ETV Bharat / state

ফের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে থ্রেট কালচার ! বিক্ষোভ পড়ুয়াদের, সাসপেন্ড অভিযুক্ত - THREAT CULTURE

ফিজিওথ্যারাপি সেকশনের ডিপ্লোমা কোর্সের ইনচার্জ প্রতাপ নন্দীর বিরুদ্ধে থ্রেট কালচার ও ইন্টার্ন ছাত্রীকে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ ৷ সাসপেন্ডের পর ছুটিতে পাঠানো হয়েছে তাঁকে ৷

North Bengal Medical College
ফের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে কলেজে থ্রেট কালচারের অভিযোগ (নিজস্ব ছবি)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : April 16, 2025 at 5:26 PM IST

4 Min Read

শিলিগুড়ি, 16 এপ্রিল: ফের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে থ্রেট কালচার, র‍্যাগিং ও এক ইন্টার্ন ছাত্রীকে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠল ৷ সাসপেন্ড করা হল অভিযুক্ত ফিজিওথেরাপি বিভাগের ইনচার্জকে ৷ পাঠানো হল ছুটিতে ৷ তাঁর বৃহত্তর শাস্তির দাবিতে বিভাগের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন পড়ুয়ারা ৷

ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রি-হ্যাবিলিটেশন বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী চলতি মাসের 4 এপ্রিল অধ্যক্ষের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জানান ফিজিওথ্যারাপি সেকশনের ডিপ্লোমা কোর্সের ইনচার্জ প্রতাপ নন্দীর বিরুদ্ধে । মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি তাঁকে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়া-সহ সব নিয়েই কটুক্তির অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রী । এমনকি ক্লাস রুমে ডেকেও বাজে মন্তব্য করা হয়েছে তাঁকে বলে অভিযোগ সেই ছাত্রীর।

ফের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে থ্রেট কালচার ! (ইটিভি ভারত)

এদিকে, অধ্যক্ষকে জানানোর পরও কোন সদুত্তর না-মেলায় বুধবার বিভাগের সামনেই বিক্ষোভ অবস্থান দেখালেন ফিজিওথেরাপি বিভাগের পড়ুয়ারা। বিভাগের সামনে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি কাজকর্ম সবটাই বন্ধ করে দেন তাঁরা । বিক্ষোভের পর বিভাগীয় প্রধান পার্থপ্রতিম পানের সঙ্গে সমাধান সূত্র বের করতে বৈঠক হয় বিক্ষোভকারীদের । সাতদিনের মধ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে পদক্ষেপ করবে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও তদন্ত কমিটি । এই আশ্বাস মিললে বিক্ষোভ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে অভিযুক্ত ওই ইনচার্জকে ছুটিতে পাঠানোর পাশাপাশি তাঁকে সাসপেন্ড করেছে কর্তৃপক্ষ । তাঁর জায়গায় অন্য একজন চিকিৎসককে ইনচার্জ করা হয়েছে ।

প্রসঙ্গত, এর আগেও ওই বিভাগ থেকেই ফেব্রুয়ারি মাসে ওই বিভাগেরই ছাত্রী রিয়া বৈদ্য র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ তুলেছিলেন । পরে অভিযোগ পেয়ে তদন্ত প্রথমে অ্যান্টি-র‍্যাগিং কমিটিতে ও পরে মেডিক্যাল ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের হয় । যদিও পরে পুলিশি অভিযোগ তুলে নেন ছাত্রী । বর্তমানে সেই বিষয়টিও অ্যান্টি র‍্যাগিং কমিটির কাছে বিচারাধীন রয়েছে ।

অন্যদিকে, ঘটনার সূত্রপাত হয় বুধবার । বিভাগের এক ছাত্রীর অভিযোগ, ইনচার্জ প্রতাপ নন্দী একাধিকবার তাঁকে মানসিকভাবে হেনস্তা করেছেন । একইসঙ্গে বিভাগের এক সিনিয়র ছাত্রও তাঁকে নিয়মিত হুমকি ও মানসিক চাপে রাখছে বলে অভিযোগ । ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ছাত্রীটি চলতি মাসের 4 এপ্রিল বিষয়টি জানান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহাকে । পরে মেডিক্যাল ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন । অভিযোগ পাওয়ার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ 14 এপ্রিল অভিযুক্ত ইনচার্জকে তাঁর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয় ।

