কোচি, 22 সেপ্টেম্বর: প্রভসুখন গিলের ভুলের খেসারত দিয়ে পুরো পয়েন্ট কোচিতে ফেলে এল ইস্টবেঙ্গল। কোচিতে কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে 1-2 গোলে হারল কার্লেস কুয়াদ্রাতের দল। বেঙ্গালুরু এফসির বিরুদ্ধে কান্তিরাভায় ভরাডুবির পরে কোচিতে সলিলসমাধি ইস্টবেঙ্গলের।
ম্যাচের 59 মিনিটে পরিবর্ত হিসেবে নামা পিভি বিষ্ণুর গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। 63 মিনিটে নোয়া সাদোয়ির ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে ভর দিয়ে সমতায় ফেরে কেরালা ব্লাস্টার্স। জয়ের গোল 88 মিনিটে এল সুপার সাব পেপরাহর পা থেকে। ঘরের মাঠে প্রথম ম্যাচে পরাজয়ের পরে দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ালো কেরালা ব্লাস্টার্স। অন্যদিকে পরপর হেরে প্রশ্নের মুখে কার্লেস কুয়াদ্রাত।
অথচ ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য লাল-হলুদ কোচ চেষ্টার খামতি রাখেননি। প্রথম ম্যাচের একাদশে তিন বদল করেছিলেন। প্রত্যাশিত ভাবে আনোয়ার আলির অভিষেক হল লাল-হলুদ জার্সিতে। তিনি এবং হেক্টর ইউস্তে রক্ষণে নির্ভরতা দিলেও লাস্ট লাইন অব ডিফেন্সে দাঁড়িয়ে প্রভসুখন গিলের আত্মবিশ্বাসহীন খারাপ পারফরম্যান্স দলের এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ার আশায় জল ঢেলে দেয়। অথচ ইস্টবেঙ্গল খারাপ খেলেছে বলা যাবে না। প্রথমের মিনিট চার বাদ দিলে বিরতির আগে ম্যাচের রাশ লাল হলুদে। বাঁদিক থেকে মহেশ নওরেম সিং এবং মার্ক জোর যুগলবন্দীর সঙ্গে মাঝমাঠেসওল ক্রেসপো মাদিহ তালালের ভালো ফুটবল কেরালাকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছিল। তাদের যাবতীয় আক্রমনকে রুখে দিয়ে প্রতিআক্রমনে পরিবর্তিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা নিচ্ছিলেন হেক্টর ইউস্তে,আনোয়ার জুটি। এই সময় অন্তত তিনবার কেরালা গোলরক্ষক শচিনের হাত দলের পতন রুখে দেয়। প্রসঙ্গত, ম্যাচের শুরুতে কেরলের একটি শট পোস্টে লেগে বাইরে যায়। বাকি সময়টা লালষহলুদ দাপট।
বিরতির পরে একই ছবি। এই সময় ম্যাচের ৫৮ মিনিটে মহেশকে তুলে পিভি বিষ্ণুকে নামান কুয়াদ্রাত। তাঁর এই পরিবর্তন নিয়ে প্রশ্ন থাকবে। যদিও মাঠের নামার এক মিনিটের মধ্যে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দেন পিভি বিষ্ণু। সওল ক্রেসপোর থেকে বল পেয়ে নন্দকুমার তা বাড়িয়ে দেন দিয়ামানতোকোসকে। গোলরক্ষককে একা পেয়েও পিছনে থেকে উঠে আসা বিষ্ণুর জন্য গোলের বল সাজিয়ে দেন দিয়ামানতোকোস। গোলের পরের মিনিটেই আরও একটি সুযোগ নষ্ট করেন তিনি। যা সফল হলে ছবিটা বদলে যেত।
পিছিয়ে পড়ে মরিয়া হয়ে ওঠে কেরালা। এই সময় ৬৪ মিনিটে নোয়াও একক কৃতিত্বের লাল-হলুদ রক্ষণকে নড়িয়ে যে জোরালো শটটি নিয়েছিলেন তা প্রভসুখন গিলের দু'পায়ের ফাঁক দিয়ে জালে চলে যায়।
কোচির প্রচণ্ড গরম ভালো ফুটবলের অন্তরায়। চূড়ান্ত ফিট না-হলে পাল্লা দেওয়া কঠিন। ফলে সত্তর মিনিটের পরে পুরো ইস্টবেঙ্গল মাঝমাঠ দাঁড়িয়ে যায়। ক্রেসপো, মাদিহ তালালকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। জিকসন তো প্রথম থেকেই ছন্দহীন। অবস্থা সামাল দিতে শৌভিক চক্রবর্তী, আমন সিকে, গুরসিমরত সিং নামলেন ঠিকই কিন্তু নিয়ন্ত্রণ তখন কেরালার। চাপ বাড়াতে জেমিনেজকে তুলে পেপরাহকে নামায় কেরল। সিদ্ধান্ত যে সঠিক তা 88 মিনিটে গোলে প্রমাণ করলেন তিনি। এক্ষেত্রেও দায়ী গিল।
সবমিলিয়ে গোলরক্ষকের জোড়া ভুল এবং ফিটনেসের অভাবে কোচি থেকেও পয়েন্ট হাতছাড়া। প্রাপ্তি শুধু আনোয়ার আলির ভালো ফুটবল।