ETV Bharat / state

ভাঙছে গঙ্গার পাড়, বদলাচ্ছে জল, বোটানিক্যাল গার্ডেন ঘিরে পরিবেশ বিপর্যয়ের অশনিসংকেত - BOTANIC GARDEN

এক নদী পাড়ে শুরু হয়েছিল সবুজের স্বপ্ন । আজ সেই নদীই হয়ে উঠছে আশঙ্কার কারণ । অস্তিস্ব সঙ্কটের মুখে ঐতিহাসিক বোটানিক্যাল গার্ডেন ৷

Botanic Garden
আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু ইন্ডিয়ান বোটানিক গার্ডেন (নিজস্ব ছবি)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : April 19, 2025 at 9:02 PM IST

4 Min Read

হাওড়া, 19 এপ্রিল: নদীর গতিপথ বদল, শহুরে নির্মাণ, পলি সঞ্চয়ের অসাম্য, আর প্রশাসনিক দোলাচলে ক্রমশ তৈরি হচ্ছে এক গভীর পরিবেশগত সঙ্কট । যার ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের অশনিসংকেত দেখা দিয়েছে ৷ অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে 238 বছরের পুরনো ঐতিহাসিক বোটানিক্যাল গার্ডেন ৷

হাওড়ার শিবপুরে অবস্থিত এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন এই উদ্ভিদ উদ্যান ৷ 1787 সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাকর্তা কর্নেল রবার্ট কিডের হাতে প্রতিষ্ঠা হয় বোটানিক্যাল গার্ডেনের । প্রথমের দিকে ইন্ডিয়ান বা ক্যালকাটা বোটানিক্যাল গার্ডেন নামে পরিচিত ছিল ৷ পরে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু ইন্ডিয়ান বোটানিক গার্ডেন নাম হয় ৷ 109 হেক্টর জমিতে গঙ্গার তীরে গড়ে ওঠা এই ঐতিহাসিক গার্ডেনই ধংসের মুখে । কারণ, গঙ্গা ভাঙনের বিপদ আজ আর শুধু নদীতীরে বসবাসকারী কিছু মানুষের সমস্যা নয় ৷ এটা বোটানিক্যাল গার্ডেনের মতো এক ঐতিহ্য, এক প্রাণতন্ত্রকে বিলুপ্তির দিকে ঠেলে দেওয়ার পূর্বাভাস ।

অস্তিস্ব সঙ্কটের মুখে বোটানিক্যাল গার্ডেন (ইটিভি ভারত)

নদীর পাড়ে 'প্যাঁচিং', তবু রক্ষা নেই

বোটানিক্যাল গার্ডেন সংলগ্ন অংশে নদী ভাঙন ৷ সেই প্রসঙ্গে বোটানিক্যাল গার্ডেনের জয়েন্ট ডিরেক্টর দেবেন্দ্র কুমার সিং বলেন, "নাজিরগঞ্জ থেকে হিবিসকাস পর্যন্ত কিছুটা প্যাঁচিং হয়েছে । সিমেন্ট-কংক্রিট দিয়ে পাড় শক্ত করা হয়েছে, তাই আপাতত নিয়ন্ত্রণে । কিন্তু তার পরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল, বিশেষত বি কলেজের দিকে, এখনও কাঁচা রয়েছে । সেখানেই ভাঙন শুরু হয়ে গিয়েছে ।"

Botanic Garden
গঙ্গার গতিপথে বদল ঘটছে (নিজস্ব ছবি)

তিনি আরও বলেন, "এই ভাঙন একাধিক মামলায় পৌঁছে গিয়েছে এনজিটি-র (ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল) দরজায় । যদিও জলসম্পদ দফতর কিছু সাময়িক ব্যবস্থা নিয়েছে, তা স্রেফ বালির বস্তা ও অস্থায়ী বাঁধ দিয়ে পরিস্থিতি ঠেকানোর চেষ্টা । কিন্তু স্থায়ী সমাধান না হলে আগামী পাঁচ-দশ বছরের মধ্যে বোটানিক্যাল গার্ডেনের নিজস্ব ভূখণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হবে ।"