তবে আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীদের দাবি, শুধু সাসপেন্ড করলে হবে না । অভিযুক্তকে অবিলম্বে বিভাগ থেকে বহিষ্কার করতে হবে এবং তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিতে হবে । এদিন বিক্ষোভ চলাকালীন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন । আলোচনার পর কলেজের অধ্যক্ষের অনুমতিক্রমে অভিযুক্ত ইনচার্জকে 10 দিনের ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । অভিযুক্ত ইতিমধ্যেই লিখিতভাবে ছুটির আবেদন জমা দিয়েছেন । ঘটনার তদন্তে কলেজ কর্তৃপক্ষ একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে । তদন্তের পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে ।

North Bengal Medical College
অভিযুক্তকে বহিষ্কার করার দাবিতে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের (নিজস্ব ছবি)

পড়ুয়া রিয়া বৈদ্য বলেন, "প্রতাপ নন্দী স্যর মাঝেমধ্যেই পড়ুয়াদের কটুক্তি করছেন । প্রতিবাদ করলে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়া হবে বলে ভয় দেখানো হয় । ক্লাসে ডেকে কুপ্রস্তাব দেওয়া হয় । অভিযোগের কথা বললেই একঘরে করে দেওয়া হচ্ছে । সেজন্য আমরা বিক্ষোভ দেখালাম । বিভাগীয় প্রধান আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন যে সাতদিনের মধ্যে পদক্ষেপ করা হবে । তা না হলে ফের বিক্ষোভ করা হবে ।"

বিভাগীয় প্রধান পার্থপ্রতিম পান বলেন, "ইতিমধ্যে অভিযুক্ত ইনচার্জকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে । পাশাপাশি তাকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে । বাকিটা তদন্ত কমিটি তদন্ত করে দেখবে । তারা যা সিদ্ধান্ত নেবে সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে ।" যদিও ওই বিষয়ে প্রতাপ নন্দীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সব মিথ্যে ও ভিত্তিহীন । এমন কোনও ঘটনা বিভাগে ঘটেনি । তদন্ত কমিটি খতিয়ে দেখুক ।

শিলিগুড়ি, 16 এপ্রিল: ফের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে থ্রেট কালচার, র‍্যাগিং ও এক ইন্টার্ন ছাত্রীকে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠল ৷ সাসপেন্ড করা হল অভিযুক্ত ফিজিওথেরাপি বিভাগের ইনচার্জকে ৷ পাঠানো হল ছুটিতে ৷ তাঁর বৃহত্তর শাস্তির দাবিতে বিভাগের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন পড়ুয়ারা ৷

ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রি-হ্যাবিলিটেশন বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী চলতি মাসের 4 এপ্রিল অধ্যক্ষের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জানান ফিজিওথ্যারাপি সেকশনের ডিপ্লোমা কোর্সের ইনচার্জ প্রতাপ নন্দীর বিরুদ্ধে । মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি তাঁকে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়া-সহ সব নিয়েই কটুক্তির অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রী । এমনকি ক্লাস রুমে ডেকেও বাজে মন্তব্য করা হয়েছে তাঁকে বলে অভিযোগ সেই ছাত্রীর।

ফের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে থ্রেট কালচার ! (ইটিভি ভারত)

