কলকাতা, 6 জুন: লাঞ্ছিত ক্রিকেট। সিএবি প্রথম ডিভিশন লিগের ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল বনাম ভবানীপুর ক্লাবের বাইশ গজের দ্বৈরথে ক্রিকেট কম, নিয়মের ফাঁক কাজে লাগিয়ে খেলোয়াড়ী মানসিকতার লাঞ্ছনা বেশি। উত্তপ্ত ইডেন। লাঞ্ছিত হল ক্রিকেট। নিশ্চিত পরাজয়ের হাত থেকে যুগ্মজয়ী হওয়ার খুশি ইস্টবেঙ্গলে। ফলে উল্লাস তাদের বেশি। এই উল্লাসকে কটাক্ষ ভবানীপুর ক্লাবের।
ঘটনাটি কী ?
কলকাতা প্রথম ডিভিশন ক্রিকেট লিগের ফাইনালে যুযুধান দুই দলের ঝামেলা মেটাতে পুলিশও ডাকতে হয়েছে । যা সিএবি ক্রিকেট লিগের ইতিহাসে বিরল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বৃষ্টি বিঘ্নিত ফাইনাল শেষ দিনে বন্ধ হতেই দুই দল আস্তিন গুটিয়ে তেড়ে যায়। ক্রিকেটার থেকে কর্মকর্তা সকলেই জড়িত। অশ্রাব্য গালিগালাজ অঙ্গভঙ্গি ধাক্কাধাক্কিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ইডেন। দিনের শেষে ফাইনাল অমিমাংসীত। যুগ্মজয়ী ইস্টবেঙ্গল এবং ভবানীপুর।
ক্লাব কর্তারা কী বলছেন ?
- ইস্টবেঙ্গল অবশ্য ক্রিকেটীয় স্পিরিটকে ক্ষতি করার অভিযোগ মানতে নারাজ। ক্রিকেট সচিব সঞ্জীব আচার্য জানিয়েছেন, এক হাতে তালি বাজে না। তাঁরা ক্রিকেটীয় নিয়মের মধ্যে থেকে বেকায়দায় থাকা অবস্থা থেকে জয়ের আলো ভাগ করেছেন। এর মধ্যে অন্যায় নেই। এই বিষয়টি যদি প্রতিপক্ষ ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে তাহলে তা তাদের রুচির বিষয়।
- সিএবিকে অভিযোগের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন ভবানীপুর শীর্ষকর্তা সৃঞ্জয় বসু। তাঁর মতে, "ইডেনে ক্রিকেট লাঞ্ছিত হল রাজ্য ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থার অপদার্থতায়। বড় ক্লাবের চাপের সামনে সিএবি মাথানত করল। সেই কারণে দ্বিশতরান করেও ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হল না শাকিব হাবিব গান্ধি। এইভাবে চললে বাংলার ক্রিকেটের উন্নতি হবে না। উন্নতি হবে টিকিট বণ্টনের। সিএবি এই বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারবে না।"
- 40 বছরের ক্রিকেটীয় জীবনে এই ঘটনা দেখেননি সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্য়ায়। দুই দলের উত্তপ্ত পরিবেশে অপমানিত হতে পারার শঙ্কা থেকেই গত দু'দিন আর মাঠমুখো হননি। আম্পায়ার এবং ম্যাচ রেফারিদের রিপোর্টের পরে কড়া ব্যবস্থার কথা বলেছেন।
ম্যাচের ফলাফল:-
- ভবানীপুর ক্লাব শাকিব হাবিব গান্ধির দ্বিশতরানে ভর দিয়ে 643 রান তোলে। প্রত্যুত্তরে ব্যাট করতে নেমে ইস্টবেঙ্গল সময় নষ্টের কৌশল নেয় ৷ বৃষ্টিবিঘ্নিত পঞ্চম দিনে ইস্টবেঙ্গল 8 উইকেটে 243 রান তোলে ৷ জয়ের জন্য তখনও 400 রান করতে হত। কিন্তু বৃষ্টিতে ইডেনে খেলা বন্ধ হয়ে যায় ৷ মাঠ ঢেকে দেন কর্মীরা ৷
- কলকাতা ক্রিকেট লিগে ইস্টবেঙ্গল বনাম ভবানীপুর ক্লাবের ম্যাচ প্রথম দিন থেকেই ঘটনাবহুল। দ্বিতীয় দিন শাকিব হাবিব গান্ধির বিতর্কিত আউট ঘিরে 5 ঘণ্টা খেলা বন্ধ ছিল। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মধ্যস্থতায় খেলা শুরু হয়। প্রচণ্ড গরমে খেলা। ফলে বারবার অসুস্থ হওয়ার ভান করতে থাকেন ক্রিকেটাররা। ডাক্তারও বারবার আসেন। ফলে একটা সময় দেখা যায় এক ঘণ্টায় মাত্র 4 ওভার বোলিং সম্পূর্ণ হয়। ছ'শো প্লাস রানের চাপ।
- শেষ দিনে 147 রানে 4 উইকেট নিয়ে খেলা শুরু হয়। বৃষ্টিতে ম্যাচ বন্ধ হওয়া পর্যন্ত 243 রান তোলে 8 উইকেটের বিনিময়ে। তবে শেষ দিনের আলোচনার কেন্দ্রে ক্রিকেটার কর্তাদের হাতাহাতি বচসা। যা সাম্প্রতিক অতীতে কলকাতা ময়দানের ক্রিকেটে দেখা যায়নি।