কলকাতা, 17 এপ্রিল: চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এদিন সুপ্রিম কোর্টের তরফে সাময়িক স্বস্তি মিলেছে । আর তার পরপরই নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাস, এই সমস্যার নিষ্পত্তি আগামী বছরের ঘাড়ে চাপবে না ৷ এ বছরই সবকিছু মিটে যাবে । মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, "ছাব্বিশ নয়, পঁচিশের মধ্যেই হবে সমস্যার সমাধান ।"
সুপ্রিম কোর্টে শুনানিতে এদিন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির যেসব শিক্ষক 'দাগি' বা 'অযোগ্য' নন, তাঁরা স্কুলে যেতে পারবেন । একইসঙ্গে রাজ্যকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আগামী 31 মে'র মধ্যে নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে এবং ওই তারিখের মধ্যেই হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে, চলতি বছরের মধ্যে অর্থাৎ 31 ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হবে । অন্যথায়, এই ছাড় প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে শীর্ষ আদালতের তরফে ।
এই নির্দেশের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী এদিন সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন, "আমাদের আইনি টিম ব্রিফ করেছে যে, আমরা ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় পেয়েছি । এটা একটা বড় স্বস্তি । আগে বলা হয়েছিল, বেতন দেওয়া যাবে না । তাই আমরা বিকল্প ভাবছিলাম । কিন্তু আজ সুপ্রিম কোর্ট আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়েছে । আমি খুশি ।"
তিনি আরও বলেন, "মানুষের কাজে আমি ভুল করি না । নিজের কথা বলার সময় হয়তো ভুল হয়, কারণ আমি এলিট ক্লাস থেকে আসিনি । আমি ভালো হিন্দি জানি না, তাই হিন্দি বলতে গেলে দু-একটা ভুল হয় । কিন্তু আমি দায়িত্বে কোনও ফাঁক রাখি না ।" চাকরি হারানো শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, "চিন্তা করবেন না । আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি । মন দিয়ে কাজ করুন । আইন যা বলবে আমরা তাই করব ।"
যদিও গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি সরাসরি উত্তর না-দিয়ে আজ বলেন, "আইনজীবীরা ফিরুক, তারপর ব্রাত্যর সঙ্গে কথা বলে এবং আইন দেখে তবেই সিদ্ধান্ত নেব ।" উল্লেখ্য, গ্রুপ-সি ও ডি কর্মীদের ক্ষেত্রে এদিন চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধি করেনি সুপ্রিম কোর্ট ৷ ফলে 2016 সালের প্যানেলে যোগ্য ও অযোগ্য সব গ্রুপ সি ও ডি কর্মীরাই আপাতত চাকরি হারালেন ৷
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এদিনের ঘোষণার পর রাজনৈতিক মহল মনে করছে, চাকরিহারা শিক্ষকদের পুনর্বহাল করা নিয়ে তৎপর রাজ্য সরকার । নির্বাচনের বছরে এই সমস্যা মিটিয়ে শিক্ষকদের পাশে পেতে চাইছে শাসকদল ৷