কলকাতা, 15 এপ্রিল: পয়লা বৈশাখ মানেই 'বন্ধুত্বের সুর' বাজে ময়দানজুড়ে ৷ বারপুজো হয় প্রতিটি ফুটবল ক্লাবে। এই পুজোর উৎস কবে বা কোন দেবতার উদ্দেশ্যে পুজো নিবেদিত হয় তা হলপ করে কেউ বলতে পারবে না। তবুও বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রথমদিন ময়দানজুড়ে গোল পোস্টের পুজোকে কেন্দ্র করে মিলন উৎসব হয় ময়দানে।
সব ক্লাবই তাদের মত করে বারপুজো আয়োজন করে। তবে আকর্ষণের কেন্দ্রে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ক্লাব। সদস্য সমর্থকের ভিড়ে পয়লা বৈশাখের সকাল রঙিন হয়ে ওঠে। শুধু দুই প্রধান নয়, ভবানীপুর, এরিয়ান, হাওড়া ইউনিয়ন, খিদিরপুর, উয়াড়ি, পুলিশ ক্লাব, পাঠচক্র, ইউনাইটেড, ডায়মন্ডহারবার, বড়িশা স্পোর্টিং ক্লাব তাদের মত করে এই বারপুজোর আয়োজন করে।
মঙ্গলে মোহনবাগান ক্লাবে এবারের বারপুজোর আনন্দ ছিল আলাদা। মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট এ মরশুমে আইএসএলে লিগ শিল্ড এবং কাপ জিতেছে। ছোটদের জাতীয় লিগেও চ্যাম্পিয়ন তারা। বারপুজোর সকালে কাপ এবং লিগ শিল্ড ট্রফি চলে আসে মোহনবাগান ক্লাব তাঁবুতে। ফলে তা দেখার জন্য সদস্য সমর্থকদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মত।
হকি লিগেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মোহনবাগান। সেই ট্রফিও রাখা হয়েছিল সদস্য সমর্থকদের দেখার জন্য। বারপুজোর অনুষ্ঠানে গোলপোস্ট নতুনভাবে পুজো করে মাঠে পোতা হয়। সেই পুজোর অনুষ্ঠানে বর্তমান দলের ফুটলার এবং বর্তমান কর্তারা অংশ নেন। এদিন মোহনবাগান ক্লাবে বারপুজোয় অংশ নেন দীপেন্দু বিশ্বাস। উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্য।

মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত বলেন, “এই সাফল্য সম্মেলিত প্রয়াসের ফল। 1997 সাল থেকে নিয়মিত সাফল্য এসেছে ৷ আসছেও । তাই এই সাফল্য কোনও ব্যক্তি বিশেষের নয় । প্রতিটি সদস্য সমর্থকের অবদান রয়েছে ।” তাঁর এই বক্তব্যে এবং মোহনবাগান ক্লাবের পয়লা বৈশাখের আবহে আসন্ন নির্বাচনের গন্ধ । প্রাক্তন সচিব সৃঞ্জয় বসুও ভবানীপুর ক্লাবের বারপুজোর আগে মোহনবাগানে এসেছিলেন । সেখানে বর্তমান সচিবের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় হল। তবুও সমগ্র আবহে নির্বাচনের জল মাপার চেষ্টা।
অন্যদিকে, ইস্টবেঙ্গলে এই বছর ভিড় কিছুটা কম। সাফল্যহীন দলকে ঘিরে বারপুজোর উচ্ছ্বাস কম। তবুও আয়োজনে খামতি নেই । ইস্টবেঙ্গলের বারপুজোয় অংশ নিলেন ফুটদল সচিব সৈকত গঙ্গোপাধ্যায়, কোচ অস্কার ব্রুজো, অধিনায়ক মহেশ নওরেম সিং, ডিফেন্ডার লালচুনুঙ্গা। উপস্থিত ছিলেন ক্লাব সভাপতি এমএল লোহিয়া, সহসভাপতি কল্যাণ মজুমদার, প্রাক্তন ফুটবলার মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায় ,অলোক মুখোপাধ্যায়, প্রশান্ত বন্দোপাধ্যায়, মেহতাব হোসেন, আলভিটো ডিকুনহা, শৌমিক দে, সুলে মুসা, দীপঙ্কর রায়, সূর্যবিকাশ চক্রবর্তী-সহ একাধিক প্রাক্তন ফুটবলার। পয়লা বৈশাখের দিন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের প্র্যাকটিস শুরু হল ক্লাবের মাঠেই।

শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, “প্রথমদিকের সংগ্রাম আমাদের দাঁড়াতে সাহায্য করেছিল। সেইসময় সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ক্লাবের প্রতিষ্ঠা এবং দাঁড়ানোর যুদ্ধে যুক্ত ছিলেন। একশো বছর পরে ক্লাব ফের কঠিন সময়ে। ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চলছে । কয়েকদিন আগে ক্লাবের লগ্নিকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলাম। সেখানে কোনও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য ঝাপাতে বলা হয়েছে । খরচ করেও সাফল্য না-আসার কারণ খুঁজতে বলা হয়েছেে । যেকোনও মূল্যে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য ঝাঁপাতে বলেছেন তারা। যা পয়লা বৈশাখে ইস্টবেঙ্গল জনতার জন্য বার্তা।”