ভূতত্ত্ব ও ভূতাত্ত্বিক অস্থিরতা: বিপদের উৎস

পরিবেশ বিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী বলেন, "গঙ্গার ভূপৃষ্ঠগত গঠনে আমরা সাম্প্রতিককালে বিপুল পরিবর্তন লক্ষ করছি । শুধু জলপ্রবাহের দিক নয়, নদীর গভীরতা, গতিপথ, স্রোতের প্রকৃতি সবকিছুই বদলে গিয়েছে । পলি জমার অনিয়ম ও চর গঠনের ফলে হাওড়ার পাড়ে চাপ তৈরি হচ্ছে, বাড়ছে ভাঙন । এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মানুষের নির্বিচার নগরায়ণ ।" তিনি আরও বলেন, "রিসর্ট, হাইরাইজ, রাস্তা তৈরির নামে নদী তীর থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে শ্বাসমূলীয় গাছ, কাটা হচ্ছে পাড়ঘেঁষা বনাঞ্চল । এই গাছগুলিই ছিল ভাঙন ঠেকানোর প্রাকৃতিক ব্যারিকেড । এখন গঙ্গার চরিত্র যেমন বদলাচ্ছে, জলও তেমন বদলে যাচ্ছে ।"

Botanic Garden
গঙ্গাই হয়ে উঠছে আশঙ্কার কারণ (নিজস্ব ছবি)

মাটির ইতিহাস থেকে জীববৈচিত্রের সংকেত মুছছে

এক সময় গঙ্গার পাড় ঘেঁষে জন্মাত সুন্দরী, গড়ান, গেওয়ার মতো লবণ সহিষ্ণু বায়ো-ইন্ডিকেটর গাছ । এখন তারা সরে যাচ্ছে । কিছুটা জায়গায় ফিরে আসছে এই গাছগুলিই, যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ৷ এরা কি প্রকৃতিই ফের পাঠাচ্ছে আত্মরক্ষার সংকেত? স্বাতী নন্দী চক্রবর্তীর কথায়, "গাছ না থাকলে মাটির সঙ্গে জল ও জীবনের যোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় । এ এক বিপজ্জনক পরিণতির ইঙ্গিত ।" তিনি আরও বলেন, "আজ বোটানিক্যাল গার্ডেনের মতো জায়গাও গাছ ধরে রাখতে পারছে না, তাহলে আর কোথায় পারবে ?"

জল দূষণ ও লবণাক্ততার বিস্তার

গঙ্গার জলে নোনা জলের অনুপ্রবেশ এবং জলমানের পতন নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবেশবিদরা । দেবেন্দ্র কুমার সিং বলেন, "আমরা এক সরকারি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনের কাছে 500 মিটার এলাকাজুড়ে ম্যানগ্রোভ গাছ লাগিয়েছি । সেই সংস্থা প্রতি ত্রৈমাসিকে গঙ্গার জলের গুণমান পরিমাপ করছে ।" এমনকি সুন্দরবনের মতো এলাকায় যেসব গাছ শুধুমাত্র লবণাক্ত জলে জন্মায়, সেগুলিও এই অঞ্চলে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে নদীর জলে লবণাক্ততা বাড়ছে ।

Botanic Garden
238 বছরের পুরনো ঐতিহাসিক বোটানিক্যাল গার্ডেন (নিজস্ব ছবি)

প্রশাসনিক জটিলতা ও বিচারাধীনতা সমস্যা আরও বাড়াচ্ছে

প্রশাসনিক জটিলতা ও আদালতে বিচারাধীনতা বিষয় কাজ এগনোর ক্ষেত্রে সমস্যা আরও বাড়াচ্ছে ৷ দেবেন্দ্র কুমার সিং বলেন, "আমরা পরিবেশ ও অরণ্য মন্ত্রককে জানিয়েছি । কিন্তু বিষয়টি যেহেতু আদালতের বিচারাধীন, তারা এখনই কোনও নির্দেশ দিতে পারছে না । যদি তারা বলে গার্ডেনই এই কাজে দায়িত্ব নিক, তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব । তবে এ মুহূর্তে আমরা হাতে বাঁধা ।"

প্রকৃতি বনাম প্রশাসন: কার হাতে ভবিষ্যৎ?

নদীভাঙন, জলদূষণ, গাছ উচ্ছেদ, এই সব কিছুর যোগফলে আজ প্রশ্নের মুখে পড়েছে বোটানিক্যাল গার্ডেনের অস্তিত্ব । প্রশাসনিক উদ্যোগের অভাব, বিচারালয়ের দীর্ঘসূত্রিতা, আর পরিবেশ রক্ষার সদিচ্ছার অভাবে সময় যেন হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে । পরিবেশ বিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তীর সতর্কবার্তা, "আমরা যদি আজই ব্যবস্থা না নিই, তাহলে আগামী প্রজন্মের কাছে কিছুই থাকবে না৷ না গঙ্গা, না তার পাড়, না তার জীববৈচিত্র ।"

Botanic Garden
গঙ্গার পাড় ভাঙনে বিপদে বোটানিক্যাল গার্ডেন (নিজস্ব ছবি)

