বারাসত, 6 মার্চ: মার্চের প্রথম সপ্তাহেই রাজ্যে তিন-তিনটি সভা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ সন্দেশখালির আবহেই বারাসতে এদিন তৃতীয় সভাটি করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি ৷ এসপ্ল্যানেড, হাওড়া-সহ তিনটি রুটের মেট্রো পরিষেবার উদ্বোধনের পর বারাসতের পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী ৷ আর বারাসতের ভাষণ থেকে স্বভাবসিদ্ধ কড়া ভাষায় বিরোধীদের আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী ৷
বারাসতে প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেন, "ইন্ডিয়া জোটের দুর্নীতিবাজ লোক এখন আমার পরিবার নিয়ে কথা বলছে ৷ এরা বলছে মোদির নিজের কোনও পরিবার নেই ৷ আমাকে রোজ গালি দিচ্ছে ৷ ওরা জানতে চায় মোদির পরিবার কোথায় ? এই পরিবারবাদীরা একবার এখানে নজর দিন ৷ এখানে যে মহিলারা, বোনেরা এসেছেন, তারাই তো আমার পরিবার ৷ বাংলার প্রত্য়েক মা, বোনেরা আমার পরিবার ৷" প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, "আমার জন্য বাংলার মো-বোনেরা দুর্গার মতো উঠে দাঁড়ায় ৷ আজ দেশের সব মানুষ, গরিব, যুবক, কৃষকরা বলছে আমি মোদির পরিবার ৷"
এর সঙ্গেই পরিবাদবাদ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে নিজের জীবনের কিছু ঘটনাও এদিন তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী ৷ নিজের জীবনের কথা বলতে গিয়ে আবেগঘন হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী ৷ তিনি বলেন, "কিছু মানুষের মনে হয়, এক রাজনৈতিক নেতা বলেছেন বলে আমি পরিবার নিয়ে বলছি ৷ আসলে তা নয় ৷ আমি ছোট বয়সেই ঝোলা নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিলাম ৷ দেশের কোনায় কোনায় ঘুরে বেড়াতাম পরিব্রাজক হিসাবে ৷ কোনও কিছুর খোঁজে ঘুরে বেরাতাম ৷ আমার পকেটে এক টাকাও কোনওদিন থাকত না ৷ কোনও পয়সা ছিল না তখন ৷ কিন্তু তখনও কোনও না কোনও পরিবারের মা-বোনেরা আমাকে জিজ্ঞাসা করতেন, কিছু খেয়েছি কি না ৷ পকেটে পয়সা ছিল না, ঘুরে বেড়াতাম কিন্তু একদিও উপোস করে থাকতে হয়নি ৷ আর এজন্যই আমি বলি এরাই আমার পরিবার ৷ 140 কোটি দেশবাসী আমার পরিবার ৷ যখন আমার কোনও পরিচয় ছিল না, তখন দেশের গরিব থেকে গরিব পরিবার, যেখানে গিয়েছি সেখানেই আমার জন্য চিন্তা করেছে ৷ আর তাই আমি গরিবদের জন্য মা-বোনেদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করে চলেছি ৷ আপ্রাণ চেষ্টা করছি ৷ দেশের কোটি কোটি মা-বোনেদের সেই ঋণ এখন শোধ করছি আমি ৷"
এদিন মা দুর্গা, মা কালীর জয়ধ্বনি দিয়ে ভাষণ শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি ৷ নারী শক্তির বন্দনা করতে গিয়ে এরপর বাংলার কৃতি মহিলাদের কথাও উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর গলায় ৷ তিনি বলেন, "এই বাংলা নারীশক্তির বড় প্রেরণা জুগিয়েছে বারবার ৷ মা সারদা, রানী রাসমনি, ভগিনী নিবেদিতা, মাতঙ্গিনী হাজরা, প্রীতিলতার ভূমি এই বাংলা ৷ আর তৃণমূলের রাজত্বে নারীদের উপর অত্য়াচারের মতো ঘোর পাপ হচ্ছে ৷"
বারাসতের সভার আগে এদিন কলকাতায় দেশে প্রথম নদীর নীচে মেট্রো টানেলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী ৷ এরপর ধর্মতলা থেকে হাওড়া স্কুল পড়ুয়াদের সঙ্গে মেট্রো সফরও করেন তিনি ৷ এরপরই হাওড়া থেকে চপারে কলকাতা বিমানবন্দর আসেন প্রধানমন্ত্রী ৷ সেখান থেকেই সড়ক পথে বারাসতের উদ্দেশে রওনা হন তিনি ৷ প্রধানমন্ত্রীর এই কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন সন্দেশখালির মহিলারাও ৷ সকাল থেকেই মিছিল করে, বাসে করে প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থলে হাজির হয়েছেন সন্দেশখালির মানুষরা ৷
আরও পড়ুন: