ETV Bharat / state

'তুলসীর মালা পরে আসা যাবে না স্কুলে', প্রধান শিক্ষিকার 'ফতোয়া'য় বিতর্ক বারাসতের স্কুলে - TULSI CONTROVERSY AT SCHOOL

বিতর্কের মাঝে 'ফতোয়া' প্রত্যাহার ৷ অযথা বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে, পাল্টা দাবি প্রধান শিক্ষিকার ৷

TULSI CONTROVERSY AT SCHOOL
'তুলসীর মালা পরে আসা যাবে না স্কুলে', প্রধান শিক্ষিকার 'ফতোয়া'য় বিতর্ক বারাসতের স্কুলে ৷ (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : June 20, 2025 at 9:01 PM IST

4 Min Read

বারাসত, 20 জুন: তুলসীর মালা পরে আসা যাবে না স্কুলে ৷ বারাসতের একটি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে এমনই 'ফতোয়া' ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক ৷ সম্প্রতি এ নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার একটি অডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে ৷ সেখানেই তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে, "স্কুলে কেউ তুলসীর মালা পরে আসবে না ৷" বারাসতের নবপল্লি যোগেন্দ্রনাথ বালিকা বিদ্যামন্দিরের ঘটনায় দানা বেঁধেছে বিতর্ক ৷

অভিভাবকদের একাংশ অভিযোগ করেছেন, স্কুলে কোনও পড়ুয়া তুলসীর মালা পরে আসছে কি না, তা দেখতে প্রধান শিক্ষিকা ইন্দ্রাণী দত্ত চক্রবর্তী নিজে গেটে দাঁড়িয়ে নজরদারি চালাচ্ছেন ৷ আর এতেই ক্ষুব্ধ অভিভাবকদের একাংশ ৷ প্রতিবাদে সরব হয়েছেন স্থানীয়রা ৷ বিতর্কের মাঝে প্রধান শিক্ষিকাকে ফোন করে অবিলম্বে এই 'ফতোয়া' প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর ও স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি চম্পক দাস ৷ বিতর্কের মুখে এই নিয়ে প্রধান শিক্ষিকার বক্তব্য, অযথা বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে ৷

'তুলসীর মালা পরে আসা যাবে না স্কুলে', প্রধান শিক্ষিকার 'ফতোয়া'য় বিতর্ক বারাসতের স্কুলে (ইটিভি ভারত)

প্রধান শিক্ষিকাকে বলতে শোনা গিয়েছে, "কাল ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পুরো স্কুল রয়েছে ৷ গলায় তুলসীর মালা, হাতে-কাঁধে কিছু পরে ঢুকবে না ৷ তুলসীর মালা পরেও ঢোকা যাবে না ৷ ফোন নিয়ে আসা যাবে না-স্কুলে ৷ নিয়ে এলে আমাদের কাছে জমা রাখতে হবে ৷" ছাত্রীদের উদ্দেশ্যেই মূলত তাঁর এই বার্তা বলে দাবি অভিভাবকদের একাংশের ৷

এই বিষয়টি জানাজনি হতেই শুরু হয় বিতর্ক ৷ অভিভাবকদের পাশাপাশি, স্থানীয়রাও এ নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেন ৷ পুরো ঘটনায় যথেষ্ট বিরক্তি প্রকাশ করেছেন স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি তথা স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর চম্পক দাস ৷ বিষয়টি জানতে পেরে প্রধান শিক্ষিকাকে ফোন করেন তিনি ৷ তাঁকে দ্রুত এই নির্দেশ প্রত্যাহার করতে বলেন তিনি ৷ কাউন্সিলর বলেন, "স্কুলে এই ধরনের ফতোয়া জারি করা যায় না ৷"

এরপরেই কিছুটা সুর বদল করেন প্রধান শিক্ষিকা ইন্দ্রাণী দত্ত চক্রবর্তী ৷ তাঁর কথায়, "একদিন আমি দেখি তুলসীর মালা ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে রয়েছে ৷ একজনের পায়ে লেগেছে ৷ সেই জন্য সতর্ক করতে ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে এই ধরনের কথা বলতে হয়েছে ৷ ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত কিংবা খারাপ কোনও উদ্দেশ্য আমার ছিল না ৷"

তিনি আরও বলেন, "এটা নিয়ে অযথা অপব‍্যাখা করা হচ্ছে ৷ এর মধ্যে কোনও ফতোয়ার ব‍্যাপার নেই ৷ যাঁরা এই অডিয়ো ক্লিপ সংবাদমাধ্যমের হাতে তুলে দিয়েছেন, তাঁদের উচিত ছিল সবার আগে আমার কাছে এসে কথা বলা ৷ অসুবিধা থাকতেই পারে ৷ তাই বলে বিতর্ক তৈরি করার কোনও প্রয়োজন ছিল না ৷ আমি নিজে ধর্মে বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা করি ৷ সেই কারণে স্কুলের ছাত্রীদের বুঝিয়েছি, আমাদের তাবিজ-কবজ অনেক কিছু আছে ৷ আমরা সেগুলি সাধারণত দেখাই না ৷ তাই ওঁদের বলেছি, তোরা তুলসীর মালা খুলে আসিস ৷ কারণ, তোরাই বলছিস ছিঁড়ে যাচ্ছে ৷ পায়ের তলায় পড়ে যাওয়া তো ঠিক নয় ৷ কোনও ধর্মে আঘাত করার ইচ্ছে ‌শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের থাকে না ৷"

তবে, প্রধান শিক্ষিকার এই যুক্তি মানতে নারাজ স্থানীয়দের একাংশ ৷ অরুণ দত্ত গুপ্ত নামে এক বাসিন্দা বলেন, "আমি নিজে একজন বৈষ্ণব ৷ তুলসীর মালা আমার গলায় থাকুক না-থাকুক, আমি কিন্তু ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে থাকি ৷ তাই বলে আমার ব্যক্তিসত্ত্বায় কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারে না ৷ এটা তো নিয়ম হতে পারে না ৷ যার-যার ধর্ম সে তার মতো করে পালন করবে ৷ স্কুলের এই সিদ্ধান্ত মানতে পারছি না ৷"

স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি চম্পক দাস বলেন, "আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না ৷ দু’দিন আগেও স্কুলে গিয়ে পরিচালন কমিটির মিটিং করে এসেছি ৷ তখনও এ নিয়ে উনি কিছুই জানাননি। তুলসীর মালা খুলে ফেলার কথা কেউ কাউকে বলতে পারে না ৷ বলে থাকলে ভুল বলেছে ৷ এর জন্য বিবৃতি দিয়ে উনি (প্রধান শিক্ষিকা) ক্ষমা চাইলে ভালো হয় ৷"

বারাসত, 20 জুন: তুলসীর মালা পরে আসা যাবে না স্কুলে ৷ বারাসতের একটি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে এমনই 'ফতোয়া' ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক ৷ সম্প্রতি এ নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার একটি অডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে ৷ সেখানেই তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে, "স্কুলে কেউ তুলসীর মালা পরে আসবে না ৷" বারাসতের নবপল্লি যোগেন্দ্রনাথ বালিকা বিদ্যামন্দিরের ঘটনায় দানা বেঁধেছে বিতর্ক ৷

অভিভাবকদের একাংশ অভিযোগ করেছেন, স্কুলে কোনও পড়ুয়া তুলসীর মালা পরে আসছে কি না, তা দেখতে প্রধান শিক্ষিকা ইন্দ্রাণী দত্ত চক্রবর্তী নিজে গেটে দাঁড়িয়ে নজরদারি চালাচ্ছেন ৷ আর এতেই ক্ষুব্ধ অভিভাবকদের একাংশ ৷ প্রতিবাদে সরব হয়েছেন স্থানীয়রা ৷ বিতর্কের মাঝে প্রধান শিক্ষিকাকে ফোন করে অবিলম্বে এই 'ফতোয়া' প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর ও স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি চম্পক দাস ৷ বিতর্কের মুখে এই নিয়ে প্রধান শিক্ষিকার বক্তব্য, অযথা বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে ৷

'তুলসীর মালা পরে আসা যাবে না স্কুলে', প্রধান শিক্ষিকার 'ফতোয়া'য় বিতর্ক বারাসতের স্কুলে (ইটিভি ভারত)

