কলকাতা, 8 এপ্রিল: নদিয়ার কালীগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে । সেব্যাপারেই একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে রাজ্যের সমস্ত স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আজ বৈঠক করলেন রাজ্যের নবনিযুক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ কুমার আগরওয়াল ।
আজ তৃণমূলের পক্ষ থেকে বৈঠকে প্রতিনিধিত্ব করেন কাউন্সিলর দেবাশিস কুমার ৷ বৈঠক শেষে তিনি জানান, কালীগঞ্জের ভোটার তালিকা রিভিশনের কাজ শুরু হয়েছে ৷ এইসব বিষয়গুলি আলোচনা করার জন্যই আজ সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছিল । তৃণমূলের পক্ষ থেকে ভোটার তালিকার ত্রুটি সংশোধনে জোর দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি ৷
তিনি বলেন, "বারেবারে তৃণমূলের তরফে চিহ্নিত করা হয়েছে যে, একই এপিক নম্বরে একাধিক ভোটার রয়েছে ৷ তাই এই বিষয়টি কমিশনের নজরে আনা হয়েছে । বলা হয়েছে, এইসব নামের ডুপ্লিকেশন যেন বাদ যায় এবং যাঁরা এই কাজটা করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে যেন পদক্ষেপ করা হয় ।" দেবাশিস কুমার জানান, নয়া মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানিয়েছেন যে, একই এপিক নম্বরে যাতে একাধিক নামের ভোটার না-থাকে, সেদিনে নজর দেওয়া হবে ।
অন্যদিকে, প্রধান বিরোধী দল বিজেপির পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করেন কেয়া ঘোষ ৷ তিনি বৈঠকের পরে বলেন, "ভুয়ো ভোটারের যে অভিযোগ বারে বারে উঠে এসেছে আজ আবারও সেই অভিযোগ জানিয়েছে বিজেপি ৷ এর আগে 17 লক্ষ ভোটারের নাম আমরা কমিশনে এসে দিয়ে গিয়েছি । এর পাশাপাশি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, কালীগঞ্জের শেফালী খাতুন তাঁর দুটি ভোটার লিস্টে নাম রয়েছে । এই বিষয়টিও কমিশনের নজরে নিয়ে আসা হয়েছে । অন্যদিকে, তালিকাতে এখনও প্রচুর মৃত ভোটারের নাম রয়ে গিয়েছে, সেই বিষয়টির যাতে দেখে নেওয়া হয়, কমিশনে সেই আর্জি জানিয়েছে বিজেপি ৷"

কংগ্রেসের পক্ষ থেকে উপস্থিত হন সুভাশিস ভট্টাচার্য এবং আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় ৷ বৈঠক শেষে সুভাশিস বলেন, "এর আগেও দেখা গিয়েছে যে, উপনির্বাচনগুলো স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ হয়নি ৷ তাই এবারের কালীগঞ্জের উপনির্বাচন যাতে স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ হয় সেই বিষয়ে পদক্ষেপ করার জন্য কমিশনকে বলেছে কংগ্রেস ৷ আর স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ ভোট সুনিশ্চিত করতে হলে একটি স্বচ্ছ ভোটার তালিকার প্রয়োজন ৷ তাই ভোটার তালিকা যাতে সবদিক থেকে পরিষ্কার এবং স্বচ্ছ থাকে সেই বিষয়টি কমিশনকেই নিশ্চিত করতে হবে ।"
অন্যদিকে, কালীগঞ্জ নিয়ে হঠাৎ করে সামারি রিভিশনের প্রসঙ্গ কীভাবে উঠল, সেবিষয়ে প্রশ্ন তোলেন সিপিএমের পক্ষ থেকে কল্লোল মজুমদার ৷ তিনি বলেন, "স্থানীয় প্রশাসনিক অফিস থেকে বলা হচ্ছে যে, কালীগঞ্জে নির্বাচন হবে কি না তা নিয়েই প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে ৷ তাহলে হঠাৎ করে এখানে সামারি রিভিশন কেন ! কেন নির্বাচন হবে না, সেই নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষণ রয়েছে ৷ কারণ একপক্ষ মনে করছে যে, ছাব্বিশের আগে কালীগঞ্জে নির্বাচন হয়ে যাক সেটা শাসকদল চায় না । অন্যদিকে বিজেপিরা কালীগঞ্জ নিয়ে তেমন একটা আত্মবিশ্বাসী নয় বলে ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে তারা তৃণমূলের সঙ্গে কোনও টক্করে যেতে চাইছেন না । বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে যেখানে যেখানে উপনির্বাচন করানো বাকি রয়েছে, সেই সবকটি জায়গায় একসঙ্গে যাতে উপনির্বাচন হয় সেই বিষয়টির উপরই জোর দেওয়া হয়েছে ৷"