কলকাতা, 8 এপ্রিল: 'সত্যমেব জয়তে'৷ সুপার নিউমেরারি পদ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর এটাই প্রতিক্রিয়া শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর । এদিকে, সুপ্রিম রায়ে চাকরি বাতিল প্রসঙ্গে এদিন তিনি জানিয়েছেন, এই রায়ের ফলে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের খাতা দেখার ক্ষেত্রে কোনও প্রভাব পড়বে না ৷ সংসদ সূত্রে খবর, যে সমস্ত চাকরিহারা শিক্ষকদের কাছে উচ্চমাধ্যমিকের খাতা রয়েছে, তাঁদেরকে খাতা ফেরত দিতে বলা হয়নি । ফলে তাঁদের খাতা দেখা বা না-দেখার বিষয়ে কিছু কথা হয়নি ।
সুপার নিউমেরারি পদ তৈরির সিদ্ধান্তে কলকাতা হাইকোর্ট যে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল, তা এদিন খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত ৷ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, সুপার নিউমেরারি পদ তৈরি অবৈধ নয় ৷ অতিরিক্ত পদ সৃষ্টি করা হয়েছিল অপেক্ষায় থাকা চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগের জন্য ৷ রাজ্য মন্ত্রিসভা যদি এমন সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে কেন্দ্রীয় এজেন্সি তাতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না ৷ এই রায়ের পর সদ্য চাকরিহারা শিক্ষকদের মধ্যে দেখা গিয়েছে অসন্তোষ । তবে সেই রায়ের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "প্রমাণ হল সত্যের জয় হয় ৷"
এদিকে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে 2016 সালের এসএসসি পরীক্ষার সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল হওয়ার পর চাকরি গিয়েছে প্রায় 26 হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর ৷ এরপরই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের খাতা কারা দেখবেন, এই নিয়ে প্রশ্ন ওঠে । চাকরি বাতিল হয়ে যাওয়া বহু শিক্ষকের কাছে রয়েছে উচ্চমাধ্যমিকের খাতা । তাই উচ্চমাধ্যমিক ও মাধ্যমিকের পরীক্ষার মূল্যায়নে এর প্রভাব পড়বে কি না সেই নিয়েও আশঙ্কা তৈরি হয় । এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, "মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফলের কোনও দেরি হবে না । আমার সঙ্গে ইতিমধ্যেই পর্ষদের কথা হয়েছে । আশা করছি, খুব শীঘ্রই তারা জানাতে পারবে ফলাফল কবে প্রকাশিত হবে । এর কোনও প্রভাব ওখানে পড়বে না ।"
অন্যদিকে, সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সেখানে মুখ্যমন্ত্রী সবাইকে স্বেচ্ছায় কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন । তিনি জোর দিয়ে বলেন, যোগ্যদের কোনওরকম সার্ভিসব্রেক ছাড়াই চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হবে ৷ তবে মুখ্যমন্ত্রীর থেকে আশ্বাস পাওয়ার পরেও মঙ্গলবার বহু শিক্ষকই কাজে যোগদান করেননি ।
সে বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী এদিন বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে যেটা বলেছেন সেটাকেই চূড়ান্ত হিসেবে ধরা উচিত । সেখানে একাংশ কী করছেন সেটা তাঁদের অভিরুচি । যে মানবিক সহমর্মিতা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখিয়েছেন, আমার মনে হয় সেখানে সকলের সাড়া দেওয়া উচিত । আমরা বলেছি, ওঁদের আইনত সর্বতভাবে সাহায্য করব । ওঁদের আইনি প্রতিরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব সর্বতভাবে এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের । তাই ওদের সঙ্গে তাঁরা বৈঠক করলেও করতে পারে ।"