ETV Bharat / state

কালিয়াচকে অপহৃত শিশু উদ্ধার বিহারে, ভিখারির বেশে টার্গেট করছে পাচারকারীরা ! - MALDA CHILD KIDNAP

দাদুর বাড়িতে এসে 28 মার্চ অপহৃত হয় তিন বছরের শিশুটি ৷ বিহারের একটি গ্রাম থেকে তাকে উদ্ধার করে আনে পুলিশ ৷

child kidnapping case
বিহার থেকে উদ্ধার অপহৃত শিশু (প্রতীকী ছবি)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : April 7, 2025 at 7:01 PM IST

4 Min Read

মালদা, 7 এপ্রিল: ঈদের আগে কালিয়াচকের গ্রাম থেকে অপহৃত হয় তিন বছরের শিশু ৷ সে উদ্ধার হল বিহার থেকে ৷ ভিক্ষুকের বেশধারী শিশু পাচারকারীদের নিশানায় কি মালদা ? উঠছে প্রশ্ন ৷

বিয়ের সাড়ে চার বছর পর এবার ঈদ উপলক্ষে তিন বছরের ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে এসেছিলেন ফতেমা বিবি (নাম পরিবর্তিত) ৷ এবার বাবার বাড়িতে সবার সঙ্গে ঈদের খুশি উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেন তিনি ৷ কিন্তু খুশি আতঙ্কে পরিণত হয় ঈদের তিনদিন আগে ৷ 28 মার্চ দাদুর বাড়ির পাশের মাঠে খেলছিল তিন বছর বয়সি আফান শেখ ৷ সেখান থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে যায় সে ৷ চারদিকে খোঁজখবর চালিয়ে ব্যর্থ হয় সবাই ৷

সেই রাতেই শিশুটির দাদু আফতাব (নাম পরিবর্তিত) স্থানীয় থানায় গোটা ঘটনা জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ৷ তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ ৷ অবশেষে বিহারের একটি গ্রাম থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে আনেন পুলিশ আধিকারিকরা ৷ এরপরেই কালিয়াচকের এই ঘটনায় জেলা জুড়ে প্রশ্ন উঠছে, তবে কি ভিনরাজ্যের শিশু অপহরণকারীদের নজর এবার মালদা জেলায় ?

ঘটনাস্থল কালিয়াচক থানার শেরশাহী গ্রাম ৷ এই গ্রামের রন্নুচকের বাসিন্দা আফতাব এলাকায় বড় ব্যবসায়ী হিসাবে পরিচিত ৷ তাঁর মেয়ে ফতেমার বিয়ে হয়েছে কালিয়াচকেরই শাহবাজপুর সংলগ্ন বামুনটোলা গ্রামে ৷ বিয়ের পর আর ঈদে বাবার বাড়িতে আসতে পারেননি ফতেমা ৷ এবার সেই সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি ৷

কী হয়েছিল 28 মার্চ?

আফতাব বলেন, "সেদিন বাড়ির পাশের মাঠে নাতি খেলা করছিল ৷ হঠাৎ খবর পাই, নাতিকে মাঠে দেখা যাচ্ছে না ৷ আমরা সবাই দৌড়ে মাঠে যাই ৷ নাতিকে কোথাও খুঁজে পাইনি ৷ চারদিকে খোঁজখবর নিয়েও বাচ্চার কোনও সন্ধান মেলেনি ৷ এরপর আমরা রাস্তার ধারে থাকা একাধিক বাড়িতে লাগানো সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখি ৷ সেখানেই দেখতে পাই, তিন মহিলা কোলে বাচ্চা নিয়ে যাচ্ছে ৷ ওদের সঙ্গে আমার নাতিও হাঁটতে হাঁটতে যাচ্ছে ৷ এক মহিলা ওর হাত ধরে রেখেছে ৷"

তিনি আরও বলেন, "এই মহিলারা পেশায় ভিখারি ৷ এদের মাঝেমধ্যেই এলাকায় দেখা যায় ৷ সারাদিন ভিক্ষা করে এলাকারই একটি বাড়িতে এরা রাত কাটাচ্ছিল ৷ ওই বাড়ি গিয়ে আমরা এই মহিলাদের বিষয়ে খোঁজ করি ৷ জানা যায়, এদের বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুরের বিহার সংলগ্ন মিলনগড় এলাকায় ৷ এরপরেই আমরা কালিয়াচক থানায় অপহরণের লিখিত অভিযোগ দায়ের করি ৷"

