ETV Bharat / politics

মুর্শিদাবাদের নামে ভিন রাজ্যের অশান্তির ছবি দেখিয়ে প্রচার করা হচ্ছে, অভিযোগ তৃণমূলের - MURSHIDABAD VIOLENCE

মুর্শিদাবাদে অশান্তির আবহে বিজেপির তরফ থেকে সামাজিক মাধ্যমে একাধিক ভুয়ো ছবি প্রচার করা হচ্ছে ৷ এই অভিযোগে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।

Kunal Ghosh
তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : April 13, 2025 at 8:15 PM IST

3 Min Read

কলকাতা, 13 এপ্রিল: ওয়াকফ বিল সংসদে পাস হওয়ার পর থেকেই মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর সামনে এসেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক ও পুলিশি তৎপরতা শুরু হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা। তবে উত্তপ্ত এই পরিস্থিতির মাঝেই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিরোধী দল বিজেপির মধ্যে তীব্র বাকযুদ্ধ শুরু হয়েছে। বিশেষ করে বিজেপির তরফ থেকে সামাজিক মাধ্যমে যে একাধিক ছবি প্রচার করা হচ্ছে, তা নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।

তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ, জাতীয় ও মুখপাত্ররা বিজেপির এই প্রচারে সুপরিকল্পিত রাজনীতি দেখছেন। তারা দাবি করেছেন, বিজেপি পরিকল্পিতভাবে ভুয়ো ছবি ছড়িয়ে বাংলার পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “অভিযোগ আসছে, সীমান্ত থেকে বিএসএফের একাংশের সহযোগিতায় কিছু দুষ্কৃতী বাংলায় ঢুকেছে, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে এই গন্ডগোল ঘটিয়েছে। এলাকার বাসিন্দারাও যাদের চিনতে পারছেন না। এটা স্পষ্ট ষড়যন্ত্র। কেন্দ্রীয় একাধিক সংস্থার সঙ্গে মিলে গোপন নীলনকশা অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। গন্ডগোল ঘটিয়ে পরে তাদের সরিয়েও দেওয়া হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “বিজেপি সোশ্যাল মিডিয়ায় যে সব ছবি ছড়াচ্ছে, তার অধিকাংশই অন্য রাজ্যের। একটি ছবি এনআরসি আন্দোলনের সময় লখনৌয়ের, আরেকটি জলন্ধরের, যেখানে একটি বাড়িতে আগুন লেগেছিল। আরও কিছু ছবি ম্যাঙ্গালোর, কর্নাটক, উত্তরপ্রদেশ ও অসমের। অথচ সেগুলিকেই মুর্শিদাবাদের ঘটনা বলে চালানো হচ্ছে। এইভাবে বাংলাকে বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে।”

একই সুরে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাগরিকা ঘোষ বলেন, “মুর্শিদাবাদের হিংসাত্মক ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তবে রাজ্য সরকার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, যে কেউ আইন হাতে তুলে নিলে কড়া শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে— সে যেকোনও ধর্মেরই হোক। কিন্তু বিজেপি এখন ধর্মীয় বিভাজন ও প্ররোচনার রাজনীতি করছে। তারা সামাজিক মাধ্যমে ভুয়ো ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে বাংলার পরিস্থিতিকে বিকৃতভাবে তুলে ধরছে।”

তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলে বলেন, “আমি নিজে বিজেপির একটি সামাজিক মাধ্যমের বার্তা দেখেছি, যেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সংঘর্ষের ছবি দেখিয়ে দাবি করা হচ্ছে এগুলি বাংলার ছবি। এটা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। বিজেপিকে অনুরোধ করব, যদি রাজনৈতিক লড়াই করতে চান, সত্যি কথা বলুন। মিথ্যা ছবি দেখিয়ে বাংলায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করবেন না।”

তৃণমূলের তরফ থেকে রাজ্যের মানুষকে সতর্ক থাকার আবেদন জানানো হয়েছে। কুণাল ঘোষ বলেন, “এই ভয়ঙ্কর গুজবে বিভ্রান্ত হলে চলবে না। বিজেপি বাংলায় রুটি-কাপড়-মকানের রাজনীতি করতে ব্যর্থ হয়েছে, তাই তারা সাম্প্রদায়িক বিভাজনের আবহ তৈরি করছে। সকল ধর্মের মানুষকে অনুরোধ করছি— হিংসা ও প্ররোচনার রাজনীতি থেকে দূরে থাকুন।”

প্রসঙ্গত গতকাল তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য স্তরের শীর্ষস্থানীয় নেতারাও বারংবার শান্তি বজায় রাখার জন্য আবেদন করেছেন। প্রশাসনের তরফ থেকে শান্তি স্থাপনের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এই মুহূর্তে এই ভ্রান্ত প্রচার যে একটা উস্কানির কাজ করছে এমনটাই দাবি করছে তৃণমূল। শুধু তাই নয় তাদের দাবি ভোটের রাজনীতিতে না পেরে মূলত মেরুকরণকে আরও জোরদার করতেই পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটানো হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় বাহিনী নামলেও আতঙ্ক কাটেনি, 'পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে', দাবি ডিজি রাজীবের