একটা ঐতিহাসিক প্রাকৃতিক সম্পদ ক্রমশ চলে যাচ্ছে ভাঙনের মুখে । প্রশ্ন উঠছে, আমরা কি আরেকটা 'সুন্দরবন' হারাতে চলেছি? পরিবেশবিদ ও প্রশাসন একযোগে আগাম সতর্ক হতে বলছে ৷ তবু তৎপরতা নেই । আর দেরি নয়, এখনই উদ্যোগ না নিলে, হয়তো সবুজ এই স্বপ্ন কেবল ইতিহাসে টিকে থাকবে ।

হাওড়া, 19 এপ্রিল: নদীর গতিপথ বদল, শহুরে নির্মাণ, পলি সঞ্চয়ের অসাম্য, আর প্রশাসনিক দোলাচলে ক্রমশ তৈরি হচ্ছে এক গভীর পরিবেশগত সঙ্কট । যার ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের অশনিসংকেত দেখা দিয়েছে ৷ অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে 238 বছরের পুরনো ঐতিহাসিক বোটানিক্যাল গার্ডেন ৷

হাওড়ার শিবপুরে অবস্থিত এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন এই উদ্ভিদ উদ্যান ৷ 1787 সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাকর্তা কর্নেল রবার্ট কিডের হাতে প্রতিষ্ঠা হয় বোটানিক্যাল গার্ডেনের । প্রথমের দিকে ইন্ডিয়ান বা ক্যালকাটা বোটানিক্যাল গার্ডেন নামে পরিচিত ছিল ৷ পরে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু ইন্ডিয়ান বোটানিক গার্ডেন নাম হয় ৷ 109 হেক্টর জমিতে গঙ্গার তীরে গড়ে ওঠা এই ঐতিহাসিক গার্ডেনই ধংসের মুখে । কারণ, গঙ্গা ভাঙনের বিপদ আজ আর শুধু নদীতীরে বসবাসকারী কিছু মানুষের সমস্যা নয় ৷ এটা বোটানিক্যাল গার্ডেনের মতো এক ঐতিহ্য, এক প্রাণতন্ত্রকে বিলুপ্তির দিকে ঠেলে দেওয়ার পূর্বাভাস ।

অস্তিস্ব সঙ্কটের মুখে বোটানিক্যাল গার্ডেন (ইটিভি ভারত)

নদীর পাড়ে 'প্যাঁচিং', তবু রক্ষা নেই

বোটানিক্যাল গার্ডেন সংলগ্ন অংশে নদী ভাঙন ৷ সেই প্রসঙ্গে বোটানিক্যাল গার্ডেনের জয়েন্ট ডিরেক্টর দেবেন্দ্র কুমার সিং বলেন, "নাজিরগঞ্জ থেকে হিবিসকাস পর্যন্ত কিছুটা প্যাঁচিং হয়েছে । সিমেন্ট-কংক্রিট দিয়ে পাড় শক্ত করা হয়েছে, তাই আপাতত নিয়ন্ত্রণে । কিন্তু তার পরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল, বিশেষত বি কলেজের দিকে, এখনও কাঁচা রয়েছে । সেখানেই ভাঙন শুরু হয়ে গিয়েছে ।"

Botanic Garden
গঙ্গার গতিপথে বদল ঘটছে (নিজস্ব ছবি)

তিনি আরও বলেন, "এই ভাঙন একাধিক মামলায় পৌঁছে গিয়েছে এনজিটি-র (ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল) দরজায় । যদিও জলসম্পদ দফতর কিছু সাময়িক ব্যবস্থা নিয়েছে, তা স্রেফ বালির বস্তা ও অস্থায়ী বাঁধ দিয়ে পরিস্থিতি ঠেকানোর চেষ্টা । কিন্তু স্থায়ী সমাধান না হলে আগামী পাঁচ-দশ বছরের মধ্যে বোটানিক্যাল গার্ডেনের নিজস্ব ভূখণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হবে ।"

ভূতত্ত্ব ও ভূতাত্ত্বিক অস্থিরতা: বিপদের উৎস

পরিবেশ বিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী বলেন, "গঙ্গার ভূপৃষ্ঠগত গঠনে আমরা সাম্প্রতিককালে বিপুল পরিবর্তন লক্ষ করছি । শুধু জলপ্রবাহের দিক নয়, নদীর গভীরতা, গতিপথ, স্রোতের প্রকৃতি সবকিছুই বদলে গিয়েছে । পলি জমার অনিয়ম ও চর গঠনের ফলে হাওড়ার পাড়ে চাপ তৈরি হচ্ছে, বাড়ছে ভাঙন । এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মানুষের নির্বিচার নগরায়ণ ।" তিনি আরও বলেন, "রিসর্ট, হাইরাইজ, রাস্তা তৈরির নামে নদী তীর থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে শ্বাসমূলীয় গাছ, কাটা হচ্ছে পাড়ঘেঁষা বনাঞ্চল । এই গাছগুলিই ছিল ভাঙন ঠেকানোর প্রাকৃতিক ব্যারিকেড । এখন গঙ্গার চরিত্র যেমন বদলাচ্ছে, জলও তেমন বদলে যাচ্ছে ।"

