দুর্গাপুর, 4 জুন: অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে মৃত্যু হয়েছিল আদিবাসী যুবক সুনীল মুর্মুর । তাঁর স্মৃতিতে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা চালু হল পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার জঙ্গলমহল এলাকায় । সন্তান হারানোর যন্ত্রণা বুকে নিয়ে এই পরিষেবার সূচনা করলেন ওই আদিবাসী যুবকের মা ।
ন্যাশনাল ফার্টিলাইজার কর্পোরেশন লিমিটেড ও প্রাক্তন সাংসদ সুরেন্দ্র সিং আলুওয়ালিয়ার তহবিল থেকে দেওয়া হয়েছে এই অ্যাম্বুলেন্স দু’টি । আগামিদিনে যা এলাকাবাসীর প্রয়োজন মেটাবে বলেই মনে করছেন উদ্যোক্তারা ।
বিজেপির যুব নেতা জয়দীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "কাঁকসার বিস্তীর্ণ জঙ্গলমহলে আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষ বসবাস করেন । এছাড়াও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষ এখানে থাকেন । আমরা এলাকার ছেলেরা এখানে পঞ্চায়েতে অ্যাম্বুলেন্স আছে বলে শুনেছি ৷ কিন্তু কোনও দিন চোখে দেখিনি । অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে তরতাজা প্রাণ চলে গিয়েছে জঙ্গলমহলে । তখন থেকে আমাদের ভাবনাতে ছিল আর যেন কোনও জীবন অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে অকালে চলে না যায় । তাই জঙ্গলমহল এলাকার রোগীরা যাতে সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছতে পারে এই অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা চালু করা হল ।"
তাঁর কথায়, "আজ আমরা এলাকার মহিলাদেরকে বস্ত্রদান করার পাশাপাশি, দূষণ ঠেকাতে বৃক্ষরোপণ করেছি । আগামিদিনে আমরা অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থাও রাখব । যাতে করে অন্ততপক্ষে অ্যাম্বুলেন্সে মুমূর্ষ রোগীকে অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়ে নিকটস্থ কোনও হাসপাতালে পৌঁছে দিতে পারি ।"

এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন জঙ্গলমহলের বাসিন্দারা । অসুস্থ হয়ে পড়লে বাস্তবেই ওই দুরূহ এলাকার মানুষদের অতি কষ্টে হাসপাতালে পৌঁছতে হতো । এবার থেকে অন্ততপক্ষে এই অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার মাধ্যমে অসুস্থ মানুষেরা দ্রুত সরকারি অথবা বেসরকারি হাসপাতালে পৌঁছতে পারবেন বলে মনে করছেন ।
উল্লেখ্য, 2024 সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আদিবাসী যুবক সুনীল মুর্মুর মৃত্যু হয় । অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে সময় মতো চিকিৎসা দেওয়া যায়নি সুনীলকে । ফলে সময়ের আগেই ঝরে যায় তরতাজা প্রাণ । অভিযোগ, আ্যম্বুলেন্স পরিষেবা থেকে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত আদিবাসী অধ্যুষিত জঙ্গলমহল এলাকার একটা বড় অংশের মানুষ । ফলে প্রায়শই দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায় ।
প্রত্যন্ত এলাকার সেইসব মানুষের কথা ভেবে এই আ্যম্বুলেন্স পরিষেবা চালু করা হল । প্রয়াত আদিবাসী যুবক সুনীল মুর্মুর স্মৃতিতে এদিন আ্যম্বুলেন্স পরিষেবার উদ্বোধন করেন তাঁর অসহায় মা । সন্তানহারা মায়ের আকুতি, আ্যম্বুলেন্সের অভাবে আর কোনও মায়ের কোল যেন খালি না হয় ।