কলকাতা, 7 এপ্রিল: চাকরি হারানো 26 হাজার যুবক-যুবতীর পাশে দাঁড়াতে রাস্তায় নামার ডাক দিল তৃণমূল কংগ্রেস । তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সোমবার জানিয়েছেন, দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির নির্দেশে আগামী 9 এপ্রিল, বুধবার, বিকেল তিনটেয় কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মহামিছিল হবে । ছাত্র এবং যুব সংগঠনের উদ্যোগে হবে এই মিছিল ।
এদিন কুণাল ঘোষ বলেন, "রাজ্য সরকারের তরফ থেকে চাকরিহারাদের পাশে থাকতে সবরকম উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে । পাশাপাশি সিপিএম এবং বিজেপির যে চক্রান্তের ফলে এই ঘটনা ঘটল, তার বিরুদ্ধে পথে নামছে তৃণমূল ।"
কুণালের দাবি, এই কর্মসূচি শুধুমাত্র কলকাতাতেই নয়, একই দিনে রাজ্যের সব জেলা ও শহরেও হবে প্রতিবাদ মিছিল ৷ তাঁর কথায়, "এই মিছিলের লক্ষ্য খুব স্পষ্ট ৷ যারা ষড়যন্ত্র করে 26 হাজারেরও বেশি চাকরি কেড়ে নিয়েছে, সেই বিজেপি ও সিপিএমকে জনতার আদালতে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো ।"
এ বিষয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, "বিজেপি এবং সিপিএম যুগলবন্দিতে সুপ্রিম কোর্টে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করেছে, যাতে চাকরি পাওয়া ছেলেমেয়েরাও এখন রাস্তায় । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেদিন তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, ঠিক সেদিন থেকেই শুরু হয়েছে কুৎসা, অপপ্রচার । আমরা চাই, জনতা সত্যিটা জানুক ।"
বিরোধীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে কুণাল বলেন, "সিপিএম এবং বিজেপি মিলে চাকরি খাওয়ার যে রাজনীতি করছেন, সেটা আসলে একটা ষড়যন্ত্র । একটা স্পষ্ট যে, চক্রান্তের চিত্রনাট্য তৈরি হয়েছে । এরা পৈশাচিক উল্লাস করছেন । ত্রিপুরাতে আমরা দেখেছি, এরা মানুষকে পথে বসিয়েছে । মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কেউ পাশে দাঁড়ায়নি ।"
তৃণমূল মুখপাত্রের দাবি, "সুপ্রিম কোর্টের রায়ে 26 হাজার ছেলেমেয়ে বিপন্ন হয়েছেন ৷ মুখ্যমন্ত্রী এঁদের পাশে থাকছেন ৷ আইনি পদ্ধতিতেই তাঁদের সামাজিক সুরক্ষা এবং কাজের সুরক্ষা দেওয়া হবে । এই অবস্থায় সিপিএম এবং বিজেপির যে চক্রান্ত, তার মুখোশ খুলে দিতেই পথে নামছে তৃণমূল ।"
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মিছিলের জন্য দলের ছাত্র সংগঠন, শিক্ষক সংগঠন এবং যুব শাখাকে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । কলকাতায় বড় জমায়েতের সম্ভাবনা থাকায় ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ে পুলিশ মহলেও প্রস্তুতি শুরু হয়েছে ।
এ দিন তাঁর ঘোষণায় স্পষ্ট, মুখ্যমন্ত্রী চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর, শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসও এবার চাকরিহারাদের পাশে থাকার বার্তা দিতে রাস্তায় নামছে । তবে রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, এই ঘটনার প্রতিবাদে পথে নামলেই নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে যাবতীয় দায় এড়ানো কি সম্ভব হবে শাসকদলের পক্ষে ! যেভাবে যোগ্য প্রার্থীরা এই রায়ের ফলে খোলা আকাশের নীচে এসে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের জন্য একটা কি নতুন পথ পাওয়া যাবে ? নাকি এটা তৃণমূল কংগ্রেসের নিজের ভোটব্যাংক ধরে রাখার একটা কৌশল মাত্র !