ETV Bharat / state

বিশ্বভারতীর বাংলাদেশ ভবনে স্থগিত মুজিবের বায়োপিক দেখানোর পরিকল্পনা - Bangladesh Unrest

Visva Bharati Mujib's biopic: বাংলাদেশ সরকারের 40 কোটি টাকা ব্যায়ে বিশ্বভারতীতে তৈরি হয় আন্তর্জাতিক 'বাংলাদেশ ভবন'। সেখানেই মুজিবের বায়োপিক দেখানোর পরিকল্পনা ছিল বিশ্বভারতীর ৷ তবে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে আপাতত তা স্থগিত করল কর্তৃপক্ষ ৷

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Aug 5, 2024, 10:50 PM IST

Updated : Aug 5, 2024, 11:10 PM IST

Visva Bharati Mujib's biopic
স্থগিত মুজিবের বায়োপিক (নিজস্ব চিত্র)

বোলপুর, 5 অগস্ট: শেখ হাসিনার উদ্যোগে তৈরি বিশ্বভারতীর বাংলাদেশ ভবনে চলতি মাসেই 'মুজিব, দ্য মেকিং অফ নেশন' নামে বায়োপিক দেখানোর পাশাপাশি একাধিক কর্মসূচির কথা ছিল ৷ কিন্তু, বাংলাদেশ পরিস্থিতির জন্য তা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হল ৷ ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত কী হয়, সে দেশের বিদেশনীতিই বা কী হয়, সেদিকেই আপাতত তাকিয়ে বিশ্বভারতী।

স্থগিত মুজিবের বায়োপিক (ইটিভি ভারত)

এমনটাই সোমবার জানালেন বাংলাদেশ ভবনে মুখ্য সমন্বয়ক অধ্যাপক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়। বাংলাদেশ সরকারের অর্থানুকূল্যে 2018 সালে 25 মে শান্তিনিকেতনে তৈরি হয়েছিল বাংলাদেশ ভবন ৷ 1999 সালে শেখ হাসিনাকে বিশ্বভারতীর সর্বোচ্চ সম্মান 'দেশিকোত্তম' দেওয়া হয়েছিল ৷ কোটা আন্দোলনের জেরে উত্তাল বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়তে হয়েছে শেখ হাসিনাকে ৷ আন্দোলনকারীরা দখল নিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ৷ ওপার বাংলার উত্তাল পরিস্থিতির আঁচ পড়েছে এপার বাংলাতেও ৷

বাংলাদেশ সরকারের 40 কোটি টাকা ব্যায়ে বিশ্বভারতীর ইন্দিরা গান্ধি জাতীয় সংহতি কেন্দ্রের মাঠে 40 হাজার স্কোয়ার ফুট জায়গা জুড়ে তৈরি হয় আন্তর্জাতিক 'বাংলাদেশ ভবন'। 2018 সালের 25 মে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ভবনের উদ্বোধন করেন ৷ উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ভবনের নক্সা তৈরি করেছিলেন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই। পরে এই ভবন পরিচালনা জন্য বাংলাদেশ সরকারের তরফে 10 কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল ৷ চুক্তি হয়েছিল এই টাকা ব্যাঙ্কে ফিক্সড করে তার সুদের অঙ্ক দিয়ে বাংলাদেশ ভবন রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে ৷ আর ভবনের দায়িত্ব বিশ্বভারতীর। 1999 সালে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্বভারতীর সর্বোচ্চ সম্মান 'দেশিকোত্তম' দেওয়া হয়েছিল ৷ তাই গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন নিয়ে তাঁর আবেগ অনেকটাই বেশি ছিল।

