সুন্দরবন ও কলকাতা, 16 মার্চ: আন্তর্জাতিক সীমান্তে কাঁটাতার নেই এমন এলাকা দিয়ে ভারতে প্রবেশ করছে বাংলাদেশিরা। কখনও আবার এখানে এসে এই বাংলার কৃষকদের ফসলও কেটে নিয়ে যাচ্ছে। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের এই ধরনের নানা অভিযোগ থেকে শুরু করে চোরাকারবার নিয়ে নাজেহাল বিএসএফ। পরিস্থিতির মোকাবিলায় নজরদারিতে জোর দিলেন বিএসএফের ডিজি দলজিৎ সিং চৌধুরি। সম্প্রতি সুন্দরবনের সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করে পরিস্থিতি মোকাবিলায় অত্যাধুনিক যন্ত্র এবং অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত 14 মার্চ দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের সুন্দরবন এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন বিএসএফের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অতিরিক্ত ডিজি রবি গান্ধি, দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের ইন্সপেক্টর জেনারেল করণি সিং সেখাওয়াত সহ-অন্য শীর্ষকর্তারা। তাঁদের সঙ্গে নিয়ে সুন্দরবনের সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নির্দেশও দিয়েছেন ডিজি।

সুন্দরবন সীমন্ত পরিদর্শনের পর রাজারহাটে বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের সদর দফতরে উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেই এই বৈঠকের আয়োজন হয়েছিল। বিভিন্ন ফ্রন্টে কী ধরনের সাফল্য মিলেছে তা নিয়ে বিস্তারিত চর্চা হয়। বৈঠকে দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের ইন্সপেক্টর জেনারেল করণি সিং সেখাওয়াত এই এলাকায় বাহিনীর প্রস্তুতি থেকে শুরু করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে ডিজিকে বিস্তারিত তথ্য দেন।

সূত্রের দাবি, অপরাধ দমন এবং অনুপ্রবেশ রোধে সুন্দরবন এলাকায় বিএসএফ যে পদ্ধতি অবলম্বন করছে সে সমস্ত খতিয়ে দেখেন ডিজি। নিরাপত্তা জোরদার করতে এবং অপরাধমূলক কার্যকলাপ বন্ধ করতে সতর্কতা বজায় রাখার নির্দেশও দিয়েছেন। অনুপ্রবেশ এবং অবৈধ কার্যকলাপের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে তিনি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং কৌশলের সর্বাধিক ব্যবহারেরও নির্দেশ দেন।

গত কয়েকমাস ধরে বাংলাদেশে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। গতবছর অগস্ট মাসে দেশ ছাড়েন মুজিব-তনয়া। সে দেশে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের ঘটনাও বাড়তে থাকে বলে অভিযোগ। হিন্দু-সহ অন্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে লাগাতার দাবি জানিয়ে আসছে ভারত। অন্যদিকে, অশান্তির আবহে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করার প্রবণতাও বেড়েছে অনেকটা। এই পরিস্থিতি বিএসএফের ভূমিকা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। সেই সূত্র ধরে এমন উত্তেজনার আবহে বিএসএফের ডিজির ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সুন্দরবন সফরও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।