কলকাতা, 10 এপ্রিল: বর্ষা আসার আগেই রাজ্যের সব সেতুর স্বাস্থ্যপরীক্ষা সেরে ফেলতে তৎপর রাজ্য পূর্ত দফতর। 2200-রও বেশি সেতু রয়েছে পূর্ত দফতরের অধীনে। এর মধ্যে প্রায় দেড়শোটি সেতু, বিশেষ করে উত্তরবঙ্গে, মাঝারি থেকে গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেই কারণেই সমস্ত সেতুর দ্রুত পরিদর্শনের নির্দেশ জারি হয়েছে, যা শেষ করতে হবে এই মাসের মধ্যেই — অর্থাৎ 30 এপ্রিলের মধ্যে।
গত 3 এপ্রিল, নবান্নে পূর্তমন্ত্রী পুলক রায় ও দফতরের সচিব অন্তরা আচার্যের উপস্থিতিতে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে প্রতিটি সেতু ও উড়ালপুলের বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা করেন দফতরের আধিকারিকেরা।
পূর্ত দফতরের এক প্রবীণ কর্তা বলেন, “মাঝেরহাট ব্রিজ দুর্ঘটনার পর থেকেই সরকার সেতু পরিদর্শনে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে। এবারও বর্ষা নামার আগেই আমরা সমস্ত সেতুর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে চাই। যাতে কোনও বিপদ না ঘটে।”
প্রসঙ্গত, মাঝেরহাট সেতু নতুন করে তৈরি হয়ে 2023 সালের জানুয়ারি থেকে চালু হয়েছে। দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, যে সব সেতুতে আগে থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, সেখানে দ্রুত হাইট ব্যারিকেড বসানো, সতর্কতা বোর্ড লাগানো ও ভারী যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞার মতো পদক্ষেপ করতে হবে। পরিদর্শনের পর প্রতিটি সেতুর তথ্য ‘সামীক্ষা’ পোর্টালে আপলোড করতে হবে 30 এপ্রিলের মধ্যে।
পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণ— তিনটি জোনের চিফ ইঞ্জিনিয়ারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারা যেন কাজের অগ্রগতি নজরে রাখেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ দ্রুত গ্রহণ করেন। পাশাপাশি, জেলাস্তরে চলমান প্রকল্পগুলির গতি বাড়াতে জেলাশাসকদের সঙ্গে সমন্বয় সাধনে একাধিক বৈঠকও শুরু করেছে পূর্ত দফতরের শীর্ষকর্তারা। ইতিমধ্যেই রাজ্যের 12টি জেলায় এমন বৈঠক হয়েছে।
সরকারি সূত্রে বলা হয়েছে, পূর্ত দফতর চাইছে, এবার আর কোনও সেতু বিপজ্জনক অবস্থায় থেকে যেন দুর্ঘটনার কারণ না হয়। তাই বর্ষা আসার আগেই সতর্কতা। সময় খুব বেশি নেই, তবে প্রশাসন আশাবাদী— নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই কাজ শেষ করা যাবে।