এই বাংলাদেশ ভবনে রয়েছে, বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের মূর্তি-সহ মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন ছবি, ভাস্কর্য, তথ্য ৷ এছাড়া রয়েছে একটি গ্রন্থাগার, প্রেক্ষাগৃহ-সহ পড়াশোনার কক্ষ ৷ দুই বাংলার ইতিহাস থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও কাজী নজরুল ইসলামকে গবেষণা করার সুযোগ রয়েছে এই বাংলাদেশ ভবনে ৷ বাংলাদেশ ভবনের মুখ্য সমন্বয়ক তথা বিশ্বভারতীর বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় ইটিভি ভারতকে জানান, এই আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ ভবনে অনেকগুলো পরিকল্পনা ছিল ৷ যেমন- বাংলাদেশ ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, বাংলাদেশ নাটকের ফেস্টিভ্যাল। এছাড়া, এই অগস্ট মাসের শেষের দিকে পরিচালক শ্যাম বেনগলের নির্মিত 'মুজিব, দ্য মেকিং অফ নেশন' নামক বায়োপিক দেখানোর পরিকল্পনা ছিল ৷ প্রসঙ্গত, 2013 সালে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের উপর নির্মিত হয়েছে বায়োপিক ৷

তবে বর্তমানে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে ভারত সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয় বা সেদেশের বিদেশনীতিই বা কী হয়, সেদিকেই তাকিয়ে বিশ্বভারতী। তাই আপাতত এই সব পরিকল্পনাই যে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত তা বলাই যায় ৷ উল্লেখ্য, এই বিশ্বভারতীর বিভিন্ন ভবনে প্রায় 35 জন বাংলাদেশ পড়ুয়া আছে। দেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিদেশের মাটিতে থেকে কোনও মন্তব্যই করতে চাইছেন না তারা ৷ বিশ্বভারতীর বাংলাদেশ ভবনের মুখ্য সমন্বয়ক অধ্যাপক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় বলেন, "1999 সালে বিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম। শেখ হাসিনাকে দেশিকোত্তম দেওয়া হয়েছিল ৷ আর বিশ্বভারতীতে বাংলাদেশ ভবন তৈরিতে শেখ হাসিনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা যে ছিল তা অস্বীকার করা যাবে না ৷ এই প্রস্তাব তিনিই দিয়েছিলেন ৷ পরে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় শান্তিনিকেতনে এই ভবন হবে তা ঘোষণা করেছিলেন ৷ তবে এই মুহুর্তে বাংলাদেশের যা পরিস্থিতি তাতে আমাদের বেশকিছু পরিকল্পনা ছিল, তা আপাতত হচ্ছে না ৷ ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত কী হয়, তার উপরেই নির্ভর করছে ৷ নতুন করে আমাদের আবার ভাবতে হবে।"

বোলপুর, 5 অগস্ট: শেখ হাসিনার উদ্যোগে তৈরি বিশ্বভারতীর বাংলাদেশ ভবনে চলতি মাসেই 'মুজিব, দ্য মেকিং অফ নেশন' নামে বায়োপিক দেখানোর পাশাপাশি একাধিক কর্মসূচির কথা ছিল ৷ কিন্তু, বাংলাদেশ পরিস্থিতির জন্য তা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হল ৷ ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত কী হয়, সে দেশের বিদেশনীতিই বা কী হয়, সেদিকেই আপাতত তাকিয়ে বিশ্বভারতী।

স্থগিত মুজিবের বায়োপিক (ইটিভি ভারত)

এমনটাই সোমবার জানালেন বাংলাদেশ ভবনে মুখ্য সমন্বয়ক অধ্যাপক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়। বাংলাদেশ সরকারের অর্থানুকূল্যে 2018 সালে 25 মে শান্তিনিকেতনে তৈরি হয়েছিল বাংলাদেশ ভবন ৷ 1999 সালে শেখ হাসিনাকে বিশ্বভারতীর সর্বোচ্চ সম্মান 'দেশিকোত্তম' দেওয়া হয়েছিল ৷ কোটা আন্দোলনের জেরে উত্তাল বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়তে হয়েছে শেখ হাসিনাকে ৷ আন্দোলনকারীরা দখল নিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ৷ ওপার বাংলার উত্তাল পরিস্থিতির আঁচ পড়েছে এপার বাংলাতেও ৷

