দুর্গাপুর, 9 এপ্রিল: মুর্শিদাবাদের ওয়াকফ-অশান্তি প্রসঙ্গে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন দিলীপ ঘোষ ৷ মঙ্গলবার দুর্গাপুরের রাজীব গান্ধি স্মৃতি মেলা ময়দানে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে তৃণমূলের দুই সাংসদের মধ্যে বিতর্ক, এসএসসি প্যানেল বাতিল নিয়েও মমতা সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন বিজেপি নেতা ৷
রাজ্যসভা ও লোকসভায় পাশ হয়েছে ওয়াকফ সংশোধনী বিল ৷ রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর এখন তা আইনে পরিণত ৷ এই আবহে ওয়াকফ সংশোধনী প্রত্যাহারের দাবিতে মঙ্গলবার রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর ৷ সকাল থেকে শুরু হওয়া প্রতিবাদ, বিকেলে বড় অশান্তিতে পরিণত হয় ৷ পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ান আন্দোলনকারীরা ৷ গাড়ি ভাঙচুর, আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ৷ আইনশৃঙ্খলার এই পরিস্থিতির জন্য রাজ্য সরকারকেই দায়ী করেন দিলীপ ঘোষ ৷
জঙ্গিপুরে অশান্তি নিয়ে দিলীপ :
এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, "রাজ্য়ের বিভিন্ন এলাকায় উৎপাত চালানোর জন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের এগিয়ে দিচ্ছে তৃণমূল ৷ রামনবমীর দিন অশান্তি করতে পারেনি ৷ তাই ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে অশান্তি ছড়ানো হয়েছে ৷"
তিনি আরও বলেন, "সিএএ পাশ হওয়ার পরেও একই ঘটনা ঘটেছিল ৷ ট্রেন, বাস, গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল ৷ দিল্লির এক মন্ত্রীর বক্তব্যের পরও অশান্ত হয়ে উঠেছিল বাংলা ৷ কিন্তু, তারপরও একটি মামলা হয়নি ৷ তৃণমূল চাইছে এখানে উৎপাত হোক ৷ ভয়ের পরিবেশ তৈরি হোক ৷ দাঙ্গাবাজ দল একটা ৷"
দুই তৃণমূল সাংসদের বাকবিতণ্ডা প্রসঙ্গে দিলীপ :
এদিন, সেই প্রসঙ্গে মেদিনীপুরের প্রাক্তন সাংসদ বলেন, "এই দলে সিনিয়রদের সম্মান দেওয়া হয় না । এমনকী, মহিলা সাংসদদের অসম্মান করা হয় । এরা 'ড্রামাবাজ' । একজন অসংলগ্ন কথা বলার জন্য সতর্কিত হয়েছেন । তাঁর সদস্যপদ খারিজ হয়ে গিয়েছিল । আর অপরজনকে লোকে পাগল বলে মনে করে । তিনি কী বলেন ? তাঁর দলের লোক সংসদের ভিতরে তাঁকে কেউ ভরসা করে না । এরা হচ্ছে তৃণমূলের নেতা, এই রাজ্যের মুখ । তাহলে ভাবুন পশ্চিমবঙ্গ সম্পর্কে সারা দেশের কী ধারণা হচ্ছে ? এঁরা কুকুর বিড়ালের মতো রাস্তায় ঝগড়া করেন ।"
সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে গ্রেফতারির দাবি দিলীপের :
এই বিষয়ে বিজেপি নেতা বলেন,"সিদ্দিকুল্লা চোধুরীদের মতো সাম্প্রদায়িক মানুষদের কাঁধে ভর করে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় এসেছেন ৷ সেই কারণে নিরুপায় হয়ে এঁদেরকে মাথায় করে রেখেছেন ৷ দেশদ্রোহীতার আইনে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে গ্রেফতার করা উচিত ৷"
এসএসসি প্যানেল বাতিল প্রসঙ্গে দিলীপ:
চাকরিহারাদের প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে দেখা করে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা বিজেপি নেতা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৷ সেই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, "অবশ্যই বৈঠক করা উচিত ৷ সকলের একসঙ্গে এই বিষয়ে পদক্ষেপ করা উচিত ৷ সঠিক তথ্য় হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো 18 হাজার যোগ্য শিক্ষকদের চাকরি খেয়ে নেওয়া হয়েছে ৷ তাঁদের মধ্যে অনেকেই গোল্ড মেডেল পেয়েছেন ৷ 8 হাজার ভুয়ো শিক্ষকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে বলে আজ যোগ্যরাও চাকরি হারিয়েছেন ৷ এর ব্যবস্থা করতে হবে ৷"