ETV Bharat / politics

রাজবংশীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক বংশীবদনের, ফের তুললেন পৃথক রাজ্যের দাবি - SEPARATE COOCH BEHAR STATE ISSUE

বিধানসভা ভোটের এক বছর আগেই পৃথক কোচবিহার রাজ্যের দাবিতে ফের সরব গ্রেটার নেতা বংশীবদন বর্মন

SEPARATE COOCH BEHAR STATE ISSUE
রাজবংশীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক বংশীবদনের, ফের তুললেন পৃথক রাজ্যের দাবি (নিজস্ব ছবি)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : April 8, 2025 at 8:49 PM IST

4 Min Read

জলপাইগুড়ি, 8 এপ্রিল: 2026 সালে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোট ৷ এখনও বাকি প্রায় বছরখানেক ৷ তা সত্ত্বেও পৃথক রাজ্যের দাবি আবার মাথাচাড়া দিল উত্তরবঙ্গে ৷ এবার সরব হয়েছেন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্য়াসোসিয়েশনের (জিসিপিএ) সাধারণ সম্পাদক বংশীবদন বর্মন ৷ তিনি পৃথক কোচবিহার রাজ্যের দাবি তুলেছেন ৷ আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় সরকার এই দাবি পূরণ করলে বিজেপিকে সমর্থনের কথা এখন থেকেই জানিয়ে দিয়েছেন তিনি ৷

কিন্তু যদি কেন্দ্রের কাছ থেকে দাবি আদায় না হয়, সেক্ষেত্রে বিকল্প পথ খোলা রাখার কথাও জানিয়েছেন বংশীবদন ৷ জিসিপিএ-র এই নেতার দাবি, রাজবংশীদের কৃষ্টি-সংস্কৃতি বাঁচাতে যদি রাজ্য সরকার বড় কোনও পদক্ষেপ করে, তাহলে ভোটে তাঁরা তৃণমূলের সঙ্গেই থাকবেন ৷

রাজবংশীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক বংশীবদনের, ফের তুললেন পৃথক রাজ্যের দাবি (ইটিভি ভারত)

জলপাইগুড়িতে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বংশীবদন বলেন, ‘‘আগামী 2026 সালে আমাদের যে রাজ্য দেবে, আমরা তাকেই ভোট দেব । বিজেপি রাজ্য দিলে আমরা বিজেপির গুণগান গাইব । যদি দিদি স্কুলে দেয়, তাহলে দিদিকে জেতাব । 2026 সালের বিধানসভা নির্বাচনে আমাদের জন্য যে ভাববে আমরা তার সঙ্গে থাকব ৷’’

উত্তরবঙ্গ সম্পর্কে যাঁরা ওয়াকিবহাল, তাঁদের বক্তব্য, এখন যেটা কোচবিহার জেলা, শুধু সেটা নিয়েই বংশীবদন রাজ্য গঠনের কথা বলছেন না ৷ তিনি উত্তরবঙ্গের একটা বড় অংশকে নিয়ে এই রাজ্য তৈরির কথা বলছেন ৷ এর মধ্যে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, উত্তর দিনাজপুরও রয়েছে ৷ কারণ, উত্তরবঙ্গের এই অংশেই মূলত রাজবংশী ভাষাভাষীর মানুষ থাকেন ৷ এতদিন তাঁরা বিক্ষিপ্তভাবে ভোট দিয়েছেন ৷ সেই অংশকে এক ছাতার তলায় এনে আন্দোলনে নামতে চাইছেন বংশীবদন ৷

সেই কারণেই এখন থেকেই তাঁর নেতৃত্বে আন্দোলনে নেমে পড়েছে গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন । দলমত নির্বিশেষে আলাদা রাজ্যের দাবিতে এক হওয়ার বার্তা দিয়েছেন তিনি ৷ জলপাইগুড়িতে এই নিয়ে সভা হয়েছে ইতিমধ্যে ৷ আগামিদিনে অন্য জেলাতেও এই ধরনের সভা হবে ৷

