ETV Bharat / state

ব্লু লাইনে আজ থেকে চিনা রেক MR-513, যাত্রী সুরক্ষার দিকে বিশেষ নজর - KOLKATA METRO RAIL

CHINESE RAKE IN KOLKATA METRO: দীর্ঘ পরীক্ষা নিরীক্ষার পর কলকাতা মেট্রোর ব্লু লাইনে যাত্রা শুরু করল দ্বিতীয় চিনা রেক ৷ কলকাতা মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের দাবি, এই বিশেষ রেকে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য বেশি রয়েছে ৷

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Aug 5, 2024, 8:04 PM IST

Kolkata Metro
ব্লু লাইনে চিনা রেক (নিজস্ব ছবি)

কলকাতা, 5 অগস্ট: দীর্ঘ সময় ধরে ধাপে ধাপে একাধিক পরীক্ষা নিরীক্ষা হওয়ার পর অবশেষে যাত্রী নিয়ে ছুটল কলকাতা মেট্রোরেল নেটওয়ার্কের দ্বিতীয় চিনা রেক । আজ সোমবার থেকে শুরু হল (মেট্রো রেল) MR-513 পরিষেবা । সপ্তাহের প্রথম দিন অর্থাৎ আজ থেকেই কলকাতা মেট্রোরেলের নর্থ সাউথ লাইনে শুরু হল কলকাতা মেট্রোর দ্বিতীয় ডালিয়ান রেকের যাত্রী পরিষেবা । দমদম স্টেশন থেকে শুরু হয়ে কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে দৌড়ল এই রেকটি ।

চিনের ডালিয়ান শহর থেকে জাহাজে চেপে এই দেশে আসার পর কেটে গিয়েছে প্রায় চার বছর । পাশ করতে হয়েছে অনেক রকম পরীক্ষা । চলেছে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষামূলক দৌড় । বিভিন্ন রকম সংস্কার করা হয়েছে রেকে । আর তারই মধ্যে বিশ্বে দেখা দিয়েছিল করোনা অতিমারি । তাই তখন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল কাজ । তারপর ফের ট্রায়াল রান এবং সংস্কার চলেছে । সেই সব পার করে অবশেষে প্রথম ডালিয়ান রেক MR-501-তে গতবছর যাত্রী পরিষেবার চালু করা হয় । এরপর আবার আজ দ্বিতীয় ডালিয়ান রেকটিকে কমার্শিয়াল রানের জন্য চালু করা হল ।

আজ বেলা 12টা 06 মিনিটে এই রেকটি দমদম স্টেশন থেকে তার প্রথম যাত্রা শুরু করে । এরপর ট্রেনটি 12টা 55 মিনিটে কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশনে পৌঁছয় । পুনরায় ঠিক বেলা 1টার সময় কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে 1টা 49 মিনিটে দমদম পৌঁছয় ।

সাধারণত নর্থ সাউথ করিডোরে গাড়ির গতি প্রতি ঘণ্টায় 55 কিলোমিটার । তবে ডালিয়ানের ক্ষেত্রে সেই গতি হল 60 কিলোমিটার । পাশাপাশি যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য এবং সুরক্ষার দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে । এই রেকের দরজা অন্যান্য রেকগুলির তুলনায় অনেকটাই চওড়া । এই রেকের দরজাগুলি চওড়ায় প্রায় 100 মিলিমিটার । এর ফলে দিনের ব্যস্ত সময় প্রবেশ করা এবং বেরোবার সময় যাত্রীদের সমস্যা হবে অনেক কম । অনন্যা এসি রেকগুলির তুলনায় এই কোচগুলি অনেক বেশি চওড়া ৷ বসার আসনে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে । এছাড়াও প্রতিটি কোচের সামনে এবং পিছনে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা । অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থাও অনেক বেশি উন্নত । চলার সময় অনেক কম আওয়াজ হবে । এমনটাই দাবি কলকাতা মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের ।

এছাড়াও বিশেষভাবে সক্ষম ও বয়স্ক যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে এই রেকটি প্রস্তুত করা হয়েছে । কোচের মধ্যে উইল চেয়ার রাখারও জায়গা রয়েছে । যাত্রীদের বাড়তি সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে এখানে ডিস্ক ব্রেক ব্যবস্থা রয়েছে । জরুরি পরিস্থিতিতে বেরোবার দরজা অনেক বেশি চওড়া এবং ইবাকুয়েশন রাম্প করা হয়েছে । যাত্রীরা যাতে কোচে পড়ে না যান সেই জন্য এন্টি স্কিড ফ্লোরিং ব্যবস্থা করা হয়েছে ।