কলকাতা, 13 এপ্রিল: ওয়াকফ বিল সংসদে পাস হওয়ার পর থেকেই মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর সামনে এসেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক ও পুলিশি তৎপরতা শুরু হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা। তবে উত্তপ্ত এই পরিস্থিতির মাঝেই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিরোধী দল বিজেপির মধ্যে তীব্র বাকযুদ্ধ শুরু হয়েছে। বিশেষ করে বিজেপির তরফ থেকে সামাজিক মাধ্যমে যে একাধিক ছবি প্রচার করা হচ্ছে, তা নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।

তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ, জাতীয় ও মুখপাত্ররা বিজেপির এই প্রচারে সুপরিকল্পিত রাজনীতি দেখছেন। তারা দাবি করেছেন, বিজেপি পরিকল্পিতভাবে ভুয়ো ছবি ছড়িয়ে বাংলার পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “অভিযোগ আসছে, সীমান্ত থেকে বিএসএফের একাংশের সহযোগিতায় কিছু দুষ্কৃতী বাংলায় ঢুকেছে, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে এই গন্ডগোল ঘটিয়েছে। এলাকার বাসিন্দারাও যাদের চিনতে পারছেন না। এটা স্পষ্ট ষড়যন্ত্র। কেন্দ্রীয় একাধিক সংস্থার সঙ্গে মিলে গোপন নীলনকশা অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। গন্ডগোল ঘটিয়ে পরে তাদের সরিয়েও দেওয়া হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “বিজেপি সোশ্যাল মিডিয়ায় যে সব ছবি ছড়াচ্ছে, তার অধিকাংশই অন্য রাজ্যের। একটি ছবি এনআরসি আন্দোলনের সময় লখনৌয়ের, আরেকটি জলন্ধরের, যেখানে একটি বাড়িতে আগুন লেগেছিল। আরও কিছু ছবি ম্যাঙ্গালোর, কর্নাটক, উত্তরপ্রদেশ ও অসমের। অথচ সেগুলিকেই মুর্শিদাবাদের ঘটনা বলে চালানো হচ্ছে। এইভাবে বাংলাকে বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে।”

একই সুরে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাগরিকা ঘোষ বলেন, “মুর্শিদাবাদের হিংসাত্মক ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তবে রাজ্য সরকার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, যে কেউ আইন হাতে তুলে নিলে কড়া শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে— সে যেকোনও ধর্মেরই হোক। কিন্তু বিজেপি এখন ধর্মীয় বিভাজন ও প্ররোচনার রাজনীতি করছে। তারা সামাজিক মাধ্যমে ভুয়ো ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে বাংলার পরিস্থিতিকে বিকৃতভাবে তুলে ধরছে।”

তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলে বলেন, “আমি নিজে বিজেপির একটি সামাজিক মাধ্যমের বার্তা দেখেছি, যেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সংঘর্ষের ছবি দেখিয়ে দাবি করা হচ্ছে এগুলি বাংলার ছবি। এটা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। বিজেপিকে অনুরোধ করব, যদি রাজনৈতিক লড়াই করতে চান, সত্যি কথা বলুন। মিথ্যা ছবি দেখিয়ে বাংলায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করবেন না।”

তৃণমূলের তরফ থেকে রাজ্যের মানুষকে সতর্ক থাকার আবেদন জানানো হয়েছে। কুণাল ঘোষ বলেন, “এই ভয়ঙ্কর গুজবে বিভ্রান্ত হলে চলবে না। বিজেপি বাংলায় রুটি-কাপড়-মকানের রাজনীতি করতে ব্যর্থ হয়েছে, তাই তারা সাম্প্রদায়িক বিভাজনের আবহ তৈরি করছে। সকল ধর্মের মানুষকে অনুরোধ করছি— হিংসা ও প্ররোচনার রাজনীতি থেকে দূরে থাকুন।”

প্রসঙ্গত গতকাল তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য স্তরের শীর্ষস্থানীয় নেতারাও বারংবার শান্তি বজায় রাখার জন্য আবেদন করেছেন। প্রশাসনের তরফ থেকে শান্তি স্থাপনের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এই মুহূর্তে এই ভ্রান্ত প্রচার যে একটা উস্কানির কাজ করছে এমনটাই দাবি করছে তৃণমূল। শুধু তাই নয় তাদের দাবি ভোটের রাজনীতিতে না পেরে মূলত মেরুকরণকে আরও জোরদার করতেই পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটানো হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় বাহিনী নামলেও আতঙ্ক কাটেনি, 'পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে', দাবি ডিজি রাজীবের

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.