কলকাতা, 24 এপ্রিল: অক্ষয় তৃতীয়ার দিন অর্থাৎ 30 এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে দিঘায় জগন্নাথধামের উদ্বোধন ঘিরে রাজ্যজুড়ে উদ্দীপনার আবহ। উদ্বোধনকে ঘিরে যাতে কোনও ফাঁক না থাকে, তার জন্য জেলাপ্রশাসন থেকে শুরু করে রাজ্য সরকারের একাধিক দফতর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে। নিরাপত্তা, লজিস্টিক ও জনসমাগম সামলানো— সব ক্ষেত্রেই চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
সোমবার থেকেই দিঘার সমস্ত স্নানঘাটে মোতায়েন থাকবে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) একটি কোম্পানি। 26 এপ্রিল তারা দিঘায় পৌঁছবে এবং উদ্বোধন পর্যন্ত সেখানেই থাকবে। প্রতিটি ঘাটে উপস্থিত থাকবে কমপক্ষে তিনজন লাইফ সেভার বা স্থানীয় পরিভাষায় ‘নুলিয়া’, সঙ্গে সিভিল ডিফেন্স ও পুলিশ। সাতটি দ্রুতগামী নৌকা ঘাট সংলগ্ন সমুদ্রে নজরদারিতে থাকবে। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি রাজেশ সিনহা ইতিমধ্যেই দিঘা সফরে এসে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন। এক আধিকারিকের কথায়, “অনেকেই স্নান সেরে মন্দির দর্শনে যাবেন, তাই ঘাটের নিরাপত্তায় বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।”
দিঘাকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে স্বভাবতই রাজ্য সরকারের পছন্দসই নীল-সাদা রঙে। ওয়েলকাম গেট থেকে শুরু করে উদয়পুর পর্যন্ত রাস্তার ডিভাইডার, গার্ডরেল, বিদ্যুতের খুঁটি—সবই নীল-সাদা রঙে রাঙানো হয়েছে। রাজ্য পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী বৃহস্পতিবার দিঘা থেকে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের (এসবিএসটিসি) বাসস্ট্যান্ড থেকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে দু’টি নতুন রুটে বাস পরিষেবা উদ্বোধন করেন। একটি রুট দিঘা থেকে তারাপীঠ, অন্যটি দিঘা থেকে ডানলপ, বারাসাত ও কৃষ্ণনগর হয়ে বহরমপুর। বর্তমানে দিঘা থেকে প্রতিদিন 110টি বাস বিভিন্ন রুটে যাতায়াত করছে।

উদ্বোধন নিয়ে উচ্ছ্বসিত পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “দিঘার জগন্নাথ ধাম বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর ভাবনাচিন্তার ফসল। এই স্থাপত্য ভবিষ্যতের ইতিহাসে বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের প্রতীক হয়ে থাকবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম চিরকাল জড়িয়ে থাকবে এই মন্দিরের সঙ্গে।”

দিঘার জগন্নাথধাম ঘিরে পর্যটন ক্ষেত্রেও বড়সড় সম্ভাবনার কথা বলছে প্রশাসনিক মহল। উৎসবকে কেন্দ্র করে বিপুল জনসমাগমের সম্ভাবনা থাকায়, তা সামলাতেই রণকৌশলে প্রস্তুত প্রশাসন।