জলপাইগুড়ি, 19 মে: উত্তরবঙ্গের শৈব তীর্থ জল্পেশ মন্দিরে ঢোকার স্কাইওয়াকের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ পুর্ণ্যার্থীদের কথা ভেবে এই উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। সোমবার শিলিগুড়ি থেকে ভার্চুয়ালি এই স্কাইওয়াকের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও বিরোধীরা এটিকে স্কাইওয়াক বলতে রাজি নয় ৷ তাদের বক্তব্য, উত্তরবঙ্গের রাজবংশী ও আদিবাসীরা মানুষদের বোকা মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
জল্পেশ মন্দিরে স্কাইওয়াক উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আজ জল্পেশ মন্দিরে স্কাইওয়াকের উদ্বোধন করা হল । 5 কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে । ছোট জায়গা, তাই দক্ষিণেশ্বর বা কালীঘাটের মত বড় করে করার জায়গা নেই । আমি সুযোগ পেলে যাব ।" জল্পেশ মন্দিরের স্কাইওয়াকের ভার্চুয়ালি ছবি দেখার পর মুখ্যমন্ত্রী জানান, স্কাইওয়াকটা সিড়ির ওপর দিয়ে হয়েছে ৷ কিন্তু সিঁড়িতে যাঁরা চড়তে পারেন না, তাঁদের জন্য একটা র্যাম্প যাতে করা যায় তার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। পর্যটন দফতর বিষয়টি দেখবেন বলেও জানান তিনি।

অন্যদিকে বিজেপির জেলা সম্পাদক শ্যাম প্রসাদ স্কাইওয়াকের উদ্বোধন প্রসঙ্গে কটাক্ষ করে বলেন, "উত্তরবঙ্গের রাজবংশী ও আদিবাসীরা মানুষদের বোকা মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ কালীঘাটে বা দক্ষিণেশ্বরে মুখ্যমন্ত্রী স্কাইওয়াক বানিয়েছেন ৷ সেটার সঙ্গে জল্পেশ মন্দিরের এই স্কাইওয়াকের কোন মিল আছে কি না, মুখ্যমন্ত্রী একবার ঘুরে দেখে আসুক না ? আসলে উত্তরবঙ্গের মানুষকে ভাওতা দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ এটা স্কাইওয়াকের নামে প্রহসন হয়েছে ৷"
এদিকে জল্পেশ মন্দির কমিটির সম্পাদক গিরিন্দ্রনাথ দেব জানান, আজ মুখ্যমন্ত্রী মিনি স্কাইওয়াকের উদ্বোধন করেছেন ৷ কাঁচের ওপর দিয়ে হাটার মত স্কাইওয়াকে অনেক খরচ, তাই এটা এইভাবে করা হয়েছে । সিড়ি দিয়ে উঠে এই জায়গায় একসঙ্গে 3 হাজার পুর্ণ্যার্থী দাঁড়াতে পারবেন।

এদিন জল্পেশে এই স্কাইওয়াকের উদ্বোধনের উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার উমেশ খান্ডবাহালে, জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ, মন্ত্রী বুলুচিক বড়াইক, বিধায়ক প্রদীপ কুমার বর্মা, নির্মল রায়-সহ জল্পেশ মন্দির কমিটির সম্পাদক গিরিন্দ্রনাথ দেব এবং জেলা পরিষদের সভাধিপতি কৃষ্ণা রায় বর্মন ৷ দক্ষিণেশ্বরের মত স্কাইওয়াক না-হলেও সিঁড়ি দিয়ে উঠে মন্দিরে প্রবেশ এই পথকেই 'স্কাইওয়াক' নাম দেওয়া হয়েছে ৷
উত্তরবঙ্গের বিখ্যাত শৈব তীর্থ জল্পেশে শ্রাবণ মাসে লক্ষ লক্ষ পুর্ণ্যার্থীদের ভিড় হয় ৷ জল্পেশ মন্দিরে ঢুকে শিব লিঙ্গে জল ঢালতে পুর্ণ্যার্থীদের হুড়োহুড়ি পড়ে যায় ৷ এর ফলে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে ৷ দুর্ঘটনা এড়াতে এবার পুর্ণ্যার্থীদের জন্য বিকল্প পথে মন্দিরে ঢোকার ব্যবস্থা করল রাজ্য সরকার। এতদিন মন্দিরের সামনে দিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে তারপর মন্দিরে ঢুকতে হত ৷ এবার থেকে মন্দিরের বাইরে থেকে ঘুরপথে মন্দিরে ঢুকতে পারবেন পুর্ণ্যার্থীরা ৷ তাঁদের মাথার ওপরে শেডের ব্যবস্থাও করা হয়েছে ৷

দুই বছর আগে শ্রাবণ মাসে জল্পেশ মন্দিরে জল ঢালতে হয়ে এক পুর্ণ্যার্থী আহত হন ৷ মামলা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে। এরপর শ্রাবণ মাসে পুর্ণ্যার্থীদের মন্দিরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। মন্দিরের বাইরে থেকেই চ্যানেলের মাধ্যমে জল ঢালতে হত ৷ নতুন এই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পুর্ণ্যার্থীরা সহজেই জল ঢালতে পারবে বলে আশা জল্পেশ মন্দির কমিটির ৷
শিলিগুড়িতে মমতার নিশানায় টি-বোর্ড, শিল্প সম্মেলনে 1 লক্ষ কোটির বিনিয়োগ-প্রস্তাব
চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্তে বন্ধ বাংলাদেশের পণ্য আমদানি, বিপাকে 1200 শ্রমিক