ্গে গভীর ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে ৷ তা একার পক্ষে ঘটানো সম্ভব নয় ৷"

চিকিৎসক শংকর নাথ ঝায়ের মতে, "এটি অবশ্যই ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা ৷ সে যত বড়ই প্রভাবশালী হোক বা আমাদের চিকিৎসক ফেটারনিটির কেউ হন, সে ক্ষেত্রেও তাঁকে গ্রেফতার করা উচিত ৷" উল্লেখ্য, পুলিশের একটি অংশের তরফে বলা হচ্ছে, ওই পড়ুয়াকে আগে খুন এবং তারপর তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে ৷ এই বিষয়টিকেও সরাসরি নৎস্যাৎ করেন চিকিৎসক শংকর নাথ ঝা ৷ তিনি বলেন, পুলিশের এই ধারণা পুরোপুরি ভ্রান্ত ৷

তাঁর মতে, "যখন মৃতদেহের ধর্ষণ করা হয়, সেই ক্ষেত্রে ওই মেয়েটির শরীরে যে ক্ষতের চিহ্ন আছে, তা আসবে না ৷ এছাড়াও তার শরীরে বিশেষ বিশেষ কয়েকটি জায়গার হাড় ভাঙা অবস্থায় রয়েছে ৷ মৃত একজনের সঙ্গে ধর্ষণ করলে যতটা রক্তক্ষরণ হয় এবং জীবিত একজনের সঙ্গে বলপূর্বক ধর্ষণ করলে, যে পরিমাণ রক্ত বার হয়, তা সমান নয় ৷ মৃত্যুর আগের ইনজুরি এবং মৃত্যুর পরের ইনজুরি পুরোপুরি আলাদা ৷ এটা ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা দেখছেন ৷ এটা একটা চক্রান্ত হচ্ছে ৷ এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে আমরা সত্য উদঘাটন করে ছাড়ব ৷"

তাঁর কথায়, "যারা এই প্রকারের ঘটনা ঘটায়, তাদের আমরা ডাক্তারি ভাষায় বলি সাইকোপ্যাথ ৷ এরা সাধারণ মানুষ নয় ৷ এরা অপরকে কষ্ট দিয়ে আনন্দ পায় ৷ আমাদের সব থেকে বড় ভয় হল, এরা যে ধরনের মানুষ, আগেও একাধিকবার এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে এবং পরবর্তীকালেও এই ধরনের ঘটনা ঘটাবে ৷ এরা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়ে থাকে ৷ এরা সাধারণ মানুষের মতো নয় ৷ এরা সাধারণ সমাজে বাস করার যোগ্য নয় ৷ এদেরকে চিহ্নিত করে, অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া অত্যন্ত জরুরি ৷"

উল্লেখ্য, একাধিক মহল থেকে দাবি করা হচ্ছে, সঞ্জয় রায় মানসিক বিকারগ্রস্ত ৷ আর সে যদি সত্যিই মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে থাকে, তবে তার শাস্তি হওয়া মুশকিল ৷ কারণ এই ধরনের লোকজনের কখনও শাস্তি হয় না ৷ এই প্রশ্নে চিকিৎসক শংকর নাথ ঝা বলেন, "এরা মানসিক বিকারগ্রস্ত ৷ আর পাগল এবং মানসিক বিকারগ্রস্তদের মধ্যে পার্থক্য আছে ৷ আমরা চিকিৎসাশাস্ত্রে যাদেরকে পাগল বলি, তারা কোনও ঘটনা ঘটালে, তা উপলব্ধি করতে পারেন না ৷ তবে, মানসিক বিকারগ্রস্ত ব্যক্তি যে জঘন্য অপরাধগুলি ঘটায়, প্রতিটাই উপলব্ধি করতে পারে ৷ ফলে এরা পাগল নয় ৷"

কলকাতা, 12 অগস্ট: সম্প্রতি আরজি কর-কাণ্ডের প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশের একাংশের তরফে দাবি করা হয়েছে, ধৃত সঞ্জয় রায় একাই পুরো ঘটনাটি ঘটিয়েছে ৷ তবে, চিকিৎসকমহলের একাংশ সেই দাবি নৎস্যাৎ করেছে ৷ পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ এবং নিহত চিকিৎসকের পড়ুয়ার ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট দেখে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সহমত নন চিকিৎসকদের একাংশ ৷

চিকিৎসকের বক্তব্য (ইটিভি ভারত)

