নিউটাউন, 19 এপ্রিল: বিয়ের পরের দিনই সেই চেনা ছন্দে ধরা দিলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ । প্রতিদিনের মতো ইকো পার্কে মর্নিং ওয়াক সারলেন তিনি ৷ ভাগ্যচক্রে শনিবার জন্মদিন তাঁর ৷ খাতায় কলমে যদিওবা দিনটা 1 অগস্ট রয়েছে ৷ তবে 19 এপ্রিল দিনটাকে প্রকৃত জন্মদিন হিসাবে পালন করেন তিনি ৷ খুব জাঁকজমকভাবে জন্মদিন পালনে বিশ্বাসী নন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি ৷ তবুও এদিন সতীর্থ প্রাতঃভ্রমণকারীদের আবদারে কাটলেন কেট ৷ খেলেন পায়েস থেকে কেক, চেখে দেখলেন মিষ্টি ৷
সঙ্গে এও খোলসা করলেন স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারের সঙ্গে তাঁর ইকো পার্কে মর্নিং ওয়াকে এসে আলাপ নয় ৷ আগে থেকেই একে ওপরকে চিনতেন তাঁরা ৷ তবে বিয়েটা পুরোটাই পরিস্থিতির দরকারে বলে জানালেন দিলীপ ঘোষ ৷ তবে এদিন তাঁর সঙ্গে স্ত্রীকে প্রাতঃভ্রমণে দেখা যায়নি ৷ তিনি একাই এসেছিলেন ৷ রোজকারের মতো বন্ধুদের সঙ্গে প্রাতঃভ্রমণের পর জন্মদিন পালন করলেন ৷
বিজেপি নেতা বলেন, "না না এখানে আলাপ হয়নি ৷ ও (স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদার) মর্নিং করার লোক নয় ৷ আমার থেকেও পুরনো দলের কর্মী উনি ৷ উনি 2012 সালে রাজনীতিতে এসেছেন ৷ আমি 2015 সালে রাজনীতিতে আসি ৷ ওঁর সঙ্গে আগে থেকেই দেখা সাক্ষাৎ হতো ৷ আমার বাড়িতেও এসেছেন ৷ বিয়ে করার ব্যাপারটা হঠাৎতই এসেছে ৷ পরিস্থিতির কারণে বিয়েটা হয়েও গিয়েছে ৷ অনেকে ভাবছেন ইকো পার্কে হাঁটলেই বিয়ে হয় ৷ সারাজীবন হাঁটলেও বিয়ে হবে না ৷ বিয়ে যখন হওয়ার তখনই হবে ৷"
শুক্রবার ঘরোয়া পরিবেশে নিকট আত্মীয়স্বজনের উপস্থিতি বিয়ে সেরেছেন 61 বছরের দিলীপ ঘোষ ৷ স্ত্রী 47 বছরের রিঙ্কু মজুমদার বিজেপি নেত্রী ৷ বিয়ের দিনই দিলীপ জানিয়েছেন, তাঁর জীবনে এই নতুন অধ্যায় কোনোভাবেও তাঁর কাজে বাঁধা হবে না ৷ বিয়ের পরও তিনি সক্রিয়ভাবে রাজনীতি চালিয়ে যাবেন ৷ শনিবার ইকো পার্কেও সেই কথা শোনা গেল দিলীপের মুখে ৷ বিজেপি নেতার কথায়, "পরিস্থিতি পালটাবে কিন্তু দিলীপ ঘোষের মিশন কখনও পালটাবে না । দিলীপ ঘোষ, দিলীপ ঘোষই আছে ৷"
তিনি আরও বলেন, "রামনবমী উপলক্ষে দশদিন বাড়ির বাইরে ছিলাম । তারপর মুর্শিদাবাদের ঘটনা নিয়ে মিছিল করেছি । চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অমানবিক ব্যবহার হয়েছে, তার প্রতিবাদেও মিছিল করেছি । নববর্ষের সময় নিজের ব্যক্তিগত কাজের জন্য দু'দিন ছুটিতে ছিলাম ৷ কিন্তু তাও মিছিল করেছি এবং বাকি কাজ করেছি । এর মধ্যে গত দু'দিন আমি বাড়িতেই ছিলাম ৷ আজ বেলা পর্যন্ত জন্মদিন পালন করব ৷ লোকেরা বড় হওয়া নিয়ে অনেক জাঁকজমক করে জন্মদিন পালন করেন । কিন্তু আমি খোলা মাঠে জন্মদিন পালন করি ৷ মানুষ রাত্রিবেলা কেক কাটে ৷ কিন্তু দিলীপ ঘোষ ভোর ছ’টায় কেক কাটে ।"
মুর্শিদাবাদের ঘটনা নিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, "আদালতের নির্দেশে বিএসএফ নেমেছে । বিজেপি আদালতে আবেদন জানিয়েছিল । এখন যদি বিএসএফ সব জায়গায় যায় তাহলে পুলিশ কী করতে আছে ? বিএসএফ পুলিশের কাজ করবে এলাকার জায়গায় জায়গায় বিএসএফ ক্যাম্প করতে হচ্ছে । তাহলে পুলিশ কী করছে ? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার কী করছে ? তাহলে বিজেপি যেটা দাবি করেছিল 355, 356 ধারা লাগু করা হোক ।"
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের মালদা সফর নিয়ে তিনি বলেন, "রাজ্যপাল আগে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করেছেন । এবারও গিয়ে উনি ওঁর দায়িত্ব পালন করছেন । কিন্তু রাজ্যে শাসন যার হাতে রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিক থেকে তেমন কোনও পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না । যেদিন এই ঘটনা ঘটে সেই 11 এপ্রিল আমি মালদা থেকে ফিরছিলাম ৷ কিন্তু মাঝপথেই অশান্তি আশঙ্কা করে আমাকে আর এগোতে বারণ করে পুলিশ ৷ আমাকে কিছুক্ষণ গেস্ট হাউসে বসিয়ে রাখা হয় ৷ তারপর রাতের দিকে আমি আবার রওনা দিই ৷"