রাজবংশীদের উদ্দেশ্যে সভায় অনুরোধ করে বংশীবদন বর্মন বলেন, ‘‘ভূমিপুত্র রাজবংশী বিভ্রান্ত না হয়ে দলমত নির্বিশেষে একমত হয়ে দিশা ঠিক করে ভারতভুক্তি চুক্তি মোতাবেক রাজ্য চাই । রাজবংশী ভাষা চাই৷ এই দাবিতে এগিয়ে এসো আন্দোলন শুরু করতে হবে । ভারতভুক্তি চুক্তি কার্যকরী করাই আমাদের মূলদাবি ।’’

এই গ্রেটার নেতার দাবি, 1949 সালে ভারত সরকারের সঙ্গে কোচবিহারের রাজার একটি চুক্তি হয়েছিল ৷ সেই চুক্তি অনুযায়ী কোচবিহারের ভারতভুক্তি হয় ৷ সেই চুক্তিতে কোচবিহারকে সি ক্যাটাগরির রাজ্য করার বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে ৷ তিনি চান সেই দাবিই পূরণ করুক কেন্দ্রীয় সরকার ৷

বংশীবদন বর্মন বলেন, ‘‘এই সংগঠনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হল আমার অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া । আমরা বৃহত্তর কোচবিহারের ভূমিপুত্র ৷ কোচবিহারকে সি ক্যাটাগরির রাজ্য করার চুক্তি রয়েছে । কোচবিহারের রাজা কোচবিহারের রাজ্যের জন্য চুক্তি করে গিয়েছেন । সেই মোতাবেক কোচবিহার রাজ্য হওয়া উচিত ।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘কিন্তু এতদিন কেউ কিছু করেনি । এর আগে কোনও সংগঠন এই ভারতভুক্তি চুক্তির দাবি তোলেনি । আমরাই তুলে ধরেছি । রাজবংশীরা কথা বললে একটা সময় বলেছে মাওবাদী-উগ্রবাদী । গুলি করে মারা হয়েছে । এই অধিকার আর চুক্তির কথা এতদিন কেউ কিছু বলেনি । তৃণমূল, কংগ্রেস, বাম কেউ কিছুই বলেনি । কোনও রাজনৈতিক দল কোচবিহার রাজ্যের চুক্তি কথা বলে না ।’’

সেই কারণে দাবি আদায়ে সকলকে এক হওয়ার কথা বলেছেন তিনি ৷ পাশাপাশি বংশীবদনের দাবি, ‘‘আমাদের ভাগ করে তারা ভোট নিচ্ছে মাত্র । 2021 সালের ভোটে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসে আকার ইঙ্গিতে বলে দিয়েছিল রাজ্য দেব । কিন্তু বিধায়ক-সাংসদ জিতলেও আমাদের কথা ভুলে গেলেন । উত্তরবঙ্গের আজ এইমসও নেই । সেটাই দিল না । উত্তরবঙ্গের এইমস দক্ষিণবঙ্গে নিয়ে গেল কেউ প্রতিবাদ করল না ।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘2012 সালে রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমি করল রাজ্য সরকার । তখন কিন্তু প্রতিবাদ কেউ করেনি । 2017 সালে কামতাপুরি ভাষা অ্যাকাডেমি করল । আমি বারবার বলেছিলাম রাজবংশী ও কামতাপুরি ভাষা একই, নাম আলাদা । সমস্যা মেটাতে কামতাপুর প্রোগ্রেসিভ পার্টির সঙ্গে মিলে 2019 সালে আমরা ভূমিপুত্র ঐক্যমঞ্চ করেছিলাম, ভেদাভেদ না থাকার জন্য । কিন্তু তা পরে বাস্তবায়িত হয়নি ।’’

তাই আলাদা-আলাদা দাবি না তুলে রাজবংশীদের এক হয়ে লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছেন তিনি ৷ এদিকে গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আশুতোষ বর্মা বলেন, ‘‘আগামীতে কী হয়, সবাই দেখবে । আজ আমাদের মানুষরা সবাই বুঝতে পারছেন না । যখন মানুষ বুঝতে পারবেন, তখন আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাবই । তাই আমরা উত্তরবঙ্গ জুড়েই সভাসমিতির কাজ শুরু করেছি । আমরা এবার আন্দোলনে নামব। মানুষকে বোঝাচ্ছি ।’’

জলপাইগুড়ি, 8 এপ্রিল: 2026 সালে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোট ৷ এখনও বাকি প্রায় বছরখানেক ৷ তা সত্ত্বেও পৃথক রাজ্যের দাবি আবার মাথাচাড়া দিল উত্তরবঙ্গে ৷ এবার সরব হয়েছেন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্য়াসোসিয়েশনের (জিসিপিএ) সাধারণ সম্পাদক বংশীবদন বর্মন ৷ তিনি পৃথক কোচবিহার রাজ্যের দাবি তুলেছেন ৷ আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় সরকার এই দাবি পূরণ করলে বিজেপিকে সমর্থনের কথা এখন থেকেই জানিয়ে দিয়েছেন তিনি ৷

কিন্তু যদি কেন্দ্রের কাছ থেকে দাবি আদায় না হয়, সেক্ষেত্রে বিকল্প পথ খোলা রাখার কথাও জানিয়েছেন বংশীবদন ৷ জিসিপিএ-র এই নেতার দাবি, রাজবংশীদের কৃষ্টি-সংস্কৃতি বাঁচাতে যদি রাজ্য সরকার বড় কোনও পদক্ষেপ করে, তাহলে ভোটে তাঁরা তৃণমূলের সঙ্গেই থাকবেন ৷

রাজবংশীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক বংশীবদনের, ফের তুললেন পৃথক রাজ্যের দাবি (ইটিভি ভারত)

জলপাইগুড়িতে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বংশীবদন বলেন, ‘‘আগামী 2026 সালে আমাদের যে রাজ্য দেবে, আমরা তাকেই ভোট দেব । বিজেপি রাজ্য দিলে আমরা বিজেপির গুণগান গাইব । যদি দিদি স্কুলে দেয়, তাহলে দিদিকে জেতাব । 2026 সালের বিধানসভা নির্বাচনে আমাদের জন্য যে ভাববে আমরা তার সঙ্গে থাকব ৷’’

উত্তরবঙ্গ সম্পর্কে যাঁরা ওয়াকিবহাল, তাঁদের বক্তব্য, এখন যেটা কোচবিহার জেলা, শুধু সেটা নিয়েই বংশীবদন রাজ্য গঠনের কথা বলছেন না ৷ তিনি উত্তরবঙ্গের একটা বড় অংশকে নিয়ে এই রাজ্য তৈরির কথা বলছেন ৷ এর মধ্যে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, উত্তর দিনাজপুরও রয়েছে ৷ কারণ, উত্তরবঙ্গের এই অংশেই মূলত রাজবংশী ভাষাভাষীর মানুষ থাকেন ৷ এতদিন তাঁরা বিক্ষিপ্তভাবে ভোট দিয়েছেন ৷ সেই অংশকে এক ছাতার তলায় এনে আন্দোলনে নামতে চাইছেন বংশীবদন ৷

সেই কারণেই এখন থেকেই তাঁর নেতৃত্বে আন্দোলনে নেমে পড়েছে গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন । দলমত নির্বিশেষে আলাদা রাজ্যের দাবিতে এক হওয়ার বার্তা দিয়েছেন তিনি ৷ জলপাইগুড়িতে এই নিয়ে সভা হয়েছে ইতিমধ্যে ৷ আগামিদিনে অন্য জেলাতেও এই ধরনের সভা হবে ৷

রাজবংশীদের উদ্দেশ্যে সভায় অনুরোধ করে বংশীবদন বর্মন বলেন, ‘‘ভূমিপুত্র রাজবংশী বিভ্রান্ত না হয়ে দলমত নির্বিশেষে একমত হয়ে দিশা ঠিক করে ভারতভুক্তি চুক্তি মোতাবেক রাজ্য চাই । রাজবংশী ভাষা চাই৷ এই দাবিতে এগিয়ে এসো আন্দোলন শুরু করতে হবে । ভারতভুক্তি চুক্তি কার্যকরী করাই আমাদের মূলদাবি ।’’

এই গ্রেটার নেতার দাবি, 1949 সালে ভারত সরকারের সঙ্গে কোচবিহারের রাজার একটি চুক্তি হয়েছিল ৷ সেই চুক্তি অনুযায়ী কোচবিহারের ভারতভুক্তি হয় ৷ সেই চুক্তিতে কোচবিহারকে সি ক্যাটাগরির রাজ্য করার বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে ৷ তিনি চান সেই দাবিই পূরণ করুক কেন্দ্রীয় সরকার ৷

বংশীবদন বর্মন বলেন, ‘‘এই সংগঠনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হল আমার অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া । আমরা বৃহত্তর কোচবিহারের ভূমিপুত্র ৷ কোচবিহারকে সি ক্যাটাগরির রাজ্য করার চুক্তি রয়েছে । কোচবিহারের রাজা কোচবিহারের রাজ্যের জন্য চুক্তি করে গিয়েছেন । সেই মোতাবেক কোচবিহার রাজ্য হওয়া উচিত ।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘কিন্তু এতদিন কেউ কিছু করেনি । এর আগে কোনও সংগঠন এই ভারতভুক্তি চুক্তির দাবি তোলেনি । আমরাই তুলে ধরেছি । রাজবংশীরা কথা বললে একটা সময় বলেছে মাওবাদী-উগ্রবাদী । গুলি করে মারা হয়েছে । এই অধিকার আর চুক্তির কথা এতদিন কেউ কিছু বলেনি । তৃণমূল, কংগ্রেস, বাম কেউ কিছুই বলেনি । কোনও রাজনৈতিক দল কোচবিহার রাজ্যের চুক্তি কথা বলে না ।’’

সেই কারণে দাবি আদায়ে সকলকে এক হওয়ার কথা বলেছেন তিনি ৷ পাশাপাশি বংশীবদনের দাবি, ‘‘আমাদের ভাগ করে তারা ভোট নিচ্ছে মাত্র । 2021 সালের ভোটে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসে আকার ইঙ্গিতে বলে দিয়েছিল রাজ্য দেব । কিন্তু বিধায়ক-সাংসদ জিতলেও আমাদের কথা ভুলে গেলেন । উত্তরবঙ্গের আজ এইমসও নেই । সেটাই দিল না । উত্তরবঙ্গের এইমস দক্ষিণবঙ্গে নিয়ে গেল কেউ প্রতিবাদ করল না ।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘2012 সালে রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমি করল রাজ্য সরকার । তখন কিন্তু প্রতিবাদ কেউ করেনি । 2017 সালে কামতাপুরি ভাষা অ্যাকাডেমি করল । আমি বারবার বলেছিলাম রাজবংশী ও কামতাপুরি ভাষা একই, নাম আলাদা । সমস্যা মেটাতে কামতাপুর প্রোগ্রেসিভ পার্টির সঙ্গে মিলে 2019 সালে আমরা ভূমিপুত্র ঐক্যমঞ্চ করেছিলাম, ভেদাভেদ না থাকার জন্য । কিন্তু তা পরে বাস্তবায়িত হয়নি ।’’

তাই আলাদা-আলাদা দাবি না তুলে রাজবংশীদের এক হয়ে লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছেন তিনি ৷ এদিকে গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আশুতোষ বর্মা বলেন, ‘‘আগামীতে কী হয়, সবাই দেখবে । আজ আমাদের মানুষরা সবাই বুঝতে পারছেন না । যখন মানুষ বুঝতে পারবেন, তখন আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাবই । তাই আমরা উত্তরবঙ্গ জুড়েই সভাসমিতির কাজ শুরু করেছি । আমরা এবার আন্দোলনে নামব। মানুষকে বোঝাচ্ছি ।’’

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.