কলকাতা, 14 ডিসেম্বর: “আমি আবার বলছি, ওরা আমাদের ছোট দল হিসেবে দেখছে । আমাদের ফুটবলারদের বাইরে বের করে দেওয়া সহজ । আমাদের বিরুদ্ধে পেনাল্টি দেওয়াও খুব সহজ । যখন কোনও ফুটবলার কভার করছে তখন কনুই তোলার কখনও লাল কার্ড হয় না । দু’ম্যাচ আগে নন্দকুমারের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে । রেফারি খুব ভালো করে জানে কারা আহত হওয়ার ভান করছিল । আমাদের ফুটবলার লাল কার্ড দেখার সঙ্গে সঙ্গেই যে মাঠে ছটফট করছিল সে উঠে দাঁড়াল । রেফারির উচিত নয় ইস্টবেঙ্গলকে ছোট দল হিসেবে দেখা । আর সেটাই পার্থক্য গড়ে দিল। এটা পরিস্কার ৷” শান্ত অথচ দৃঢ় গলায় ম্যাচের পরিচালনার কড়া সমালোচনা করলেন অস্কার ব্রুঁজো ।
চোট-আঘাতে ইস্টবেঙ্গল আগেই মিনি হাসপাতালে পরিণত হয়েছিল । তবুও লড়াকু ফুটবলে অপরাজেয় থাকার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চেয়েছিল । শুরুতে মাদিহ তালালের চোট এবং বিরতির তিন মিনিট আগে জিকসনকে লাল কার্ড যা ইস্টবেঙ্গল কোচকে ক্ষুব্ধ করেছে, আহত করেছে ।
11 নম্বরে দাঁড়িয়ে ইস্টবেঙ্গল । এবার সামনে পঞ্জাব এফসি । ঘরের মাঠে খেলা হলেও অস্বস্তিতে লাল-হলুদ ব্রিগেড । যেভাবে মাদিহ তালালকে হাঁটুতে বড় ব্যান্ডেজ বেঁধে বেরতে দেখা গিয়েছে তাতে গত মরশুমের শুরুতে স্প্যানিশ ডিফেন্ডার এলসের চোটের ছবি মনে করিয়েছে । মরোক্কান মিডফিল্ডারের চোট নিয়ে শঙ্কা গোপন করেননি লাল-হলুদ হেডস্যার । মোলিনা বলছেন, “তালাল ম্যাচের শুরুতেই চোট পেয়ে যাওয়ায় আমাদের সমস্যা আরও বাড়ে । ওর হাঁটুতে চোট লেগেছে । এমআরআই করার পর বোঝা যাবে চোটটা কত গুরুতর । ওর হাঁটুতে যথেষ্ট ব্যথা রয়েছে । দেখে মনে হচ্ছে, চোটটা গুরুতর ।‘‘
চলতি মাসে দলের পারফর্ম্যান্সের ওপর ইস্টবেঙ্গলের প্রথম ছয়ে পৌঁছনো নির্ভর করবে । সামনে দু’টো হোম ম্যাচ সেই অঙ্কে গুরুত্বপূর্ণ । দলকে কঠিন অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড় করাচ্ছেন । তার মধ্যেই বিপত্তি । অস্কার অবশ্য অবস্থা ফেরাতে মরিয়া ৷ লাল-হলুদ কোচ বলছেন, “চোট-আঘাত ও কার্ড সমস্যায় জর্জরিত এখন দলের যা অবস্থা, তাতে খুব কঠিন এক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে । এই পরিস্থিতি সামলাতে হবে আমাদের । যদিও তা খুব কঠিন কাজ । তবে আমাদের চেষ্টা তো করতেই হবে । যারা ভাল খেলছে, দলের সেই সব ফুটবলারদের কাছে বড় সুযোগ আসবে ।”
প্রায় একই সঙ্গে যোগ করেছেন, “যদি পরিসংখ্যান দেখেন, তাহলে দেখবেন ওড়িশা যেখানে 19টা ফাউল করেছে, সেখানে ইস্টবেঙ্গল 8টি ফাউল করেছে । আমি বিস্মিত । ওদের রাইট ফুলব্যাক একাই 6-7টা ফাউল করেছে । তা সত্ত্বেও সে বহাল তবিয়তে খেলেছে । তালালের ক্ষেত্রে যে ঘটনাটা ঘটেছে, সেটাও ফাউলই ছিল । কিন্তু দেওয়া হয়নি ।’’
ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে তিন নম্বরে উঠে আসা ওড়িশা এফসির কোচ সের্গেই লোবেরা বলছেন, কঠিন সময়টা দল কীভাবে সামলাচ্ছে তাতেই দলের চরিত্র বোঝা যায় । তাঁর কথার রেশ ধরেই বলা যায় ইস্টবেঙ্গলের এই কঠিন পর্ব কোন উপায়ে ব্রুঁজো সামলাবেন তা দেখার । যা ইস্টবেঙ্গলের লড়াকু মানসিকতার পরীক্ষাও বটে ।