কলকাতা, 6 এপ্রিল: ফের নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কমিশনে অভিযোগ করল সিপিএম। নির্বাচনী বিধি চালু হওয়ার পরও অভিষেকের বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় ভোট প্রচারে কলকাতা পুলিশ বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, এবারের নির্বাচনেও তিনি প্রার্থী। কিন্তু, নির্বাচনী আচরণ বিধি চালু হওয়ার পর কেউ কোনও বিশেষ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারেন না। তাই, অভিষেকের বিশেষ নিরাপত্তা প্রত্যাহারের আর্জি জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি সাধারণের সুবিধার্থে তাঁর বাড়ি সংলগ্ন এলাকার রাস্তা সাধারণের ব্যবহারযোগ্য করে তোলার দাবি করা হয়েছে। অন্যথায় সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের জন্য সমান ব্যবস্থা বা নিয়ম চালুর কথাও বলা হয়েছে ৷ সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য সুদীপ সেনগুপ্ত বলেন, "অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশেষ নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে কালীঘাট অঞ্চলে বিরোধী রাজনৈতিক দল গুলোর প্রচারে বাধা দেওয়া হচ্ছে। সাধারণ নাগরিকদের জীবন দুর্বিষহ করে তোলার বিষয়ে নির্বাচনী কমিশনকে অভিযোগ জানালাম আমরা। নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পরেও রাস্তা ও ফুটপাতের একটা বড় অংশ দখল করে বসে রয়েছেন তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী। অভিষেকের বাড়ি থেকে বেরনো বা ঢোকবার সময় দীর্ঘক্ষণ বড় রাস্তা বন্ধ করে সমস্ত নাগরিকের যাতায়াত স্তব্ধ করে দেওয়া হয়। মাঝেমধ্যেই খেয়াল খুশি মতো কালীঘাট রোড ওয়ান ওয়ে করে দেওয়া হয়। লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থীর জন্য সরকারি পয়সা খরচ করে এত নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে কেন?"
কমিশনে পাঠানো ইমেলে সিপিএম অভিযোগে করেছে, "অত্যধিক নিরাপত্তা ব্যবহার করছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। হরিশ মুখার্জি রোড, 23 পল্লির দুর্গা মন্দির এলাকা এবং পটুয়াপাড়ায় কালীঘাট রোড, হাজরা রোড ক্রসিংয়ের সামনে অর্থাৎ তাঁর বাড়ির কাছে সর্বদা কর্মী, পুলিশ কর্মকর্তা এবং এই জাতীয় নিরাপত্তা কর্মীরা থাকেন। প্রকৃতপক্ষে, কিছু নিরাপত্তারক্ষী যথাযথ পোশাক ছাড়াই থাকেন। পুলিশ কর্মী-নিরাপত্তা কর্মীরা ইচ্ছাকৃতভাবে রাস্তা আটকে রাখেন। অভিষেক তাঁর বাসভবন বা অফিস থেকে যাতায়াত করলে ওই সময়ে প্রায় 15 মিনিট রাস্তা বন্ধ রাখা হয় ৷"
চিঠিতে আরও লেখা হয়েছে, "সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা ও নিরাপত্তাকর্মীরা তার জন্য অধিকাংশ সময় জনসাধারণের রাস্তাগুলোকে ওয়ান ওয়ে করে দেন। তিনি চলে যাওয়ার পরও, গাড়ি, সাধারণ জনগণকে জোরপূর্বক আরও কয়েক মিনিটের জন্য থামিয়ে রাখা হয়। তাতে জনসাধারণের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি এমন যে তার নিরাপত্তার জন্য রাস্তা, ফুটপাথের একটি বড় অংশ অবরুদ্ধ।" রাজ্যে অন্যান্য সাংসদ/বিধায়ক এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিরা থাকলেও শুধু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তা থাকবে সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত 28 মার্চ ওই এলাকায় ভোটের প্রচারে গিয়ে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন দক্ষিণ কলকাতার লোকসভার বামফ্রন্ট প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম। সেদিনও নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছিল সিপিএম।
আরও পড়ুন: