চন্দননগর, 6 জুন: একসময়ের বিত্তশালী পরিবারে আজ অনটনের সংসার । সেই মানসিক অবসাদ থেকেই ঘুমের ওষুধ খেয়ে জীবন শেষ করার চেষ্টা একই পরিবারের তিন জনের । একজনের মৃত্যু হলেও বাকি দু'জনের চিকিৎসা চলছে চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে । শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে চন্দননগরের 13 নম্বর ওয়ার্ডের বৈদ্যপোতা এলাকায় ।
বছর তেতাল্লিশের মেয়ে শর্মিষ্ঠাকে নিয়ে থাকতেন দাস পরিবারের বৃদ্ধ দম্পতি সাতাশির একেন্দ্রনাথ দাস ও সুনীতা দাস (83) । শুক্রবার সকালে তিন জনকেই অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ । চন্দননগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে বৃদ্ধার সুনীতা মৃত্যু হয়েছে বলে জানান চিকিৎসক । বাবা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ।
পরিবার সূত্রে খবর, তিন জনই ঘুমের ওষুধ খেয়েছিল । আর্থিক অনটনের কারণেই এই ঘটনা বলে জানা গিয়েছে । চন্দননগর কমিশনারেটের এক পুলিশ আধিকারিক জানান, অসুস্থ মেয়ের দাবি ঘুমের ওষুধ খেয়ে ছিল সকলেই । তবে সঠিক কী কারণে এই ঘটনা ময়নাতদন্তের পরই সেই বিষয়ে পরিষ্কার হওয়া যাবে । চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে ।
শর্মিষ্ঠার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হওয়ায় তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে । তিনি বলেন, "আমাদের বাড়িতে কাজ করার কেউ নেই । সংসারে অনটন । তাই তিন জনই ঘুমের ওষুধ খাই ।"
তাঁদের এক আত্মীয় আরণ্যক দাস বলেন, "সুনীতা দাস আমার পিসি হয় । এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পিসি-পিসেমশাই ও দিদিকে হাসপাতালে নিয়ে যাই । পিসিমার মৃত্যু হয়েছে । তবে কী কারণে এই ঘটনা বলতে পারব না ।"
চন্দননগরে বেশ সম্ভ্রান্ত বলেই পরিচিত এই দাস পরিবার । এক সময় খুবই বিত্তশালী ও স্বচ্ছল অবস্থা ছিল । কোলিয়ার ব্যবসা ছিল বলে জানা গিয়েছে । তবে বেশিরভাগ লোকজনই কলকাতায় বাস করেন । বর্তমানে এই পরিবারে আর্থিক পরিস্থিতি ভালো ছিল না । মেয়ের মানসিক সমস্যা ছিল দাবি স্থানীয়দের । গত 28 মে চন্দননগরে ঋণের দায়ে একই পরিবারের তিন জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় । এরপর ফের এই ঘটনা ।
আত্মহত্যা কোনও সমাধান নয় ৷ যদি আপনার মধ্যে কখনও আত্মহত্যার চিন্তা মাথাচাড়া দেয় বা আপনার কোনও বন্ধু বা পরিচিত এই সমস্যায় জর্জরিত হন, তাহলে ভেঙে পড়বেন না। জানবেন, এমন কেউ আছে যে আপনার যন্ত্রণা, আপনার হতাশা ভাগ করে নিতে সদা-প্রস্তুত। আপনার পাশে দাঁড়াতে তৎপর। সাহায্য পেতে দিনের যে কোনও সময়ে 044-24640050 এই নম্বরে কল করুন স্নেহা ফাউন্ডেশনে। টাটা ইন্সটিটিউট অফ সোশাল সায়েন্সের হেল্পলাইন নম্বরেও (9152987821) কল করতে পারেন। এখানে ফোন করতে হবে সোমবার থেকে শনিবার সকাল 8টা থেকে রাত 10টার মধ্যে।