কলকাতা, 18 মার্চ: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেলগ কলেজ সফর নিয়ে যখন আলোড়ন তুঙ্গে, তখন জানা গেল, তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে আরও দুই খ্যাতনামা ব্রিটিশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান—লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স (এলএসই) ও কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির মাইল এন্ড ইনস্টিটিউট।
এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির কেলগ কলেজের প্রেসিডেন্ট তথা প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর জোনাথন মিচি বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানান। তাঁর আমন্ত্রণপত্রে লেখা হয়, “আপনার শাসনভার পরিচালনার অভিজ্ঞতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সার্বিক উন্নতির প্রতি আপনার দায়বদ্ধতা আন্তর্জাতিক স্তরে প্রশংসিত হয়েছে । আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের শিক্ষামহলে আপনার অভিজ্ঞতা ও দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।” অক্সফোর্ডের পাশাপাশি লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিক্সেও বক্তৃতা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিক্সেও প্রাক্তন পড়ুয়াদের তরফেও আলোচনাসভায় বক্তৃতার জন্য নবান্নে আমন্ত্রণ এসেছে বলে সোমবার নবান্নের তরফে জানানো হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরের ঘোষণার পর আরও কয়েকটি মর্যাদাপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাঁর দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এরই ধারাবাহিকতায় লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স (এলএসই)-এর প্রাক্তনী দীপ্তেন্দু রায় মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানান। তাঁকে একটি বিশেষ আলোচনায় অংশ নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে, যেখানে প্রশাসন, নারী উন্নয়ন ও সামাজিক নীতিগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরা হবে ৷ এলএসই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের শিক্ষার্থী ও গবেষকদের মতবিনিময়ের সুযোগ করে দিতে আগ্রহী এবং তাঁর সরকারের সামাজিক কল্যাণ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক নীতিগুলি নিয়ে আলোচনা করতে চায়।
এছাড়া, কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির মাইল এন্ড ইনস্টিটিউট মুখ্যমন্ত্রীকে ‘Chatham House Rules’ অনুযায়ী একটি ঘরোয়া আলোচনায় অংশগ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে। এই আলোচনায় গবেষক ও শিক্ষাবিদরা পশ্চিমবঙ্গের নারী-কেন্দ্রিক নীতিগুলি, রাজনৈতিক কৌশল এবং প্রশাসনিক মডেল নিয়ে বিশদ আলোচনা করবেন।
কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি, যা বৈচিত্র্য ও জননীতির উপর গুরুত্ব দেয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বকে গণতান্ত্রিক শাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যয়ন হিসেবে দেখছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইল এন্ড ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর ড. সোফিয়া কোলিগন আমন্ত্রণপত্রে লেখেন, “পশ্চিমবঙ্গের ‘কন্যাশ্রী প্রকল্প’ রাষ্ট্রপুঞ্জের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি পাওয়ার পর বিশ্বজুড়ে নারী-কল্যাণ নীতির আলোচনায় উঠে এসেছে । আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন একদল গবেষক রয়েছেন, যারা গণতান্ত্রিক অবক্ষয় ও রাজনৈতিক বিভাজন নিয়ে কাজ করেন। আমরা লক্ষ করেছি, আপনার দল সংসদে সর্বাধিক সংখ্যক মহিলা প্রতিনিধি পাঠায় এবং ক্রমবর্ধমান মেরুকরণের মধ্যেও রাজ্যের প্রতিটি সম্প্রদায়ের সমর্থন পেয়েছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত আগ্রহী আপনার সঙ্গে এই প্রকল্পগুলি নিয়ে আলোচনায় অংশ নিতে এবং জানতে চায় কীভাবে এই নীতিগুলি সারা ভারতে প্রয়োগ করা যেতে পারে।”
মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর প্রশাসন, সামাজিক ন্যায়বিচার ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে আলোচনার ক্ষেত্র প্রসারিত করবে। এটি তাঁর দ্বিতীয় ব্রিটেন সফর ৷ এর আগে 2017 সালের নভেম্বরে তিনি একটি বাণিজ্যিক সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন।