পানিহাটি (উত্তর 24 পরগনা), 12 এপ্রিল: ‘‘এটা আন্দোলন নয় ! সরকারের মদতে গুন্ডামি চলছে । মুর্শিদাবাদের অবস্থা পশ্চিম বাংলাদেশের মতো’’, নবাবের জেলায় ওয়াকফ-অশান্তি প্রসঙ্গে এমনই কড়া প্রতিক্রিয়া দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার ।
শনিবার হনুমান জয়ন্তী পালন করতে উত্তর 24 পরগনার পানিহাটিতে আসেন তিনি । সেখানে একটি হনুমান মন্দিরে প্রথমে পুজো দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি । এরপর, রাস্তায় নেমে বজরংবলির গেরুয়া ধ্বজা একের পর এক গাড়িতে নিজের হাতে টাঙিয়ে দেন সুকান্ত মজুমদার । শুধু গাড়িতেই নয়, এলাকার বেশ কয়েকজনের বাড়িতেও বজরংবলির ছবি দেওয়া গেরুয়া ধ্বজা টাঙিয়ে দেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী । এদিনের এই কর্মসূচি ঘিরে গেরুয়া শিবিরের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে প্রবল উৎসাহ লক্ষ্য করা গিয়েছে । ছিল তুমুল উন্মাদনাও ।
কর্মসূচির ফাঁকে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মুর্শিদাবাদের অশান্তির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকেই দায়ী করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি । সুকান্তর মতে, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেষ্টা করছেন, সংখ্যালঘু ভোট ব্যাংক একত্রিত করতে । সেই কারণে সংখ্যালঘু ভোট ব্যাংকের কথা মাথায় রেখে তিনি তোষণের রাজনীতি করছেন । বিগত দিনে দেখা গিয়েছে, সংখ্যালঘুরা ধর্মীয়ভাবে তোষণ রাজনীতির পক্ষে ভোট দিয়েছে । যেটা হিন্দু ধর্মাবলম্বীর মানুষেরা পারে না । এটা হিন্দুদের দুর্বলতা । তবে, এই দুর্বলতা বেশিদিন দমিয়ে রাখা যাবে না ।"

এর পরেই হুঙ্কার দিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি ভেবে থাকেন, হিন্দুদের ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখবেন, সেটা ভাবলে ভুল হবে । আগামিদিনে শান্তিপ্রিয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবেন । তখন কিন্তু তাঁদের আটকে রাখতে পারবেন না । মুর্শিদাবাদে হিন্দু ধর্মাবলম্বীর মানুষ হয়তো সংখ্যায় কম আছে । কিন্তু, পাশ্ববর্তী জেলায় হিন্দুরা সংখ্যায় যথেষ্ট বেশি । হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ যদি তাণ্ডবলীলা শুরু করে, তখন কিন্তু ঠেকাতে পারবেন না । তাই, মমতা বন্দোপাধ্যায়কে স্পষ্ট ভাষায় বলছি, মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনুন । দরকার পড়লে বুলডোজার চালান । প্রয়োজন হলে সেই বুলডোজার সাপ্লাই করব আমরা ।"

এদিকে, ওয়াকফ-অশান্তিতে মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর বলেও জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার । তিনি বলেন, "সেখানে বোমা-গুলি চলছে । ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি । থানা সংলগ্ন একটি হলে গুন্ডারা অস্ত্রশস্ত্র, বোমা-বারুদ মজুত করেছে । বিধায়কের ভাই নিজে দাঁড়িয়ে থেকে গন্ডগোলে মদত দিচ্ছে । পুলিশ সবকিছু জানে । কিন্তু, কিছুই করছে না । অপদার্থ সরকার । নিষ্ক্রিয় পুলিশ প্রশাসন । শাসকদলের মদতে এসব চলছে । সরকার নিষ্ক্রিয় কেবলমাত্র সংখ্যালঘু ভোটের কথা ভেবে । হিন্দুদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে । আমরা হিন্দুদের পাশে রয়েছি । প্রয়োজনে তাঁদের নিয়ে রাস্তায় নামব আমরা ।"

অন্যদিকে, মৌলালিতে বাস থেকে গায়ের জোরে গেরুয়া ধ্বজা খুলে নেওয়ার প্রতিবাদও জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি । সুকান্তর কথায়, "রাজ্যের একজন মন্ত্রীর উপস্থিতিতে রামনবমীর বাস থেকে জোরজবরদস্তি হিন্দুদের প্রতীক শ্রীরামচন্দ্রের পতাকা খুলে নেওয়া হল । অথচ মুখ্যমন্ত্রী তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্য সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে সাবাশি দিচ্ছেন । তার প্রতিবাদেই আজ আমরা শান্তিপূর্ণভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতীক শ্রীরামচন্দ্র ও বজরংবলির পতাকা সমস্ত ছোট-বড় যানবাহনে লাগিয়ে দিলাম । এই কর্মসূচিতে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি আমরা ।"