প্রসঙ্গত, গ্লোবাল টেন্ডারের মাধ্যমে 2019 সালে চিনের ডালিয়ান শহর থেকে জাহাজে করে আসে একটি প্রোটোটাইপ মেট্রো রেক । তবে তারপর কয়েকবার পরীক্ষা হয়েছিল রেকটির । নতুন রেকটিকে যাত্রী পরিষেবার উপযোগী করে তুলতে একগুচ্ছ পরীক্ষা করা হয় । তাই সেই মতোই 2019 সাল থেকে ধাপে ধাপে শুরু হয় পরীক্ষা নিরীক্ষা । পাশাপাশি চলতে থেকে চেক রানও । তবে 2020 সালে পরীক্ষামূলক দৌড় শুরু হলেও লকডাউনের জন্য সেই কাজে ব্যাঘাত ঘটে । সেই সময় রেকটিতে কিছু যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা যায় । তাই পরীক্ষা অসম্পূর্ণ রেখেই চিনা সংস্থার আধিকারিকদের ফিরে যেতে হয়ে দেশে । তারপর কেটে গিয়েছে একটা লম্বা সময় । রেকটি পরীক্ষা বা ট্রায়াল রান করা সম্ভব হয়নি ।

এরপর করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে রিসোর্ট ডিজাইন এন্ড স্ট্যান্ডার্ড অর্গানাইজেশন (RDSO) আধিকারিকরা, মেট্রোরেলের আধিকারিক এবং চিনা সংস্কার আধিকারিকরা শহরে এসে আবার পরীক্ষা শুরু করেন । মেট্রোর যাত্রী পরিষেবা শেষ হওয়ার পরে রাতের দিকে নিয়মিত চলতে থাকে পরীক্ষামূলক দৌড় । ধাপে ধাপে শুরু হবে অসিলিয়েশান পরীক্ষাও । কোচের অসিলিয়েশান পরীক্ষার জন্য শেষ যে পরীক্ষাটি বাকি ছিল তা হল বালির বস্তা নিয়ে চেক রান । সম্প্রতি সেই পরীক্ষাও শেষ হয়েছে । কলকাতা মেট্রোরেলের নন এসি রেকগুলি বাতিল করে তার পরিবর্তে ঝাঁ চকচকে অত্যাধুনিক রেকের অর্ডার দেওয়া হয় ডালিয়ান রেকের । 2015 সালে মেট্রোরেল চিনের ডালিয়ানে অবস্থিত CRRC সংস্থাকে 14টি রেকের অর্ডার দেয় । এই রেকগুলি সবকটাই 8 কোচের । এর মধ্যে 2019 সালে একটি রেক আসে ।

কলকাতা, 5 অগস্ট: দীর্ঘ সময় ধরে ধাপে ধাপে একাধিক পরীক্ষা নিরীক্ষা হওয়ার পর অবশেষে যাত্রী নিয়ে ছুটল কলকাতা মেট্রোরেল নেটওয়ার্কের দ্বিতীয় চিনা রেক । আজ সোমবার থেকে শুরু হল (মেট্রো রেল) MR-513 পরিষেবা । সপ্তাহের প্রথম দিন অর্থাৎ আজ থেকেই কলকাতা মেট্রোরেলের নর্থ সাউথ লাইনে শুরু হল কলকাতা মেট্রোর দ্বিতীয় ডালিয়ান রেকের যাত্রী পরিষেবা । দমদম স্টেশন থেকে শুরু হয়ে কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে দৌড়ল এই রেকটি ।

চিনের ডালিয়ান শহর থেকে জাহাজে চেপে এই দেশে আসার পর কেটে গিয়েছে প্রায় চার বছর । পাশ করতে হয়েছে অনেক রকম পরীক্ষা । চলেছে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষামূলক দৌড় । বিভিন্ন রকম সংস্কার করা হয়েছে রেকে । আর তারই মধ্যে বিশ্বে দেখা দিয়েছিল করোনা অতিমারি । তাই তখন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল কাজ । তারপর ফের ট্রায়াল রান এবং সংস্কার চলেছে । সেই সব পার করে অবশেষে প্রথম ডালিয়ান রেক MR-501-তে গতবছর যাত্রী পরিষেবার চালু করা হয় । এরপর আবার আজ দ্বিতীয় ডালিয়ান রেকটিকে কমার্শিয়াল রানের জন্য চালু করা হল ।

আজ বেলা 12টা 06 মিনিটে এই রেকটি দমদম স্টেশন থেকে তার প্রথম যাত্রা শুরু করে । এরপর ট্রেনটি 12টা 55 মিনিটে কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশনে পৌঁছয় । পুনরায় ঠিক বেলা 1টার সময় কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে 1টা 49 মিনিটে দমদম পৌঁছয় ।