Botanic Garden
গঙ্গাই হয়ে উঠছে আশঙ্কার কারণ (নিজস্ব ছবি)

মাটির ইতিহাস থেকে জীববৈচিত্রের সংকেত মুছছে

এক সময় গঙ্গার পাড় ঘেঁষে জন্মাত সুন্দরী, গড়ান, গেওয়ার মতো লবণ সহিষ্ণু বায়ো-ইন্ডিকেটর গাছ । এখন তারা সরে যাচ্ছে । কিছুটা জায়গায় ফিরে আসছে এই গাছগুলিই, যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ৷ এরা কি প্রকৃতিই ফের পাঠাচ্ছে আত্মরক্ষার সংকেত? স্বাতী নন্দী চক্রবর্তীর কথায়, "গাছ না থাকলে মাটির সঙ্গে জল ও জীবনের যোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় । এ এক বিপজ্জনক পরিণতির ইঙ্গিত ।" তিনি আরও বলেন, "আজ বোটানিক্যাল গার্ডেনের মতো জায়গাও গাছ ধরে রাখতে পারছে না, তাহলে আর কোথায় পারবে ?"

জল দূষণ ও লবণাক্ততার বিস্তার

গঙ্গার জলে নোনা জলের অনুপ্রবেশ এবং জলমানের পতন নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবেশবিদরা । দেবেন্দ্র কুমার সিং বলেন, "আমরা এক সরকারি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনের কাছে 500 মিটার এলাকাজুড়ে ম্যানগ্রোভ গাছ লাগিয়েছি । সেই সংস্থা প্রতি ত্রৈমাসিকে গঙ্গার জলের গুণমান পরিমাপ করছে ।" এমনকি সুন্দরবনের মতো এলাকায় যেসব গাছ শুধুমাত্র লবণাক্ত জলে জন্মায়, সেগুলিও এই অঞ্চলে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে নদীর জলে লবণাক্ততা বাড়ছে ।

Botanic Garden
238 বছরের পুরনো ঐতিহাসিক বোটানিক্যাল গার্ডেন (নিজস্ব ছবি)

প্রশাসনিক জটিলতা ও বিচারাধীনতা সমস্যা আরও বাড়াচ্ছে

প্রশাসনিক জটিলতা ও আদালতে বিচারাধীনতা বিষয় কাজ এগনোর ক্ষেত্রে সমস্যা আরও বাড়াচ্ছে ৷ দেবেন্দ্র কুমার সিং বলেন, "আমরা পরিবেশ ও অরণ্য মন্ত্রককে জানিয়েছি । কিন্তু বিষয়টি যেহেতু আদালতের বিচারাধীন, তারা এখনই কোনও নির্দেশ দিতে পারছে না । যদি তারা বলে গার্ডেনই এই কাজে দায়িত্ব নিক, তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব । তবে এ মুহূর্তে আমরা হাতে বাঁধা ।"

প্রকৃতি বনাম প্রশাসন: কার হাতে ভবিষ্যৎ?

নদীভাঙন, জলদূষণ, গাছ উচ্ছেদ, এই সব কিছুর যোগফলে আজ প্রশ্নের মুখে পড়েছে বোটানিক্যাল গার্ডেনের অস্তিত্ব । প্রশাসনিক উদ্যোগের অভাব, বিচারালয়ের দীর্ঘসূত্রিতা, আর পরিবেশ রক্ষার সদিচ্ছার অভাবে সময় যেন হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে । পরিবেশ বিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তীর সতর্কবার্তা, "আমরা যদি আজই ব্যবস্থা না নিই, তাহলে আগামী প্রজন্মের কাছে কিছুই থাকবে না৷ না গঙ্গা, না তার পাড়, না তার জীববৈচিত্র ।"

Botanic Garden
গঙ্গার পাড় ভাঙনে বিপদে বোটানিক্যাল গার্ডেন (নিজস্ব ছবি)

একটা ঐতিহাসিক প্রাকৃতিক সম্পদ ক্রমশ চলে যাচ্ছে ভাঙনের মুখে । প্রশ্ন উঠছে, আমরা কি আরেকটা 'সুন্দরবন' হারাতে চলেছি? পরিবেশবিদ ও প্রশাসন একযোগে আগাম সতর্ক হতে বলছে ৷ তবু তৎপরতা নেই । আর দেরি নয়, এখনই উদ্যোগ না নিলে, হয়তো সবুজ এই স্বপ্ন কেবল ইতিহাসে টিকে থাকবে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.