কলকাতা, 7 অক্টোবর: জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন মঞ্চে যোগ দিলেন সিনিয়র চিকিৎসকরা ৷ 24 ঘণ্টার জন্য প্রতীকী অনশনে সামিল হয়েছেন তাঁরা ৷ পাঁচজন সিনিয়র চিকিৎসক ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলের অনশন মঞ্চের পাশেই অনশনে বসেছেন ৷ তাঁরা জানিয়েছেন, জুনিয়র ডাক্তারদের এই আন্দোলনে তাঁদের পাশে থাকতেই 24 ঘণ্টার অনশনে বসছেন তাঁরা ৷
প্রতীকী অনশনে বসা পাঁচ সিনিয়র চিকিৎসক হলেন, তাপস ভট্টাচার্য, কোয়েল মিত্র, তাপস ফ্রান্সিস বিশ্বাস, শ্রাবণী চক্রবর্তী এবং মুনমুন কীর্তনিয়া ৷ এর পাশাপাশি, গত শনিবার থেকে 6 জন জুনিয়র ডাক্তার আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন ৷ শনিবার এই আমরণ অনশনে যোগ দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তার ফ্রন্টের সদস্য তথা আরজি কর আন্দোলনের অন্যতম মুখ চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো ৷ আরজি কর থেকে অনশনে যোগ দেওয়া প্রথম জুনিয়র ডাক্তার তিনি ৷
উল্লেখ্য, আজ জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনের তৃতীয় দিন ৷ শনিবার রাত সাড়ে আটটা থেকে শুরু হওয়া এই অনশন 40 ঘণ্টা পার করেছে ৷ অনিকেত মাহাতোকে নিয়ে আমরণ অনশনে রয়েছেন মোট 7 জন জুনিয়র ডাক্তার ৷
বাকি 6 জন জুনিয়র ডাক্তার হলেন-
- তনয়া পাঁজা, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি (নাক, কান, গলা সংক্রান্ত) বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট
- অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের এন্ডোক্রিনোলজি বিভাগের পিজিটি প্রথম বর্ষের পড়ুয়া
- অর্ণব মুখোপাধ্যায়, এসএসকেএম হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগের পিজিটি প্রথম বর্ষের পড়ুয়া
- সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, কেপিসি মেডিক্যাল কলেজের প্যাথোলজি বিভাগের পিজিটি তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া
- পুলস্ত্য আচার্য, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাস্থেসিয়া বিভাগের পিজিটি প্রথম বর্ষের পড়ুয়া
- স্নিগ্ধা হাজরা, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ক্যানসার বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট
মূলত দশ দফা দাবিতে অনশন শুরু করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা ৷
জুনিয়র ডাক্তারদের 10 দফা দাবি
- দীর্ঘসূত্রিতায় বিভ্রান্ত না-করে দ্রুত ও স্বচ্ছতার সঙ্গে নির্যাতিতার ন্যায়বিচার সুনিশ্চিত করতে হবে ৷
- স্বাস্থ্যক্ষেত্রে প্রশাসনিক অক্ষমতা ও দুর্নীতির দায় স্বাস্থ্য দফতরকে নিতে হবে ৷ স্বাস্থ্যসচিবকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে ৷
- দ্রুত রাজ্যের সমস্ত হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে কেন্দ্রীয় রেফারেল ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
- প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ডিজিটাল বেড ভ্যাকেন্সি মনিটর চালু করতে হবে।
- অবিলম্বে সবকটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের নির্বাচিত প্রতিনিধি-সহ কলেজ ভিত্তিক টাস্ক ফোর্স গঠন করে প্রয়োজন মাফিক সিসিটিভি, অনকল-রুম, বাথরুমের সঙ্গে হেল্পলাইন নম্বর এবং প্যানিক বোতামের ব্যবস্থা করতে হবে স্বাস্থ্য দফতরকে ৷
- বিভিন্ন হাসপাতালে পুলিশি সুরক্ষা বাড়াতে হবে। সিভিক ভলান্টিয়ার নয়, স্থায়ী পুরুষ ও মহিলা পুলিশকর্মী নিয়োগ করতে হবে ৷
- ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের শূন্যপদগুলি অবিলম্বে পূরণ করতে হবে ৷
- প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজে থ্রেট সিন্ডিকেটে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি বসিয়ে শাস্তির ব্যবস্থা ৷ রাজ্যস্তরেও কমিটি তৈরি করার দাবি ৷
- দ্রুত রাজ্যের প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন করতে হবে। সবক’টি কলেজের আরডিএ-কে স্বীকৃতি দিতে হবে ৷ কলেজ/হাসপাতাল পরিচালনার ক্ষেত্রে সবক'টি কমিটিতে ছাত্র, ছাত্রী ও জুনিয়র ডাক্তারদের নির্বাচিত প্রতিনিধি থাকা সুনিশ্চিত করতে হবে ৷