কলকাতা, 15 এপ্রিল: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি বাতিল হয়েছে 26 হাজার শিক্ষকের । নয়াদিল্লিতে যন্তর মন্তরের সামনে নববর্ষের পরের দিন থেকে ধরনায় বসবেন তাঁরা । আর সেই সময়ই রাজ্যের প্রত্যেকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের কাছে পৌঁছল শুভ নববর্ষের বার্তা ।
এই প্রথম রাজ্যের প্রত্যেকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের নববর্ষের বার্তা পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । প্রতি বছর এসএমএসের মাধ্যমে এই বার্তা সরকারি প্রত্যেক কর্মচারীর কাছেই নবান্ন তরফে পাঠানো হয় । কিন্তু এবারের চিঠি করে প্রত্যেক প্রধান শিক্ষককে নববর্ষের শুভেচ্ছাবার্তা জানিয়েছে নবান্ন ।
নারায়ণ দাস বাঙুর মেমোরিয়াল মাল্টিপারপাস স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ এই চিঠির জন্য । কিন্তু এই আবহে এই বার্তা খুবই বেদনাদায়ক । এই বছর আমার মতো বহু শিক্ষকরাই শুভ নববর্ষ বলতে পারছেন না । কারণ আমার স্কুলে একটা পরিবার । ফলে আমার পরিবারের এক সদস্যের চাকরি নেই । তাই এই বছর আমরা নববর্ষের শুভেচ্ছাবার্তা জানানোর মতো জায়গায় নেই ।"
পার্ক ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয় পাঁজার কথায়, "আমার রসায়নের শিক্ষকের চাকরি, আরও কিছু শিক্ষকদের চাকরি বাতিল হয়েছে । যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল, সেই গুলো নিয়ে নতুন করে চিন্তা করতে হচ্ছে । তার সঙ্গে যাদের চাকরি বাতিল করা হয়েছে তাদের বেতন দেওয়াও এখন প্রশ্নের মুখে । কী করব সেই নিয়ে ঠিকমতো নির্দেশ নেই । নববর্ষের পরের দিন থেকেই স্কুল খুলে যাবে । এতদিন পরীক্ষা চলছিল । কিন্তু এবার পরিস্থিতি কী হবে সেটা চিন্তার । ফলে নববর্ষের পাশাপাশি এই বছর এই বিষয়গুলোও আমাদের মাথায় রাখতে হচ্ছে ।"
এই বিষয়ে অ্যাডভান্স সোসাইটি ফর হেডমাস্টার অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসের রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, "আমরা ভালো নেই । এই নববর্ষে আমরা সত্যি ভালো নেই । কারণ, আমাদের 26 হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে । যোগ্যদের বঞ্চিত করা হচ্ছে । তাদের চাকরি ফিরিয়ে আনতে হবে । যোগ্যদের বেতনের কী হবে সেই বিষয় নিয়েও আমাদের মধ্যে ধোঁয়াশা রয়েছে । ফলে সরকারকে অবিলম্বে এই যোগ্য-অযোগ্যর তালিকা প্রকাশ করে যোগ্য শিক্ষকদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে । আমরা তাই সানন্দে নববর্ষের শুভেচ্ছা গ্রহণ করতে পারছি না । কারণ রাজ্য সরকারই একমাত্র এই পরিস্থিতির থেকে উদ্ধার করতে পারে ।"
শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, "আগে উনি শিক্ষার জায়গা ঠিক করুন । কোটি কোটি টাকা খরচা করে বার্তা দিচ্ছেন । কিন্তু সেটা না করে আসল কাজ করা উচিত । শিক্ষার জায়গা মেরামতির প্রয়োজন । আমার মনে হয় সেটাই উনার আগে করা উচিত । তাহলে আর এই ধরনের বার্তা দিয়ে আমাদের মন ভালো করার কোনও প্রয়োজন পড়বে না ।"