কলকাতা, 13 এপ্রিল: 100 দিনের কাজ থেকে শুরু করে চাকরি বাতিল, সবেতেই বিজেপির ষড়যন্ত্র দেখছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । শনিবার খড়দায় গিয়ে সবাইকে শান্ত থাকার বার্তা দেন তিনি ৷
সুপ্রিম কোর্টের চাকরি বাতিলের নির্দেশের পর থেকেই আন্দোলনে নেমেছেন সদ্য চাকরিহারারা । এই অবস্থায় তাঁদের একাংশ যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও চাকরি হারানোর জন্য রাজ্য সরকারকে দায়ী করেছেন । সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, বিরোধীদের তোপ, ডিআই অফিস অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার, এত কাণ্ড হয়ে যাওয়ার পরও এই নিয়ে চুপ ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ।
তবে শনিবার খড়দহে একটি বেসরকারি হাসপাতালের উদ্বোধনে গিয়ে রাজ্যের মানুষকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে 'পদে পদে হেনস্থার জন্য' বিজেপিকেই দায়ী করলেন অভিষেক । 100 দিনের কাজ, আবাস যোজনা থেকে শুরু করে চাকরি হারানো - সবক্ষেত্রেই একই অনুসঙ্গ দেখছেন তিনি । যদিও তিনি বলেছেন, আদালতকে তাঁরা সম্মান করেন । আদালত নয়, বৃহৎ সংখ্যক মানুষের স্বার্থ যেখানে জড়িয়ে, এই অবস্থায় রায়ের সমালোচনা করছেন তিনি ।
তিনি এদিন বলেন, "যখন উন্নয়নের পথে আমাদের পরাস্ত করতে পারছে না, তখন ধর্মের নামে সমাজকে ভাগ করে বাংলাকে অস্থির করার চক্রান্ত করছে কেউ কেউ । আমি সকলকে অনুরোধ করব, শান্তি বজায় রাখুন, বাংলার ঐতিহ্য, সৌহার্দ্র্য ও সংহতি রক্ষা করুন । আমাদের সকলকে সচেতন থাকতে হবে ।"
তিনি আরও বলেন, "কেউ চায় বাংলায় আগুন জ্বলুক, কেউ চায় রাজ্যের অর্থ আটকে মানুষকে অনাহারে মরতে দেওয়া হোক । কিন্তু যতদিন আমাদের সরকার রয়েছে, ততদিন কেউ বাংলার একজন মানুষকেও প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করতে পারবে না । আগেও কেন্দ্র নানা অজুহাতে টাকা আটকে রেখেছে, কিন্তু আমরা লড়ে মানুষকে টাকা পাইয়ে দিয়েছি ।"
চাকরি বাতিল প্রসঙ্গে অভিষেক বলেছেন, "আমরা বিচারব্যবস্থাকে শ্রদ্ধা করি এবং বিশ্বাস করি তা পক্ষপাতহীন । তবে কোনও রায় যদি কারও পছন্দ না-হয়, তা নিয়ে মত প্রকাশ করার অধিকার সংবিধান দেয় । আমি মনে করি, এই রায় বিজেপির বাংলা-বিরোধী মানসিকতার প্রতিফলন । কয়েকজনের ভুলের দায়ে 59 লক্ষ কাজের কার্ডধারীর টাকা আটকে দেওয়া, অথবা অভিযোগ পেলে পদক্ষেপ করা সত্ত্বেও আবাস যোজনার মতো প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়া, এসব একতরফা বঞ্চনা ছাড়া কিছু নয় ।"
তাঁর কথায়, "যদি ধরেও নেওয়া যায় যে, কয়েক হাজার চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে কিছু অনিয়ম হয়েছে, তাহলে তার জন্য 17 হাজার প্রকৃত প্রাপকের চাকরি কেড়ে নেওয়া ন্যায়সঙ্গত নয় । যাঁরা প্রকৃত দোষী, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হোক । কিন্তু সমস্ত প্রার্থীকে একজোট করে শাস্তি দেওয়া কখনওই গ্রহণযোগ্য নয় ।"
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যে পরিষ্কার, আদালতের রায়কে সম্মান জানালেও, বৃহৎ সংখ্যক নির্দোষের উপর শাস্তির প্রভাব নিয়েই আপত্তি রয়েছে শাসকদলের ।