এদিকে অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নামে কালিয়াচক থানার পুলিশ ৷ সেখানে একজন মহিলা ভিখারির সন্ধান পান পুলিশকর্মীরা ৷ পুলিশি জেরার মুখে ওই মহিলা স্বীকার করে নেন, তাঁর এক বউদি বিহারের জোলাই হাট বীরপুর থেকে ভিক্ষা করতে কালিয়াচক গিয়েছিলেন ৷ তিনিই বাচ্চাটিকে নিয়ে এসেছিলেন ৷ বাচ্চাকে তিনি বিহারে নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়েছেন ৷

ওই মহিলার বাড়ি থেকে পুলিশ বিহারের ওই মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ করে ৷ তাঁকে ভিডিয়ো কল করা হয় ৷ পুলিশের চাপে ওই মহিলা তিন বছর বয়সি শিশুটিকে ভিডিয়ো কলে নিয়ে আসতে বাধ্য হন ৷ তিনি শিশুটিকে ফিরিয়ে দেবেন বলে জানান ৷ তবে তাঁর শর্ত ছিল, পুলিশ তাঁর বাড়িতে আসতে পারবে না ৷ বাচ্চার পরিবার জোলাই হাট বীরপুরে এলে তিনি শিশুটিকে তাঁদের হাতে তুলে দেবেন ৷ সেই মতো আফতাব ও তাঁর পরিবারের কয়েকজন 5 এপ্রিল জোলাই হাট বীরপুরে যান ৷ তাঁদের হাতে শিশুটিকে তুলে দেন ওই মহিলার প্রতিনিধি ৷

ছেলেকে ফিরে পেয়ে মা বলেন, "ছেলে কোলে ফিরে এসেছে ৷ আমি আর কিছু চাই না ৷ তবে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলব ৷"

এই নিয়ে এসডিপিও (কালিয়াচক) ফায়সাল রাজা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, "অপহৃত বাচ্চাটিকে বিহার থেকে উদ্ধার করা গিয়েছে ৷ এনিয়ে মামলা জারি রয়েছে ৷ অপহরণকারী ওই মহিলাকে পেতে বিহার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে ৷"

মালদা, 7 এপ্রিল: ঈদের আগে কালিয়াচকের গ্রাম থেকে অপহৃত হয় তিন বছরের শিশু ৷ সে উদ্ধার হল বিহার থেকে ৷ ভিক্ষুকের বেশধারী শিশু পাচারকারীদের নিশানায় কি মালদা ? উঠছে প্রশ্ন ৷

বিয়ের সাড়ে চার বছর পর এবার ঈদ উপলক্ষে তিন বছরের ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে এসেছিলেন ফতেমা বিবি (নাম পরিবর্তিত) ৷ এবার বাবার বাড়িতে সবার সঙ্গে ঈদের খুশি উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেন তিনি ৷ কিন্তু খুশি আতঙ্কে পরিণত হয় ঈদের তিনদিন আগে ৷ 28 মার্চ দাদুর বাড়ির পাশের মাঠে খেলছিল তিন বছর বয়সি আফান শেখ ৷ সেখান থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে যায় সে ৷ চারদিকে খোঁজখবর চালিয়ে ব্যর্থ হয় সবাই ৷

সেই রাতেই শিশুটির দাদু আফতাব (নাম পরিবর্তিত) স্থানীয় থানায় গোটা ঘটনা জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ৷ তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ ৷ অবশেষে বিহারের একটি গ্রাম থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে আনেন পুলিশ আধিকারিকরা ৷ এরপরেই কালিয়াচকের এই ঘটনায় জেলা জুড়ে প্রশ্ন উঠছে, তবে কি ভিনরাজ্যের শিশু অপহরণকারীদের নজর এবার মালদা জেলায় ?

ঘটনাস্থল কালিয়াচক থানার শেরশাহী গ্রাম ৷ এই গ্রামের রন্নুচকের বাসিন্দা আফতাব এলাকায় বড় ব্যবসায়ী হিসাবে পরিচিত ৷ তাঁর মেয়ে ফতেমার বিয়ে হয়েছে কালিয়াচকেরই শাহবাজপুর সংলগ্ন বামুনটোলা গ্রামে ৷ বিয়ের পর আর ঈদে বাবার বাড়িতে আসতে পারেননি ফতেমা ৷ এবার সেই সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি ৷

কী হয়েছিল 28 মার্চ?

আফতাব বলেন, "সেদিন বাড়ির পাশের মাঠে নাতি খেলা করছিল ৷ হঠাৎ খবর পাই, নাতিকে মাঠে দেখা যাচ্ছে না ৷ আমরা সবাই দৌড়ে মাঠে যাই ৷ নাতিকে কোথাও খুঁজে পাইনি ৷ চারদিকে খোঁজখবর নিয়েও বাচ্চার কোনও সন্ধান মেলেনি ৷ এরপর আমরা রাস্তার ধারে থাকা একাধিক বাড়িতে লাগানো সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখি ৷ সেখানেই দেখতে পাই, তিন মহিলা কোলে বাচ্চা নিয়ে যাচ্ছে ৷ ওদের সঙ্গে আমার নাতিও হাঁটতে হাঁটতে যাচ্ছে ৷ এক মহিলা ওর হাত ধরে রেখেছে ৷"

তিনি আরও বলেন, "এই মহিলারা পেশায় ভিখারি ৷ এদের মাঝেমধ্যেই এলাকায় দেখা যায় ৷ সারাদিন ভিক্ষা করে এলাকারই একটি বাড়িতে এরা রাত কাটাচ্ছিল ৷ ওই বাড়ি গিয়ে আমরা এই মহিলাদের বিষয়ে খোঁজ করি ৷ জানা যায়, এদের বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুরের বিহার সংলগ্ন মিলনগড় এলাকায় ৷ এরপরেই আমরা কালিয়াচক থানায় অপহরণের লিখিত অভিযোগ দায়ের করি ৷"

এদিকে অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নামে কালিয়াচক থানার পুলিশ ৷ সেখানে একজন মহিলা ভিখারির সন্ধান পান পুলিশকর্মীরা ৷ পুলিশি জেরার মুখে ওই মহিলা স্বীকার করে নেন, তাঁর এক বউদি বিহারের জোলাই হাট বীরপুর থেকে ভিক্ষা করতে কালিয়াচক গিয়েছিলেন ৷ তিনিই বাচ্চাটিকে নিয়ে এসেছিলেন ৷ বাচ্চাকে তিনি বিহারে নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়েছেন ৷

ওই মহিলার বাড়ি থেকে পুলিশ বিহারের ওই মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ করে ৷ তাঁকে ভিডিয়ো কল করা হয় ৷ পুলিশের চাপে ওই মহিলা তিন বছর বয়সি শিশুটিকে ভিডিয়ো কলে নিয়ে আসতে বাধ্য হন ৷ তিনি শিশুটিকে ফিরিয়ে দেবেন বলে জানান ৷ তবে তাঁর শর্ত ছিল, পুলিশ তাঁর বাড়িতে আসতে পারবে না ৷ বাচ্চার পরিবার জোলাই হাট বীরপুরে এলে তিনি শিশুটিকে তাঁদের হাতে তুলে দেবেন ৷ সেই মতো আফতাব ও তাঁর পরিবারের কয়েকজন 5 এপ্রিল জোলাই হাট বীরপুরে যান ৷ তাঁদের হাতে শিশুটিকে তুলে দেন ওই মহিলার প্রতিনিধি ৷

ছেলেকে ফিরে পেয়ে মা বলেন, "ছেলে কোলে ফিরে এসেছে ৷ আমি আর কিছু চাই না ৷ তবে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলব ৷"

এই নিয়ে এসডিপিও (কালিয়াচক) ফায়সাল রাজা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, "অপহৃত বাচ্চাটিকে বিহার থেকে উদ্ধার করা গিয়েছে ৷ এনিয়ে মামলা জারি রয়েছে ৷ অপহরণকারী ওই মহিলাকে পেতে বিহার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.