কলকাতা, 5 ফেব্রুয়ারি: অস্ত্র ছেড়ে মাওবাদীদের বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আন্দোলনে নামার আহ্বান জানাল সিপিআই। শতবর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠান থেকে উঠে এল এমনই দাবি। পাশাপাশি দলের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা ও রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় এক যোগে কংগ্রেসকে আক্রমণও করলেন।
একইসঙ্গে ইন্ডিয়া ব্লকের টালমাটাল অবস্থার জন্য লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধির নেতৃত্বকেও দায়ী করলেন ডি রাজারা ৷ নাম না করে সিপিকেও এদিন কটাক্ষ করেছে বাম শরিক। সিপিআই নেতাদের বক্তব্য, তাত্ত্বিক কচকচানিতে না থেকে এক হওয়া দরকার। কেন্দ্র-রাজ্যের বিরুদ্ধে বর্তমান ইস্যুগুলো নিয়ে বৃত্ততম বাম ঐক্য গড়ারও আহ্বান করা হয়েছে।
মাওবাদীদের বন্দুক ছেড়ে লাল ঝান্ডা হাতে নেওয়ার বার্তাও দেওয়া হয়েছে সমাবেশ থেকে। সিপিআই সাধারণ সম্পাদক ডি রাজার বক্তব্য, "প্রথমত কারা মাওবাদী সেটা মানুষকে জানতে হবে ৷ সিপিআই, সিপিএম, সিপিআই(এমএল) রয়েছে। এরা সকলে বৃহত্তর বাম জোটের অংশ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ বলছেন, মাওবাদী মুক্ত ভারত গড়তে হবে। এর মানে কী ? তাহলে উগ্র-দক্ষিনপন্থীদের কী বলা হবে ? আরএসএসের মদত পাওয়া এই সমস্ত সংগঠন ভারর রাষ্ট্রের ধারনাই বদলে দিতে চায় । ভারতের ইতিহাস নতুন করে লিখতে চায় । অমিত শাহ এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবেন কি ? তিনি ভাবেন মাওবাদীদের করলেই সমস্ত সমস্য়ার সমাধান হবে। "
রাজ্য তথা দেশে সিপিআই ও বামপন্থীদের দুর্বলতার কথা স্বীকার করে সিপিআই রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, "নখ-দাঁত বের করে সাম্রাজ্যবাদী, ফ্যাসিবাদী, সাম্প্রদায়িক পার্টি ক্ষমতা দখল করেছে ৷ বিজেপি দেশদ্রোহী রাজনৈতীক দল। যা হওয়ার তাই হচ্ছে। দেশের সম্পদ বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। দেশে কোনও চাকরি নেই। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানন্ত্রীর অনেক মিল রয়েছে, বিশষ করে ধাপ্পাবাজিতে।"
এরই সঙ্গে তিনি নাম না করে কার্যত সিপিএম ও বাম দলগুলোকেও নিশানা করেন। তাঁর কথায়, "আমদের পশ্চিমবঙ্গে রোজ গনধর্ষণ থেকে শুরু করে খুন হচ্ছে ৷ প্রশাসন কি আছে ? চারদিকে নৈরাজ্য চলছে। আমরা কমিউনিস্টরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারছি না ! কংগ্রেসের দয়ায় নতজানু হয়ে বসে থাকলে হবে না ৷ কংগ্রেস যুক্ত ফ্রন্ট বোঝে না ৷ ওরা রাজার দল ৷"
অন্যদিকে, সিপিআই কেন্দ্রীয় সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য পল্লব সেনগুপ্ত বলেন, "দেশ এবং বাংলাকে রক্ষা করতে বৃহত্তর বাম ঐক্যের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তৈরি করতে হবে একটা তৃতীয় পরিসর। যেখানে শুধু সিপিআই, সিপিএম, আরএসপি, বা লিবারেশনকে রাখলে চলবে না। যুক্ত করতে হবে সমস্ত বাম ও কমিউনিস্ট শক্তিকে। এমনকী ছত্তিশগড়ের জঙ্গলে যে কাস্তে-হাতুড়ি নিশান ওড়ানো মাওবাদীরা আদিবাসীদের রক্ষা করতে প্রাণ দিয়ে আন্দোলন করছে ৷ টেনে আনতে হবে তাদেরকেও। তাদের মূলস্রোতে আনতে হবে। নেপালে যেমন হয়েছে এখানেও সেভাবে মাওবাদীদের মূলস্রোতে নিয়ে আসতে হবে। ভারত রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একশোটা রাইফেল হাতে নিয়ে কিছু হবে না। লড়াই করতে হবে মূলস্রোতে এসে। "