এই বিষয়ে ইটিভি ভারতকে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডাক্তার শংকর নাথ ঝা বলেন, "আমি পুলিশের এই অনুমানকে একেবারে নৎস্যাৎ করছি ৷ তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ৷ ওই চিকিৎসক পড়ুয়ার দেহ যে অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল এবং তাঁর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখে আমি বলতে পারি, যে এই ঘটনা একার পক্ষে ঘটানো সম্ভব নয় ৷ পুলিশ কেন আড়াল করতে চাইছে ? ঘটনাটি আরও ভালোভাবে খতিয়ে দেখা উচিত ৷ এই ঘটনায় কমপক্ষে দু-তিনজন যুক্ত রয়েছে ৷ কারণ, মেয়েটির চোখ, নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে ৷ তাঁর গলার হাড় ভেঙে রয়েছে ৷ গোপনাঙ্গে গভীর ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে ৷ তা একার পক্ষে ঘটানো সম্ভব নয় ৷"

চিকিৎসক শংকর নাথ ঝায়ের মতে, "এটি অবশ্যই ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা ৷ সে যত বড়ই প্রভাবশালী হোক বা আমাদের চিকিৎসক ফেটারনিটির কেউ হন, সে ক্ষেত্রেও তাঁকে গ্রেফতার করা উচিত ৷" উল্লেখ্য, পুলিশের একটি অংশের তরফে বলা হচ্ছে, ওই পড়ুয়াকে আগে খুন এবং তারপর তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে ৷ এই বিষয়টিকেও সরাসরি নৎস্যাৎ করেন চিকিৎসক শংকর নাথ ঝা ৷ তিনি বলেন, পুলিশের এই ধারণা পুরোপুরি ভ্রান্ত ৷

তাঁর মতে, "যখন মৃতদেহের ধর্ষণ করা হয়, সেই ক্ষেত্রে ওই মেয়েটির শরীরে যে ক্ষতের চিহ্ন আছে, তা আসবে না ৷ এছাড়াও তার শরীরে বিশেষ বিশেষ কয়েকটি জায়গার হাড় ভাঙা অবস্থায় রয়েছে ৷ মৃত একজনের সঙ্গে ধর্ষণ করলে যতটা রক্তক্ষরণ হয় এবং জীবিত একজনের সঙ্গে বলপূর্বক ধর্ষণ করলে, যে পরিমাণ রক্ত বার হয়, তা সমান নয় ৷ মৃত্যুর আগের ইনজুরি এবং মৃত্যুর পরের ইনজুরি পুরোপুরি আলাদা ৷ এটা ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা দেখছেন ৷ এটা একটা চক্রান্ত হচ্ছে ৷ এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে আমরা সত্য উদঘাটন করে ছাড়ব ৷"

তাঁর কথায়, "যারা এই প্রকারের ঘটনা ঘটায়, তাদের আমরা ডাক্তারি ভাষায় বলি সাইকোপ্যাথ ৷ এরা সাধারণ মানুষ নয় ৷ এরা অপরকে কষ্ট দিয়ে আনন্দ পায় ৷ আমাদের সব থেকে বড় ভয় হল, এরা যে ধরনের মানুষ, আগেও একাধিকবার এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে এবং পরবর্তীকালেও এই ধরনের ঘটনা ঘটাবে ৷ এরা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়ে থাকে ৷ এরা সাধারণ মানুষের মতো নয় ৷ এরা সাধারণ সমাজে বাস করার যোগ্য নয় ৷ এদেরকে চিহ্নিত করে, অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া অত্যন্ত জরুরি ৷"

উল্লেখ্য, একাধিক মহল থেকে দাবি করা হচ্ছে, সঞ্জয় রায় মানসিক বিকারগ্রস্ত ৷ আর সে যদি সত্যিই মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে থাকে, তবে তার শাস্তি হওয়া মুশকিল ৷ কারণ এই ধরনের লোকজনের কখনও শাস্তি হয় না ৷ এই প্রশ্নে চিকিৎসক শংকর নাথ ঝা বলেন, "এরা মানসিক বিকারগ্রস্ত ৷ আর পাগল এবং মানসিক বিকারগ্রস্তদের মধ্যে পার্থক্য আছে ৷ আমরা চিকিৎসাশাস্ত্রে যাদেরকে পাগল বলি, তারা কোনও ঘটনা ঘটালে, তা উপলব্ধি করতে পারেন না ৷ তবে, মানসিক বিকারগ্রস্ত ব্যক্তি যে জঘন্য অপরাধগুলি ঘটায়, প্রতিটাই উপলব্ধি করতে পারে ৷ ফলে এরা পাগল নয় ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.