এদিকে, অধ্যক্ষকে জানানোর পরও কোন সদুত্তর না-মেলায় বুধবার বিভাগের সামনেই বিক্ষোভ অবস্থান দেখালেন ফিজিওথেরাপি বিভাগের পড়ুয়ারা। বিভাগের সামনে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি কাজকর্ম সবটাই বন্ধ করে দেন তাঁরা । বিক্ষোভের পর বিভাগীয় প্রধান পার্থপ্রতিম পানের সঙ্গে সমাধান সূত্র বের করতে বৈঠক হয় বিক্ষোভকারীদের । সাতদিনের মধ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে পদক্ষেপ করবে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও তদন্ত কমিটি । এই আশ্বাস মিললে বিক্ষোভ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে অভিযুক্ত ওই ইনচার্জকে ছুটিতে পাঠানোর পাশাপাশি তাঁকে সাসপেন্ড করেছে কর্তৃপক্ষ । তাঁর জায়গায় অন্য একজন চিকিৎসককে ইনচার্জ করা হয়েছে ।

প্রসঙ্গত, এর আগেও ওই বিভাগ থেকেই ফেব্রুয়ারি মাসে ওই বিভাগেরই ছাত্রী রিয়া বৈদ্য র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ তুলেছিলেন । পরে অভিযোগ পেয়ে তদন্ত প্রথমে অ্যান্টি-র‍্যাগিং কমিটিতে ও পরে মেডিক্যাল ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের হয় । যদিও পরে পুলিশি অভিযোগ তুলে নেন ছাত্রী । বর্তমানে সেই বিষয়টিও অ্যান্টি র‍্যাগিং কমিটির কাছে বিচারাধীন রয়েছে ।

অন্যদিকে, ঘটনার সূত্রপাত হয় বুধবার । বিভাগের এক ছাত্রীর অভিযোগ, ইনচার্জ প্রতাপ নন্দী একাধিকবার তাঁকে মানসিকভাবে হেনস্তা করেছেন । একইসঙ্গে বিভাগের এক সিনিয়র ছাত্রও তাঁকে নিয়মিত হুমকি ও মানসিক চাপে রাখছে বলে অভিযোগ । ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ছাত্রীটি চলতি মাসের 4 এপ্রিল বিষয়টি জানান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহাকে । পরে মেডিক্যাল ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন । অভিযোগ পাওয়ার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ 14 এপ্রিল অভিযুক্ত ইনচার্জকে তাঁর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয় ।

তবে আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীদের দাবি, শুধু সাসপেন্ড করলে হবে না । অভিযুক্তকে অবিলম্বে বিভাগ থেকে বহিষ্কার করতে হবে এবং তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিতে হবে । এদিন বিক্ষোভ চলাকালীন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন । আলোচনার পর কলেজের অধ্যক্ষের অনুমতিক্রমে অভিযুক্ত ইনচার্জকে 10 দিনের ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । অভিযুক্ত ইতিমধ্যেই লিখিতভাবে ছুটির আবেদন জমা দিয়েছেন । ঘটনার তদন্তে কলেজ কর্তৃপক্ষ একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে । তদন্তের পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে ।

North Bengal Medical College
অভিযুক্তকে বহিষ্কার করার দাবিতে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের (নিজস্ব ছবি)

পড়ুয়া রিয়া বৈদ্য বলেন, "প্রতাপ নন্দী স্যর মাঝেমধ্যেই পড়ুয়াদের কটুক্তি করছেন । প্রতিবাদ করলে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়া হবে বলে ভয় দেখানো হয় । ক্লাসে ডেকে কুপ্রস্তাব দেওয়া হয় । অভিযোগের কথা বললেই একঘরে করে দেওয়া হচ্ছে । সেজন্য আমরা বিক্ষোভ দেখালাম । বিভাগীয় প্রধান আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন যে সাতদিনের মধ্যে পদক্ষেপ করা হবে । তা না হলে ফের বিক্ষোভ করা হবে ।"

বিভাগীয় প্রধান পার্থপ্রতিম পান বলেন, "ইতিমধ্যে অভিযুক্ত ইনচার্জকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে । পাশাপাশি তাকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে । বাকিটা তদন্ত কমিটি তদন্ত করে দেখবে । তারা যা সিদ্ধান্ত নেবে সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে ।" যদিও ওই বিষয়ে প্রতাপ নন্দীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সব মিথ্যে ও ভিত্তিহীন । এমন কোনও ঘটনা বিভাগে ঘটেনি । তদন্ত কমিটি খতিয়ে দেখুক ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.