প্রধান শিক্ষিকাকে বলতে শোনা গিয়েছে, "কাল ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পুরো স্কুল রয়েছে ৷ গলায় তুলসীর মালা, হাতে-কাঁধে কিছু পরে ঢুকবে না ৷ তুলসীর মালা পরেও ঢোকা যাবে না ৷ ফোন নিয়ে আসা যাবে না-স্কুলে ৷ নিয়ে এলে আমাদের কাছে জমা রাখতে হবে ৷" ছাত্রীদের উদ্দেশ্যেই মূলত তাঁর এই বার্তা বলে দাবি অভিভাবকদের একাংশের ৷

এই বিষয়টি জানাজনি হতেই শুরু হয় বিতর্ক ৷ অভিভাবকদের পাশাপাশি, স্থানীয়রাও এ নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেন ৷ পুরো ঘটনায় যথেষ্ট বিরক্তি প্রকাশ করেছেন স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি তথা স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর চম্পক দাস ৷ বিষয়টি জানতে পেরে প্রধান শিক্ষিকাকে ফোন করেন তিনি ৷ তাঁকে দ্রুত এই নির্দেশ প্রত্যাহার করতে বলেন তিনি ৷ কাউন্সিলর বলেন, "স্কুলে এই ধরনের ফতোয়া জারি করা যায় না ৷"

এরপরেই কিছুটা সুর বদল করেন প্রধান শিক্ষিকা ইন্দ্রাণী দত্ত চক্রবর্তী ৷ তাঁর কথায়, "একদিন আমি দেখি তুলসীর মালা ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে রয়েছে ৷ একজনের পায়ে লেগেছে ৷ সেই জন্য সতর্ক করতে ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে এই ধরনের কথা বলতে হয়েছে ৷ ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত কিংবা খারাপ কোনও উদ্দেশ্য আমার ছিল না ৷"

তিনি আরও বলেন, "এটা নিয়ে অযথা অপব‍্যাখা করা হচ্ছে ৷ এর মধ্যে কোনও ফতোয়ার ব‍্যাপার নেই ৷ যাঁরা এই অডিয়ো ক্লিপ সংবাদমাধ্যমের হাতে তুলে দিয়েছেন, তাঁদের উচিত ছিল সবার আগে আমার কাছে এসে কথা বলা ৷ অসুবিধা থাকতেই পারে ৷ তাই বলে বিতর্ক তৈরি করার কোনও প্রয়োজন ছিল না ৷ আমি নিজে ধর্মে বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা করি ৷ সেই কারণে স্কুলের ছাত্রীদের বুঝিয়েছি, আমাদের তাবিজ-কবজ অনেক কিছু আছে ৷ আমরা সেগুলি সাধারণত দেখাই না ৷ তাই ওঁদের বলেছি, তোরা তুলসীর মালা খুলে আসিস ৷ কারণ, তোরাই বলছিস ছিঁড়ে যাচ্ছে ৷ পায়ের তলায় পড়ে যাওয়া তো ঠিক নয় ৷ কোনও ধর্মে আঘাত করার ইচ্ছে ‌শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের থাকে না ৷"

তবে, প্রধান শিক্ষিকার এই যুক্তি মানতে নারাজ স্থানীয়দের একাংশ ৷ অরুণ দত্ত গুপ্ত নামে এক বাসিন্দা বলেন, "আমি নিজে একজন বৈষ্ণব ৷ তুলসীর মালা আমার গলায় থাকুক না-থাকুক, আমি কিন্তু ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে থাকি ৷ তাই বলে আমার ব্যক্তিসত্ত্বায় কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারে না ৷ এটা তো নিয়ম হতে পারে না ৷ যার-যার ধর্ম সে তার মতো করে পালন করবে ৷ স্কুলের এই সিদ্ধান্ত মানতে পারছি না ৷"

স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি চম্পক দাস বলেন, "আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না ৷ দু’দিন আগেও স্কুলে গিয়ে পরিচালন কমিটির মিটিং করে এসেছি ৷ তখনও এ নিয়ে উনি কিছুই জানাননি। তুলসীর মালা খুলে ফেলার কথা কেউ কাউকে বলতে পারে না ৷ বলে থাকলে ভুল বলেছে ৷ এর জন্য বিবৃতি দিয়ে উনি (প্রধান শিক্ষিকা) ক্ষমা চাইলে ভালো হয় ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.