সন্দেশখালি, 19 এপ্রিল: ফের উত্তপ্ত সন্দেশখালি। এবার তৃণমূল কর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলার অভিযোগ উঠল বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। চলল গুলিও । তাতে অন্ততপক্ষে আট জন জখম হয়েছেন বলে অভিযোগ। এর মধ্যে চার জনের আঘাত গুরুতর বলেই জানা গিয়েছে । তাঁদের চিকিৎসা চলছে খুলনা গ্রামীণ হাসপাতালে।
পাল্টা বিজেপির দাবি, তৃণমূলই তাঁদের কর্মীদের ওপর প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে । তাতে জখম হয়েছেন কয়েকজন । আর দাবি পাল্টা দাবি ঘিরে রীতিমতো সরগরম হয়ে উঠেছে জেলিয়াখালি গ্রাম পঞ্চায়েতের পাখিরালয় এলাকায়। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এলাকায় বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে সন্দেশখালি 2 নম্বর ব্লকের পাখিরালয় এলাকায় শাসকদলের কয়েক জন কর্মী বসে গল্প করছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় অতর্কিতে হামলা চালায় বিজেপি আশ্রিত একদল দুষ্কৃতী।
অন্যদিকে, বিষয়টি নিয়ে বসিরহাট জেলার পুলিশ সুপার হোসেন মেহেদি রহমান বলেন, "দু'পক্ষই সন্দেশখালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গুলি চলার কোনও খবর পাইনি। এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে।"
দুষ্কৃতীদের থেকে সংখ্যায় তৃণমূল কর্মীরা কম থাকায় প্রতিরোধ করার কোনও সুযোগই পাননি তাঁরা। ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলাকারীরা এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। প্রাণ বাঁচাতে রক্তাক্ত অবস্থায় তৃণমূল কর্মীরা সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করলে তাঁদের লক্ষ্য করে ছরড়া গুলিও চালানো হয় বলে অভিযোগ। দুষ্কৃতীদের সশস্ত্র হামলায় কারোর মাথা ফালা হয়ে গিয়েছে তো কারোর হাত-পায়ে গুরুতর আঘাত লেগেছে। আক্রান্ত তৃণমূল কর্মীদের দাবি, দা, শাবল, বাটাম ও বন্দুক নিয়ে এসে পরিকল্পনা করে হামলা চালানো হয়েছে তাঁদের উপর। ইয়াকুব বৈদ্য'র নেতৃত্বে সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা জড়ো হয়েছিল হামলা চালানো জন্য। হামলায় জখম হয়েছেন আট জন কর্মী। এর মধ্যে চার জনের আঘাত যথেষ্ট গুরুতর বলেই দাবি তৃণমূলের।
এদিকে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। এরপর তাঁদের সহযোগিতায় আহত তৃণমূল কর্মীদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় সন্দেশখালির খুলনা গ্রামীণ হাসপাতালে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশের পিকেট বসানো হয়েছে। এই বিষয়ে তৃণমূলের সন্দেশখালি দু'নম্বর ব্লকের সভাপতি দিলীপ মল্লিক বলেন, "স্থানীয় একটি ইস্যুকে কেন্দ্র করে বিজেপি সেখানে গন্ডগোল বাঁধিয়েছিল। তা দেখতে গিয়ে আক্রান্ত হন দলের সাধারণ কর্মীরা। বিজেপি চক্রান্ত করে সমস্ত জায়গায় অশান্তি পাকাতে চাইছে । কারণ, এর আগেও সন্দেশখালিতে চক্রান্ত করেছিল ওরা। গুলিও চলেছে। পরিকল্পনা ছাড়া দা, বন্দুক-সহ ধারালো অস্ত্র এল কোথা থেকে ?"
যদিও তৃণমূলের বিরুদ্ধেই পাল্টা হামলার অভিযোগ তুলেছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুকল্যাণ বৈদ্য বলেন, "সম্প্রতি ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে সন্দেশখালিতে একটি মিছিল করেছিল তৃণমূল। সেই মিছিলে আমাদের কর্মীদের জোর করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়। তৃণমূলের স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি সাইফুদ্দিন মোল্লার নেতৃত্বে একদল দুষ্কৃতী আমাদের কর্মীদের ওপর প্রাণঘাতী হামলা চালায়। এতে জখম হয়েছেন কয়েক জন। পুলিশ তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে উল্টে আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধেই পদক্ষেপ নেয়। এর তীব্র প্রতিবাদ করছি।"