সাধারণত নর্থ সাউথ করিডোরে গাড়ির গতি প্রতি ঘণ্টায় 55 কিলোমিটার । তবে ডালিয়ানের ক্ষেত্রে সেই গতি হল 60 কিলোমিটার । পাশাপাশি যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য এবং সুরক্ষার দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে । এই রেকের দরজা অন্যান্য রেকগুলির তুলনায় অনেকটাই চওড়া । এই রেকের দরজাগুলি চওড়ায় প্রায় 100 মিলিমিটার । এর ফলে দিনের ব্যস্ত সময় প্রবেশ করা এবং বেরোবার সময় যাত্রীদের সমস্যা হবে অনেক কম । অনন্যা এসি রেকগুলির তুলনায় এই কোচগুলি অনেক বেশি চওড়া ৷ বসার আসনে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে । এছাড়াও প্রতিটি কোচের সামনে এবং পিছনে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা । অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থাও অনেক বেশি উন্নত । চলার সময় অনেক কম আওয়াজ হবে । এমনটাই দাবি কলকাতা মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের ।

এছাড়াও বিশেষভাবে সক্ষম ও বয়স্ক যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে এই রেকটি প্রস্তুত করা হয়েছে । কোচের মধ্যে উইল চেয়ার রাখারও জায়গা রয়েছে । যাত্রীদের বাড়তি সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে এখানে ডিস্ক ব্রেক ব্যবস্থা রয়েছে । জরুরি পরিস্থিতিতে বেরোবার দরজা অনেক বেশি চওড়া এবং ইবাকুয়েশন রাম্প করা হয়েছে । যাত্রীরা যাতে কোচে পড়ে না যান সেই জন্য এন্টি স্কিড ফ্লোরিং ব্যবস্থা করা হয়েছে ।

প্রসঙ্গত, গ্লোবাল টেন্ডারের মাধ্যমে 2019 সালে চিনের ডালিয়ান শহর থেকে জাহাজে করে আসে একটি প্রোটোটাইপ মেট্রো রেক । তবে তারপর কয়েকবার পরীক্ষা হয়েছিল রেকটির । নতুন রেকটিকে যাত্রী পরিষেবার উপযোগী করে তুলতে একগুচ্ছ পরীক্ষা করা হয় । তাই সেই মতোই 2019 সাল থেকে ধাপে ধাপে শুরু হয় পরীক্ষা নিরীক্ষা । পাশাপাশি চলতে থেকে চেক রানও । তবে 2020 সালে পরীক্ষামূলক দৌড় শুরু হলেও লকডাউনের জন্য সেই কাজে ব্যাঘাত ঘটে । সেই সময় রেকটিতে কিছু যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা যায় । তাই পরীক্ষা অসম্পূর্ণ রেখেই চিনা সংস্থার আধিকারিকদের ফিরে যেতে হয়ে দেশে । তারপর কেটে গিয়েছে একটা লম্বা সময় । রেকটি পরীক্ষা বা ট্রায়াল রান করা সম্ভব হয়নি ।

এরপর করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে রিসোর্ট ডিজাইন এন্ড স্ট্যান্ডার্ড অর্গানাইজেশন (RDSO) আধিকারিকরা, মেট্রোরেলের আধিকারিক এবং চিনা সংস্কার আধিকারিকরা শহরে এসে আবার পরীক্ষা শুরু করেন । মেট্রোর যাত্রী পরিষেবা শেষ হওয়ার পরে রাতের দিকে নিয়মিত চলতে থাকে পরীক্ষামূলক দৌড় । ধাপে ধাপে শুরু হবে অসিলিয়েশান পরীক্ষাও । কোচের অসিলিয়েশান পরীক্ষার জন্য শেষ যে পরীক্ষাটি বাকি ছিল তা হল বালির বস্তা নিয়ে চেক রান । সম্প্রতি সেই পরীক্ষাও শেষ হয়েছে । কলকাতা মেট্রোরেলের নন এসি রেকগুলি বাতিল করে তার পরিবর্তে ঝাঁ চকচকে অত্যাধুনিক রেকের অর্ডার দেওয়া হয় ডালিয়ান রেকের । 2015 সালে মেট্রোরেল চিনের ডালিয়ানে অবস্থিত CRRC সংস্থাকে 14টি রেকের অর্ডার দেয় । এই রেকগুলি সবকটাই 8 কোচের । এর মধ্যে 2019 সালে একটি রেক আসে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.