শিলিগুড়ি, 3 জুন: পানীয় জলের ইস্যুতে পুরনিগমের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে মিলে গেল রাম - বাম । চারদিন ধরে পানীয় জল পরিষেবা সম্পূর্ণরকমভাবে বন্ধ রয়েছে পুরনিগম এলাকায় । পাহাড়জুড়ে মেঘভাঙা বৃষ্টির কারণে তিস্তার জল অতিরিক্ত ঘোলা হয়ে যাওয়ায় তা পরিশ্রুত করা সম্ভব হচ্ছে না । যে কারণে পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে শহরজুড়ে ৷ তাতেই মঙ্গলবার বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি ও সিপিএম ।
প্রথমে আলাদা আলাদা করে মিছিল করে এলেও পুরনিগমের সামনে এসে দুই দলকে পানীয় জলের ইস্যুতে একত্রে বিক্ষোভ দেখাতে দেখা যায় । এদিন সকালে প্রথমে পুরনিগমের বিরোধী দলনেতা অমিত জৈনের নেতৃত্বে বিজেপি কাউন্সিলর-সহ দলীয় কর্মী সমর্থকরা পুরনিগম ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় । এরপর বিক্ষোভ দেখায় সিপিএম এরিয়া কমিটি । দুই দলেরই কর্মী সমর্থকরা বালতি হাতে পুরনিগমে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায় ।
অন্যদিকে, পানীয় জল পরিষেবার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এদিন ফুলবাড়ি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট পরিদর্শনে যান মেয়র গৌতম দেব, ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার, মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত-সহ পুরনিগমের আধিকারিকরা । পানীয় জল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার পিছনে সিকিমে অপরিকল্পিতভাবে তৈরি বাঁধ ও মেঘভাঙা বৃষ্টির মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে দায়ী করেছেন মেয়র । তবে পানীয় জল পরিষেবা কবে স্বাভাবিক হবে সেই বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানাতে পারেননি মেয়র ।

বাম কাউন্সিলর শরদিন্দু চক্রবর্তী বলেন, "এর আগে কোনওদিন শহরে পানীয় জলের এমন সংকট তৈরি হয়নি । এই বোর্ড ক্ষমতায় আসার আগে জানিয়েছিল শহরে কোনওদিন পানীয় জলের সংকট হবে না ৷ কিন্তু এই তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত বোর্ড পানীয় জল দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ । অবিলম্বে মেয়রের পদত্যাগ করা উচিৎ ।"
বিরোধী দলনেতা অমিত জৈন বলেন, "ঠান্ডা ঘরে বসে সময় কাটাচ্ছে এই বোর্ডের সদস্যরা । আর এদিকে পানীয় জলের সংকটে মানুষ ভুগছে । এই পুরবোর্ড সম্পূর্ণ ব্যর্থ ।"

যদিও মেয়র গৌতম দেব বলেন, "নদীর জল অস্বাভাবিকভাবে ঘোলা আসছে । যে কারণে ফিল্টার করা সম্ভব হচ্ছে না ৷ প্রতিদিন শহরে 55 মিলিয়ন লিটার পানীয় জলের প্রয়োজন হয় । কিন্তু পরিশ্রুত করার পর মাত্র 22 মিলিয়ন লিটার পানীয় জল মিলছে । বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে পুরনিগমের 35টি ট্যাঙ্কার, জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের 25টি ট্যাঙ্কার বিভিন্ন ওয়ার্ডে জল সরবরাহ করছে । এছাড়াও দেড় লক্ষ পাউচ সরবরাহ করা হবে । বাম বিজেপি বিক্ষোভ দেখাচ্ছে । কিন্তু আমরা পরিস্থিতির মোকাবিলা করছি । প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে এই পরিস্থিতি ।"