কলকাতা, 8 সেপ্টেম্বর: আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে সাংসদ পদ ছেড়েছেন তৃণমূলের জহর সরকার ৷ তিনি পদ ছাড়ার পরই নাম না-করে রাজ্যসভার আরেক সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়কে কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের তরুণ নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য ।
তিনি লিখলেন, "একজন ছেড়েছেন, আরেকজনও ছাড়ুন । স্রোতের অনুকূলে তো কচুরিপানাও ভাসে, যদি উলটো দিকে সাঁতার কাটতে না-ই পারলেন তাহলে মানুষ জন্ম বৃথা !"
এই মুহূর্তে তৃণমূল সাংসদ জহর সরকারের দল ছাড়ার ঘোষণায় যথেষ্ট অস্বস্তিতে দল । রবিবার দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিস্ফোরক চিঠি দিয়ে রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন এই প্রাক্তন আমলা । একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে তিনি লিখেছেন, "রাজ্যকে বাঁচাতে কিছু একটা করুন ।"
আর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরপরই সোশাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছেন তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য । তিনি লেখেন, "যুদ্ধের সময় যারা পালায় কিংবা গা বাঁচিয়ে চলে, ইতিহাস তাদের লজ্জার নজরে দেখে ।" তবে তাঁর আক্রমণের লক্ষ্য, একা যে জহর সরকার এমনটা নয় । একইসঙ্গে নাম না-করে এ দিন রাজ্যসভার আর এক সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়কেও কটাক্ষ করলেন তিনি ।
আরজি কর-কাণ্ডে গত কয়েকদিন ধরেই সরব হয়েছেন সুখেন্দুশেখর রায় । রাত দখলের কর্মসূচি থেকে শুরু করে বিনীত গোয়েলের পদত্যাগ, বিভিন্ন সময় আন্দোলনকারীদের পাশে থাকতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের এই রাজ্যসভার সাংসদকে । আজ যখন তাঁরই সহযোদ্ধা দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছেন, তখন সোশাল মিডিয়ায় নাম না-করে কটাক্ষ শোনা যাচ্ছে অন্যজনের নামেও । সোশাল মিডিয়ায় নাম না করেই দেবাংশুর বার্তা, দল ছাড়ুন তিনিও । এক্ষেত্রে দেবাংশুর মুখে সরাসরি সুখেন্দুশেখর রায়ের নাম না-এলেও বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না আক্রমণের লক্ষ্য কে !
এ দিন অবশ্য এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পরপরই দিল্লি থেকে সুখেন্দুশেখর রায়ের প্রতিক্রিয়া জানা গিয়েছে । তিনি অবশ্য এখনই জহর সরকারের পথে হাঁটতে চান না । তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য,"জহর সরকারের ইস্তফার খবর পেয়েছি । কিন্তু আমি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না । আমি এর বিরোধিতাও করছি না । সমর্থনও নয় । আমি আমার মতো করে নাগরিক আন্দোলনের সঙ্গে আছি । একটা বিন্দু হিসেবে । একজন নাগরিক হিসেবে আমার সামান্য যা করণীয় করছি । সকলেই তো গোল দেয় না, সেঞ্চুরি করে না । সকলেই চ্যাম্পিয়ন হয় না । কিন্তু মাঠে নেমে তো খেলতে হবে । সাংসদের কাছে মানুষের একটা প্রত্যাশা থাকে । যে তিনি কোনও অন্যায়ের সঙ্গে থাকবেন না ।"
প্রসঙ্গত, দলের বিষয়ে মন্তব্য করার আগে বরাবরই একটু সাবধানী সুখেন্দুশেখর রায় । প্রতিবাদীদের পাশে থাকার কথা বললেও কখনওই সরাসরি দলের বিরোধিতা করেননি তিনি ৷ এ দিনও তাই মন্তব্য করার আগে সাবধানী অবস্থান নিলেন এই রাজ্যসভার সাংসদ ।