বাংলাদেশ সরকারের 40 কোটি টাকা ব্যায়ে বিশ্বভারতীর ইন্দিরা গান্ধি জাতীয় সংহতি কেন্দ্রের মাঠে 40 হাজার স্কোয়ার ফুট জায়গা জুড়ে তৈরি হয় আন্তর্জাতিক 'বাংলাদেশ ভবন'। 2018 সালের 25 মে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ভবনের উদ্বোধন করেন ৷ উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ভবনের নক্সা তৈরি করেছিলেন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই। পরে এই ভবন পরিচালনা জন্য বাংলাদেশ সরকারের তরফে 10 কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল ৷ চুক্তি হয়েছিল এই টাকা ব্যাঙ্কে ফিক্সড করে তার সুদের অঙ্ক দিয়ে বাংলাদেশ ভবন রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে ৷ আর ভবনের দায়িত্ব বিশ্বভারতীর। 1999 সালে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্বভারতীর সর্বোচ্চ সম্মান 'দেশিকোত্তম' দেওয়া হয়েছিল ৷ তাই গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন নিয়ে তাঁর আবেগ অনেকটাই বেশি ছিল।

এই বাংলাদেশ ভবনে রয়েছে, বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের মূর্তি-সহ মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন ছবি, ভাস্কর্য, তথ্য ৷ এছাড়া রয়েছে একটি গ্রন্থাগার, প্রেক্ষাগৃহ-সহ পড়াশোনার কক্ষ ৷ দুই বাংলার ইতিহাস থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও কাজী নজরুল ইসলামকে গবেষণা করার সুযোগ রয়েছে এই বাংলাদেশ ভবনে ৷ বাংলাদেশ ভবনের মুখ্য সমন্বয়ক তথা বিশ্বভারতীর বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় ইটিভি ভারতকে জানান, এই আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ ভবনে অনেকগুলো পরিকল্পনা ছিল ৷ যেমন- বাংলাদেশ ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, বাংলাদেশ নাটকের ফেস্টিভ্যাল। এছাড়া, এই অগস্ট মাসের শেষের দিকে পরিচালক শ্যাম বেনগলের নির্মিত 'মুজিব, দ্য মেকিং অফ নেশন' নামক বায়োপিক দেখানোর পরিকল্পনা ছিল ৷ প্রসঙ্গত, 2013 সালে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের উপর নির্মিত হয়েছে বায়োপিক ৷

তবে বর্তমানে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে ভারত সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয় বা সেদেশের বিদেশনীতিই বা কী হয়, সেদিকেই তাকিয়ে বিশ্বভারতী। তাই আপাতত এই সব পরিকল্পনাই যে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত তা বলাই যায় ৷ উল্লেখ্য, এই বিশ্বভারতীর বিভিন্ন ভবনে প্রায় 35 জন বাংলাদেশ পড়ুয়া আছে। দেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিদেশের মাটিতে থেকে কোনও মন্তব্যই করতে চাইছেন না তারা ৷ বিশ্বভারতীর বাংলাদেশ ভবনের মুখ্য সমন্বয়ক অধ্যাপক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় বলেন, "1999 সালে বিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম। শেখ হাসিনাকে দেশিকোত্তম দেওয়া হয়েছিল ৷ আর বিশ্বভারতীতে বাংলাদেশ ভবন তৈরিতে শেখ হাসিনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা যে ছিল তা অস্বীকার করা যাবে না ৷ এই প্রস্তাব তিনিই দিয়েছিলেন ৷ পরে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় শান্তিনিকেতনে এই ভবন হবে তা ঘোষণা করেছিলেন ৷ তবে এই মুহুর্তে বাংলাদেশের যা পরিস্থিতি তাতে আমাদের বেশকিছু পরিকল্পনা ছিল, তা আপাতত হচ্ছে না ৷ ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত কী হয়, তার উপরেই নির্ভর করছে ৷ নতুন করে আমাদের আবার ভাবতে হবে।"

Last Updated : Aug 5, 2024, 11:10 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.