কলকাতা, 26 মার্চ: তৃণমূলের শিক্ষক নেতা সিরাজুল ইসলামকে চাকরি থেকে আজই বরখাস্ত করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । বুধবার আদালতের তরফে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷
এদিন এই নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা ও বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তার ডিভিশন বেঞ্চ ৷ ওই নির্দেশে আরও বলা হয়েছে, চাকরি সংক্রান্ত যে সমস্ত সুযোগ সুবিধা পান সিরাজুল ইসলাম, তাও বাতিল করতে হবে ৷
উল্লেখ্য, সিরাজুল ইসলাম হাওড়ার শিবপুর স্কুলের জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষক ৷ সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি দুর্নীতি করে চাকরি পেয়েছেন ৷ এই নিয়ে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে ৷ আদালত তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেয় ৷ সেই নির্দেশ হাইকোর্ট দিয়েছিল 2010 সালের 10 জানুয়ারি ৷

অভিযোগ, তার পরও তিনি চাকরি করে যাচ্ছেন ৷ বরং তৃণমূল জমানায় তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপত্তি বেড়েছে ৷ এখন তিনি মাধ্যমিক স্তরে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের একজন নেতা ৷ তাঁর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগও ওঠে ৷ তার পরও তিনি চাকরিতে বহাল ছিলেন বলে অভিযোগ ৷
এই পরিস্থিতিতে ফের কলকাতা হাইকোর্টে সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয় ৷ কয়েকদিন আগেই হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দেন । ওই এফআইআরের প্রভাব যাতে চাকরিতে না পড়ে, তার জন্য সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন সিরাজুল ইসলাম । সেই আবেদনের শুনানি এদিন হয় হাইকোর্টের বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা ও বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তার ডিভিশন বেঞ্চে ৷
মামলাকারীর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, "বর্তমানে তিনি (সিরাজুল) রাজ্যের তৃণমূল মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক সংগঠনের দায়িত্বে রয়েছেন । এহেন অভিযুক্তকেই জেলা শিক্ষা দফতরের বিশেষ পদে কীভাবে নিয়োগ করা হল । এই ধরনের লোককে কখনোই চাকরিতে বহাল রাখা যায় না ।" যদিও সিরাজুল ইসলামের আইনজীবী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য বলেন, "তাঁকে মামলায় যুক্ত না করে, তাঁর বক্তব্য না শুনেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।"
যদিও শুনানিতে বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার পর্যবেক্ষণ কোনোভাবেই চাকরিতে রাখা যায় না সিরাজুল ইসলামকে । তিনি বলেন, "তিনি একজন দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি । তাঁকে চাকরিতে বহাল রাখা যায় না । ওই শিক্ষকের নিয়োগ সম্পূর্ণ বেআইনি । তাই আজ থেকে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হল ।"
পাশাপাশি সিরাজুল ইসলামের চাকরি সংক্রান্ত সমস্ত সুযোগ সুবিধাও বাতিল করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট ৷ আর সিরাজুলকে বরখাস্ত করার জন্য যে শূন্যপদ তৈরি হবে, সেই পদে নতুন করে নিয়োগের নির্দেশও স্কুল সার্ভিস কমিশনকে দিয়েছে আদালত ৷