কলকাতা, 6 ফেব্রুয়ারি: আরজি কর-কাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি সংক্রান্ত মামলা গ্রহণ করবে কলকাতা হাইকোর্ট ? উত্তর জানা যাবে শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ ৷ শিয়ালদা আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য ও সিবিআইয়ের আবেদন সংক্রান্ত মামলার রায় ঘোষণা হবে হাইকোর্টে। বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি শব্বার রাশিদির ডিভিশন বেঞ্চ এই আপিল আদৌ গ্রহণ করবে কিনা, তাও জানা যাবে । গত 27 জানুয়ারি সঞ্জয় রায়ের ফাঁসির আর্জি সংক্রান্ত রাজ্য ও সিবিআইয়ের আবেদন মামলায় শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রেখেছিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ।
মামলায় সওয়াল করতে গিয়ে উভয়পক্ষের বক্তব্য :
রাজ্যের এজি কিশোর দত্ত : দিল্লি পুলিশ এস্টাবলিসমেন্ট অ্যাক্টের 417-এর (2) ধারা অনুযায়ী রাজ্যও আপিল জানাতে পারে ৷ এই ধরনের অপরাধে যদি আসামীকে বেকসুর খালাস করার নির্দেশ দেওয়া হয় তাহলে এই আপিল করা যায়। অথবা নিম্ন আদালত যে শাস্তির নির্দেশ দিয়েছে সেটা যদি উপযুক্ত না মনে হয় তাহলেও এটি করা যেতে পারে ।
বিচারপতি দেবাংশু বসাক : বিএনএসএস (BNSS)-এর 418 ধারা অনুয়ায়ী কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা যদি আপিল না করে একমাত্র তখনই তদন্তের অগ্রগতির স্বার্থে রাজ্য আপিল করতে পারে ।
রাজ্যের এজি কিশোর দত্ত : সিবিআইকে বিশেষ ক্ষেত্রে তদন্তের অধিকার দেওয়া মানেই রাজ্যের অধিকার উবে যায় না । আইন অনুযায়ী পিপির (পাবলিক প্রসিকিউটরের) অধিকার আছে আবেদন করার ।"
সিবিআইয়ের তরফে (অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল) এস ভি রাজু : মামলার সমস্ত রেকর্ড, কেস ডায়েরি সব কিছু সিবিআইয়ের হাতে । 13 অগস্ট কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতা পুলিশের হাত থেকে তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে হস্তান্তর করেছিল । সিবিআই 7 অক্টোবর চার্জশিট পেশ করে। 18 জানুয়ারি নিম্ন আদালত রায় ঘোষণায় দোষী সাব্যস্ত করে সঞ্জয় রায়কে । এই মামলায় যুক্ত হতে চেয়ে নিম্ন আদালতে রাজ্য কোনও আবেদন পর্যন্ত করেনি । রাজ্য সিবিআইকে সহযোগিতা করারও কোনও চেষ্টা করেনি। এই ধরনের মামলায় রাজ্যের আবেদনের এক্তিয়ারই নেই ।
সিবিআইয়ের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বিচারপতি বসাকের প্রশ্ন : যদি সিবিআই কোনও আবেদন না করে, তাহলে রাজ্যের কি অধিকার নেই আপিল করার ?
কেন্দ্রের আইনজীবী : আবেদন করার এক্তিয়ার নেই ।
শুনানির পর রায়দান স্থগিত রাখে ডিভিশন বেঞ্চ । উল্লেখ্য, আরজি করে পড়ুয়া চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় শিয়ালদা আদালতে অতিরিক্ত দায়রা বিচারক অনির্বাণ দাস সঞ্জয় রায়ের আমৃত্যু কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছিলেন । বিচারকের যুক্তি ছিল, এটা বিরলের মধ্যে বিরলতম অপরাধ নয় । তারপরই রাজ্যের তরফে সঞ্জয়ের ফাঁসির দাবিতে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। পরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইও সেই আবেদন করে । তাতেই রায় ঘোষণা হবে শুক্রবার ৷